নানা আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘তরুণ প্রজšে§র দক্ষতা উন্নয়নে উচ্চশিক্ষা’। তবে সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কোনো অনুষ্ঠানেই অংশ করেননি শিক্ষক সমিতির নেতারা। তবে শিক্ষকদের অনেকেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় টিএসসির পায়রা চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়ানো, বেলুন উড্ডয়ন, থিম সং পরিবেশন এবং কেক কাটার মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়।

এর আগে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে স্মৃতি চিরন্তন চত্বর থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন।

এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘তরুণ প্রজšে§র দক্ষতা বৃদ্ধিতে উচ্চশিক্ষা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী বলেন, উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য শুধু ভালো চাকরি পাওয়া নয়। বরং জ্ঞান আহরণের মাধ্যমে পরিপূর্ণ মানবিক বিকাশ নিশ্চিতকরণ এবং যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য সক্ষমতা অর্জন করাই হলো উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য। বিশ্ব ব্যবস্থাপনা বুঝতে শিক্ষার্থীদের বিশেষ জ্ঞান অর্জনের তাগিদ দিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার বলেন, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, যাই হোক না কেন, অন্যকে বুঝা, পরমতসহিষ্ণুতা, পরমতের প্রতি শ্রদ্ধা, সকল কিছুই রপ্ত করতে হবে এবং এক্ষেত্রে বিশ্লেষণ বা বিশ্লেষণাত্মক ক্ষমতা এবং অন্তদর্শন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয় অনেক কিছু করেছে। ব্রিটিশ রাষ্ট্র, পাকিস্তান রাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রÑএই তিন শাসন আমলের নানা অন্তরাল অতিক্রম করে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এগোতে হয়েছে। বিপর্যয়গুলো খুব কঠিন বিপর্যয় ছিল। ১৯৭১ সালে তারা এ বিশ্ববিদ্যালয়কে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু এ বিশ্ববিদ্যালয় তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিল।

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা যেন না থাকে। শিক্ষার্থী শিক্ষার মধ্যে যদি বিরক্তিবোধ করে, তাহলে সে শিক্ষা কখনও কার্যকর শিক্ষা হতে পারে না। শিক্ষার্থীরা শিক্ষায় আনন্দ পাবে যখন সেটা প্রায়োগিক জীবনে ব্যবহার করতে পারবে। বাস্তবজীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত শিক্ষা হলে তা হবে কল্যাণমুখী।

‘আগে আমরা গেøাবালাইজেশন বলতাম, এখন বলছি ইন্টারন্যাশনালাইজেশনের যুগ। ইন্টারন্যাশ নালাইজেশনের কারণে একজন শিক্ষার্থী শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, সে পৃথিবীর যে কোনো স্থানে চাকরির সুযোগ পাবে। সেভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম তৈরি হবে’Ñবলেন উপাচার্য।

এছড়া অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. শরীফ উদ্দিন আহমেদ সম্পাদিত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ শীর্ষক গ্রন্থের ২য় খণ্ডের মোড়ক উšে§াচন করা হয়।

আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০