নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহজুড়ে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি হলেও সূচকের মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। একইসঙ্গে দৈনিক গড় লেনদেন ৪৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে গত সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ১ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে, আর গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহে মোট ৪১২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২২০টির, কমেছে ১৫৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২২ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি ১৬টির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৮৮৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছিল ৬১৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৪৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এদিকে গত সপ্তাহে দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে ওঠে এসেছে প্রকৌশল খাতের কোম্পানি দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ বা ১ টাকা ৬০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৩৭ টাকা ৪০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে ৩২ লাখ ৫৬ হাজার ৭৫৪ শেয়ার ৩ হাজার ৭৮৬ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ১২ কোটি ১২ লাখ টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৩৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৮ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়। আর গত এক বছরের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনিম্ন ২১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৪৯ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।
প্রকৌশল খাতের ‘বি’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি ২০১১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। তাদের অনুমোদিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৬১ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মোট শেয়ারসংখ্যা ৬ কোটি ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ১৫০। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৩৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ ও বাকি ৫৩ দশমিক ০১ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
সাপ্তাহিক দরবৃদ্ধির তালিকায় এর পরের অবস্থানে থাকা যথাক্রমে গ্লোবাল হেভী কেমিক্যালস লিমিটেডের ২৯ দশমিক ১৯ শতাংশ, স্যালভো কেমিক্যালস লিমিটেডের ২০ দশমিক ২৩ শতাংশ, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ১৭ দশমিক ১৭ দশমিক ২৯ শতাংশ, আফতাব অটোমোবাইলস লিমিটেডের ১৫ দশমিক ২০ শতাংশ, এনআরবি ব্যাংক পিএলসির ১৫ শতাংশ, বীচ হ্যাচারি লিমিটেডের ১৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ১৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ, কাট্টলী টেক্সটাইল লিমিটেডের ১৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং এইচআর টেক্সচটাইল লিমিটেডের ১৩ দশমিক ০৮ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।
অন্যদিকে গত সপ্তাহে লেনদেনের তালিকায় শীর্ষে ছিল সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড, যেটির শেয়ার গত সপ্তাহে লেনদেনের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অবদান চার দশমিক শূন্য দুই শতাংশ। সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ বা ২ টাকা ৪০ পয়সা কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৮৬ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ২৬৫টি শেয়ার ৬ হাজার ২৯৭ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ২৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৮৬ টাকা ৬০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৮৯ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়।
গত এক বছরে শেয়ারদর ৮১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ২৩৯ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে। ২০১৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি। ২০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১২০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ ৮২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১২ কোটি সাত লাখ ৫০ হাজার শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ৪৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ২২ দশমিক ০৭ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
