রক্ষণাবেক্ষণ ও গ্যাস সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় ঘাটতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্যাস সংকটে একদিকে গ্যাসভিত্তিক বেশকিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যদিকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বড় কয়লাভিত্তিক তিনটি কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ বা হ্রাস পেয়েছে। এতে হঠাৎ বিদ্যুতের বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। ফলে দেশব্যাপী হঠাৎ করে দুদিন ধরে লোডশেডিং বেড়েছে। বিশেষত গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং চরম আকার ধারণ করেছে।
গতকাল শেয়ার বিজের অফিসে অনেকেই কল করে জানান, গ্রামাঞ্চলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪-৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। কোথাও দিনে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। এতে তীব্র গরমে লোডশেডিংয়ে জনগণের ভোগান্তির সীমা নেই।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্যমতে, কয়লাভিত্তিক বড় তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি করে ইউনিট বা বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে দেশে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ আসে ভারতের ঝাড়খণ্ডের আদানি পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। ওই কেন্দ্রটির সক্ষমতা এক হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট। তবে রক্ষণাবেক্ষণের একটি ইউনিট গতকাল বন্ধ হয়ে যায়। এতে গড়ে সারাদিন ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।

দেশের তৃতীয় বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র এসএস পাওয়ার। চট্টগ্রামের এ কেন্দ্রটির সক্ষমতা এক হাজার ২২৪ মেগাওয়াট। তবে এ কেন্দ্রটিরও একটি ইউনিট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রয়েছে। এতে গড়ে ৬১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। অন্যদিকে মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রটির একটি ইউনিট থেকে ৫৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। তবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এটি গত কয়েকদিন ধরে পুরোপুরি বন্ধ।
এদিকে দেশের গ্যাসভিত্তিক সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র ইউনিট মেঘনাঘাট। গ্যাস সংকটে ৫৮৪ মেগাওয়াট সক্ষমতার কেন্দ্রটি বর্তমানে পুরোপুরি বন্ধ। একইভাবে গ্যাসভিত্তিক দ্বিতীয় বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র সামিট মেঘনাঘাট-২ বন্ধ রয়েছে। কেন্দ্রটির সক্ষমতা ৫৮৩ মেগাওয়াট। যদিও গ্যাস সংকটে শুধু এ দুটি নয় বরং ২৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ রয়েছে। আর জ্বালানি তেল সংকটে ২১টি ফার্নেস অয়েল ও ডিজেলচালিত কেন্দ্র পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ রয়েছে।

সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় ঘাটতি তৈরি হওয়ায় গতকাল রাত ১২টায় এক হাজার ৬৬৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। রাত ১টায় লোডশেডিং হয় এক হাজার ৫১১ মেগাওয়াট, ২টায় এক হাজার ১৯৯ মেগাওয়াট ও ৩টায় এক হাজার ৩২ মেগাওয়াট। পরে তা কিছুটা কমলেও বেলা ২টায় আবার হাজার মেগাওয়াট ছাড়ায়।
গতকাল বেলা ৩টায় লোডশেডিং হয় এক হাজার ৩৮২ মেগাওয়াট, বিকাল ৪টায় এক হাজার ৪২৫ মেগাওয়াট, ৫টায় এক হাজার ৩৯০ মেগাওয়াট ও সন্ধ্যা ৬টায় এক হাজার ৩৮৫ মেগাওয়াট।

হঠাৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস ও লোডশেডিং নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ বা পিডিবি আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য এখনও জানায়নি। তবে পিডিবির একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, এলএনজি টার্মিনাল একটি বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎ খাতে গ্যাস সরবরাহ কমে গেছে। এতে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন কমে গেছে। আবার তিনটি কয়লাভিত্তিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ হওয়ায় সংকট বেড়ে গেছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০