আজিজ ও বেনজীরের দুর্নীতির দায় সরকার এড়াতে পারে না: শামসুজ্জামান দুদু

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির দায় এই সরকার এড়াতে পারে না।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল শুক্রবার গণতন্ত্র ফোরামের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে এক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমি জানি আপনি (প্রধানমন্ত্রী) অস্থিরতার মধ্যে আছেন। একসময়ের আপনার সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ বর্তমানে সপরিবারে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েছেন। ডাইরেক্টলি না হলেও ইনডাইরেক্টলি আপনার সরকার এটির অংশীদার। তার মাধ্যমে ২০১৮ সালে আপনার সরকার নদী পার হয়েছিলেন। আপনার একসময়ের পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের সম্পদ এবং ব্যাংক হিসাব জব্দ করার জন্য বলেছে কোর্ট। সে শুধু আপনার সমর্থকই ছিলেন না। আপনি তার ঘাড়ে চেপে পুলিশের সমর্থনে সরকার গঠন করেছেন।  

দুদু বলেন, সরকার বড় বিপদে আছে। বর্তমান এই প্রধানমন্ত্রী গতকাল সাদাচামড়া প্রসঙ্গে যে কথা বলেছেন; সেটি অত্যন্ত মারাত্মক। আজকে প্রধানমন্ত্রীকে জাতির সামনে এই কথাকে স্পষ্ট করে বিবৃতি দেয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি। সাদাচামড়া বলতে আপনি (শেখ হাসিনা) কাদের বুঝিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আজকে আপনি বাংলাদেশের রাস্তা-ঘাট-বন্দর পার্শ্ববর্তী দেশকে দিয়ে দিয়েছেন। আপনি নিজেও স্বীকার করেছেন ভারতকে আপনি এমন কিছু দিয়েছেন যেটি ভারত কখনোই ভুলতে পারবে না। সাদাচামড়া বলতে আপনি কাদের বুঝিয়েছেন? কে আপনার কাছে দাবি করেছে যে; সাদাচামড়ারা নতুন রাষ্ট্র বানাতে চাচ্ছে এই কথাটি আপনাকে পরিষ্কার করতে হবে। কারণ এই কথার মধ্যে আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন আছে। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না; সেটার প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আনার স্বর্ণ চোরাচালানসহ অনেক অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল। এসব দুর্নীতিগ্রস্ত সেনাপ্রধান জেনারেল আজীজ ও পুলিশের প্রধান বেনজীর আহমেদ এবং দুশ্চরিত্র-লম্পটরা যদি জাতীয় সংসদের সদস্য হয় আর সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী যদি আপনি হন, আপনার দল যদি হয় তাহলে আর কী বাকি থাকতে পারে।

কৃষকদলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, চারদিকের যে পরিস্থিতি এখন সরকারের অস্তিত্ব নিয়ে টান পড়েছে। সরকার থাকবে কি না, কবে যাবে, কত তারিখে পদত্যাগ করবে এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এরপরেও আমি শেখ হাসিনাকে বলব, আপনি পদত্যাগ করে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সুস্থ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ রক্ষা করার জন্য জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে দিয়ে দেন। তাহলে হয়তো রেহাই পেলে পেতেও পারেন। অন্যথায় যদি আন্দোলনের মাধ্যমে আপনার পতন হয় তাহলে সে পরিস্থিতি আপনি সামাল দিতে পারবেন না।

অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকা সকলের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, দেশকে রক্ষা করার জন্য হলেও আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে আসতে হবে। রাস্তায় নেমে আসা ছাড়া যে সমস্যার মধ্যে বাংলাদেশ পড়েছে তা থেকে বেরিয়ে আসার দ্বিতীয় কোনো পথ নেই। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান সালেহ্ প্রিন্স, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাছের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, ওলামা দলের সদস্য সচিব মাওলানা আবুল হোসেন, তাঁতি দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০