নিজস্ব প্রতিবেদক : মেগা প্রকল্পের সমালোচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ঠিকাদারদের স্বার্থে রাজনৈতিক বিবেচনায় গৃহীত মেগা প্রকল্পগুলোর যৌক্তিকতা পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। তিনি বলেন, এসব প্রকল্প প্রয়োজনীয়তার নিরিখে গ্রহণ করা হয়নি; নেয়া হয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায়। তিনি বলেন, ‘এই মেগা প্রকল্প নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এগুলো নিয়ে এগোব নাকি এগোব না।’
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘মেগা প্রকল্প বা বড় প্রকল্পের বিষয়ে আমাদের আলাদা কোনো নীতি সিদ্ধান্ত নেই। এগুলোর অগ্রগতি নির্ভর করবেÑএটি কোন পর্যায়ে রয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে। প্রকল্পের বিষয়ে সময় একটা বড় জিনিস। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে এগুলো নিয়ে এগোব নাকি এগোব না।’
যেসব প্রকল্পে এরই মধ্যে কিছু অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু অর্থ খরচ হয়ে গেলেই যে প্রকল্পের বাকি কাজ শেষ করতে হবে বিষয়টা এমন নয়। পুরো প্রকল্প থেকে কত সুবিধা পাব এটাই বিষয়। প্রকল্পের লাভ-ক্ষতি দেখতে হবে। কিছু খরচ হয়ে গেছে বলেই মানসিক চাপ থাকবে; প্রকল্প শেষ করতে হবেÑবিষয়টা এমন নয়। এটা অর্থনীতির যুক্তিতে চলে না।’
তিনটি মেট্রোরেলসহ শুধু মেগা ১০ প্রকল্পের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ৫১ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের এডিপিতে গুরুত্ব দিয়ে বরাদ্দ দেয়া মেগা প্রকল্পের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১০ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। এটিতে রাশিয়ার ঋণ সহায়তা রয়েছে। ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত এ প্রকল্পের আওতায় খরচ হয়েছে ৬৪ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। এছাড়া মেট্রোরেল লাইন-৬ প্রকল্পে বরাদ্দ এক হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ২০ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা। মেট্রোরেল লাইন-১ প্রকল্পে বরাদ্দ আছে এক হাজার ৯৪২ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে এক হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। মেট্রোরেল লাইন-৫, নর্দান রুট প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ৯৬৮ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর জন্য বরাদ্দ দুই হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এসব প্রকল্পে জাপানসহ বিভিন্ন সংস্থার ঋণ রয়েছে।
পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পে বরাদ্দ তিন হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা, এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৮ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। এটি বাস্তবায়নে ঋণ দিচ্ছে চীন। দোহাজারী-রামু-গুনদুম রেললাইন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ এক হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে সাত হাজার ১৭২ কোটি টাকা। এটি বাস্তবায়নে চীন এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ রয়েছে। আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হচ্ছে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন, পায়রা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন, সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ এবং সাসেক সংযোগ সড়ক প্রকল্প: এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প। এডিপির বরাদ্দ সব মেগা প্রকল্পে কমানো হবে বলে জানায় কমিশন।
রাজনৈতিক বিবেচনার মেগা প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন হবে: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
