এ মাসেই মিয়ানমার যেতে পারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

শেয়ার বিজ ডেস্ক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল চলতি মাসেই মিয়ানমার যেতে পারেন বলে জানা গেছে। জাতিগত সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর লোকদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা এগিয়ে নিতে তিনি এ সফর করবেন। গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সফরের বিষয়টি আগেই আলোচনায় ছিল। কিন্তু এর মধ্যে মিয়ানমারের ঘটনায় পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তবে এ মাসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, এ বিষয় নিয়ে (মিয়ানমার সফরে) আলোচনা করা হবে। এছাড়া আগে ইয়াবা চোরাচালানসহ অন্যান্য যেসব বিষয় নির্ধারিত ছিল, তা নিয়েও আলোচনা করা হবে।’

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী নতুন করে দমন অভিযান শুরু করার পর ২৫ আগস্ট থেকে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ ওই অভিযানকে চিহ্নিত করেছে রোহিঙ্গাদের ‘জাতিগতভাবে নির্মূলের’ চেষ্টা হিসেবে।

রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে আপত্তি জানিয়ে আসা মিয়ানমার সরকারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত ১৯ সেপ্টেম্বর দেশটির পার্লামেন্টে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি বলেন, নব্বইয়ের দশকে করা প্রত্যাবাসন চুক্তির আওতায় ‘যাচাইয়ের মাধ্যমে’ বাংলাদেশে থাকা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে তার দেশ প্রস্তুত আছে। সে সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব যাচাইয়ের কাজটি জাতিসংঘের তত্তাবধানে করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হবে। এরপর সু চির দফতরের মন্ত্রী কিয়া তিন্ত সোয়ে ঢাকায় এসে গত ২ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের সিদ্ধান্ত হয় সেখানে।

ওই বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার জন্য বৈঠকে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তির প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলকে ওই চুক্তির খসড়াও হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে আরও আলোচনার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিগগিরই মিয়ানমার সফরে যাবেন বলে সেদিন জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশ সরকার বলে আসছে, মানবিক কারণে সীমান্ত খুলে দিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সহায়তা দেওয়া হলেও তাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতেই হবে। তার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ তাদের জরুরি সহায়তা দিয়ে যাবে। ইতোমধ্যে কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আকার বাড়িয়ে সেখানে সব রোহিঙ্গাকে রাখার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তাদের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে এবং ত্রাণ ব্যবস্থাপনার জন্য চলছে বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের কাজ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, শনিবার পর্যন্ত ৯১ হাজার ৪২৩ রোহিঙ্গার নিবন্ধন করা হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৯ হাজার জনের নিবন্ধন করা হচ্ছে।