আলু-পেঁয়াজ-রসুনের দাম বাড়তি কমেছে ব্রয়লার মুরগির 

নিজস্ব প্রতিবেদক : কোরবানির ঈদের আর দুই সপ্তাহ বাকি। ঈদকে কেন্দ্র করে এখন বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম ওঠানামা করছে। রোজার ঈদের আগে থেকেই সব ধরনের মুরগির মাংসের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এই সময়ের মধ্যে হাতেগোনা দুই-একবার ছাড়া ব্রয়লার মুরগির দাম নামেনি ২০০ টাকার নিচে। তবে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম দুইশ’র নিচে। একই সঙ্গে কমেছে কক মুরগি ও লেয়ার মুরগির দামও। বিক্রেতারা বলছেন, কোরবানি ঈদ আসছে বলেই এখন মুরগির দাম কমেছে।

অন্যদিকে আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে মুরগির মাংসের দাম কমলেও বেড়ে চলেছে আলু, পেঁয়াজ, রসুনের দাম। কোরবানির ঈদে এসব পণ্যের চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়ছে। আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন বিক্রেতারা।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায় এই চিত্র।

কয়েকটি সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে, আবার কমেছেও কয়েকটির। তবে বেশির ভাগ সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। আজকের বাজারে টমেটো ১০০, দেশি গাজর ৯০, চায়না গাজর ১৪০, লম্বা বেগুন ৭০, সাদা গোল বেগুন ৭০, কালো গোল বেগুন ৭০, শসা ৬০-৮০, উচ্ছে ৬০, করলা ৬০, কাঁকরোল ৮০, পেঁপে ৫০-৬০, ঢ্যাঁড়স ৬০, পটোল ৫০-৮০, চিচিঙ্গা ৬০, ধুন্দল ৫০, ঝিঙা ৬, বরবটি ৬০, কচুর লতি ৮০, কচুরমুখী ১০০-১২০, মিষ্টি কুমড়া ৩০, শজনে ১২০, কাঁচা মরিচ ২০০, ধনেপাতা ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৫০-৬০, চাল কুমড়া ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা।

এদিকে সবজির অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ, রসুনের দাম। গতকাল বাজারে মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৮০, দেশি পেঁয়াজ ৮৫, লাল আলু ৫৫, সাদা আলু ৬০, বগুড়ার আলু ৭০, নতুন দেশি রসুন ২২০, চায়না রসুন ২২০-২৩০, চায়না আদা ২৬০, ভারতীয় আদা ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। সপ্তাহের ব্যবধানেই ক্রস জাতের পেঁয়াজের দাম ১০, দেশি পেঁয়াজের দাম ৫, সাদা আলুর দাম ৫, দেশি রসুনের দাম ২০ এবং চায়না রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে।

এ প্রসঙ্গে আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতা লিটন বলেন, এখন আর দাম কমার সুযোগ  নেই। শুধু দাম বাড়বে। ঈদের আগে পর্যন্ত এমন দামই থাকবে।

আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. লিটন বলেন, এখন আর দাম কমার কোনো সুযোগ নেই। এখন শুধু দাম বাড়বে।

আরেক বিক্রেতা সালাম বলেন, কোরবানির ঈদের আগে সাধারণত আদা রসুন পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়, এবারও বেড়েছে। কয়েক দিন পরে হয়তো আরও বেড়ে যাবে।

বাজার করতে আসা তোফায়েল বলেন, রসুনের দাম মনে হচ্ছে প্রতি সপ্তাহে ২০ টাকা করে বাড়ছে। আর হুট করেই আলু-পেঁয়াজের দামও বেড়ে গেল। কোনো বিশেষ উৎসব সামনে থাকলে ব্যবসায়ীরা

পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এটা ঠিক না।

বাজারে ইলিশ ১৪০০-১৮০০, রুই ৩৪০-৮০০, কাতল ৩৬০-৬০০, কালিবাউশ ৪৫০-৫০০, চিংড়ি ৯০০-১৩০০, কাঁচকি ৫০০, কৈ ২৬০-৩০০, পাবদা ৪৫০-৫০০, শিং ৪০০-৬৫০, টেংরা ৬৫০-৮০০, বেলে ৬০০-১২০০, বোয়াল ৭০০-১০০০ ও রূপচাঁদা মাছ ১২০০-১৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে।  কমেছে কক ও লেয়ার মুরগির দাম। বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৮৫-১৯৫, কক ৩১৫-৩৩০, লেয়ার ৩৩৮-৩৪৫, দেশি মুরগি ৬৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে কেজিতে ৫ থেকে ১৫ টাকা। লেয়ার মুরগির দাম কমেছে কেজিতে ৫ থেকে ১২ টাকা এবং কক মুরগির ১০ থেকে ১৫ টাকা।

আতিয়া চিকেন হাউসের বিক্রেতা নাজমুল বলেন, এখন সব ধরনের মুরগির দামই কমেছে। এখন এরকম দামের মধ্যেই থাকবে। তবে ঈদের আগে কিছুটা বাড়তে পারে।

বাজারে মুরগির দাম কমলেও বেড়েছে গরুর মাংস ও ডিমের দাম। গরুর মাংস আজ ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ টাকা কেজি দরে। মুরগির লাল ডিম ১৫০ টাকা এবং সাদা ডিম ১৪০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে। লাল ডিমের দাম ডজনে বেড়েছে ৫ টাকা করে।

ডিমের দোকানি আবদুল জব্বার বলেন, প্রতিদিনই পাইকাররা ১০ টাকা করে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে তো সমস্যা।

আনোয়ার ডিম আড়তের বিক্রেতা বলেন, পাইকাররা বলেন ডিম নাকি কম, তাই দাম বাড়ছে। কয়েক দিন ডিম চাহিদা থেকে কম পেয়েছিলাম, এখন তো ঠিকই পাচ্ছি। তাহলে ডিমের ঘাটতি থাকল কই?

এদিকে সবকিছুর দাম বাড়লেও মুদিপণ্য রয়েছে অপরিবর্তিত। গতকাল প্যাকেট পোলাওর চাল ১৫৫, খোলা পোলাওর চাল মানভেদে ১১০-১৪০, ছোট মসুর ডাল ১৪০, মোটা মসুর ডাল ১১০, বড় মুগ ডাল ১৬০, ছোট মুগ ডাল ১৮০, খেসারি ডাল ১২০, বুটের ডাল ১১৫, ডাবলি ৮০, ছোলা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭, খোলা সয়াবিন ১৪৭, কৌটাজাত ঘি ১৩৫০, খোলা ঘি ১২৫০, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫, খোলা চিনি ১৩০, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০