এ বাজেট দুর্নীতিকে আরও উৎসাহিত করবে: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট দুর্নীতিকে আরও উৎসাহিত করবে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, এই বাজেট কালোটাকাকে সাদা করার বাজেট। কীভাবে দুর্নীতি করা যাবে তার বাজেট। এখানে যাতায়াত খাতে বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে, কারণ এখানে সহজে দুর্নীতি করা যায়।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গতকাল শুক্রবার আলোচনা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। ‘শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার গৃহীত কর্মসূচি ও নীতি: বাংলাদেশের কৃষিবিপ্লব ও পল্লী উন্নয়নের মূলভিত্তি’ শীর্ষক এই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী দল।

সরকার মিথ্যার ওপর টিকে আছে বলে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যত পরিসংখ্যান দেখানো হয় সব বানানো ও মিথ্যা। এই বাজেট বেনজীর (বেনজীর আহমেদ) বাজেট। এখন তো চারদিকে বেনজীর আর আজিজ।

বাজেটে কর্মসংস্থান কোথায়, প্রশ্ন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যারা ঢাকায় ছোটখাটো ব্যবসা বা কাজ করত, তারা গ্রামে ফিরে যাচ্ছে। কিন্তু গ্রামেও কাজ নেই।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ন্যূনতম গণতন্ত্র থাকলেও মানুষ একটা পথ পায়। সেখানকার শাসকরা ভেবেছিল ৪০০ আসন পেয়ে যাবে, তাদের যে লক্ষ্য সংবিধান সংশোধন করে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু ভারতের মানুষ তা রুখে দিয়েছে।

ভারতে নির্বাচন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান থাকাতেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের কোনো প্রতিষ্ঠানই রাখেনি। নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে, বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা রাখেনি, আমলাতন্ত্রকে পুরোপুরি কুক্ষিগত করেছে। এই ধ্বংসাবশেষ থেকে আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে জাগিয়ে তুলতে হবে।

সেমিনারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, সংসদ, আদালত, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান কিছু লোকের কব্জায় চলে গেছে। তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুদকের কমিশনার বদলে দিতে পারে। এই রাজনৈতিক অবস্থার বদল না হলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করা সম্ভব হবে না, দুর্নীতিও কমবে না।

সরকারের দাবি করা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দাবিকে মিথ্যাচার বলে উল্লেখ করে আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, চাল, গম, তেল, চিনি ও ডালের মতো সামগ্রী আমদানি করতে হয়। পরিসংখ্যানের খেলা দেখে পরিস্থিতি বোঝা যাবে না। যখন দেশের রাজনীতি খারাপ হবে, তখন অর্থনীতিও খারাপ হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সোনালী দলের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম হাফিজ। এতে জিয়াউর রহমানের কৃষি-সম্পর্কিত বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলা হয়, ১৯৭৩-৭৪ সালে বাংলাদেশে সার ব্যবহার হতো তিন লাখ ৭৯ হাজার টন। আর ১৯৮০-৮১ সালে সারের ব্যবহার হয় আট লাখ ৮৮ হাজার টন। জিয়াউর রহমানের উদ্যোগের কারণে গ্রাম পর্যন্ত সার পৌঁছে গিয়েছিল।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, আওয়ামী লীগ এখন বলে, আজিজ-বেনজীর নাকি তাদের লোক নয়। যখনই চোর ধরা পড়ে, তারা বলে এই চোর আমাদের নয়। এবারের বাজেট নিয়ে একজন অর্থনীতিবিদ বলেছেন, এটি বে-নজির বাজেট। আসলেই এটি লুটপাটের বাজেট।

সোনালী দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের সভাপতি অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০