ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও সেতু মেরামতে ব্যবস্থা নিন

উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও অতিভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ ১২ জেলার ৪৬২ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ২০ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এ বন্যায় কুমিল্লা, সিলেট ও চট্টগ্রাম জোনের সড়ক নেটওয়ার্কের প্রাথমিক ক্ষতির এ চিত্র উঠে এসেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে।

অধিদপ্তরের রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শনিবার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যেটা পাওয়া গেছে, সেগুলো প্রাথমিক তথ্য। পানি সরে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পুরো চিত্র পাওয়া যাবে। এটা খুবই প্রাথমিক প্রতিবেদন। বন্যার কারণে এখনও অনেক জায়গায় যাওয়া যাচ্ছে না। পানি সরে গেলে আমরা লোক পাঠাব, তখন প্রকৃত অবস্থাটা বোঝা যাবে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা তথ্যগুলো আমরা কমপাইল করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছি। আর বন্যার পানি সরে গেলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত শুরু করব।’ সাম্প্রতিক বন্যায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিভিন্ন সড়ক বিভাগের ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, সেতু ও কালভার্টের তথ্য সড়ক ভবনে স্থাপিত বন্যা তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে। আর তা প্রতিবেদন আকারে পাঠানো হয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে।

প্রতি বছরই দেশের কোনো না কোনো এলাকায় বন্যা হওয়ায় সেখানকার সড়ক-মহাসড়কে সৃষ্টি হয় বড় বড় গর্ত, ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেতু। পরবর্তী সময় বন্যার পানি নেমে গেলে সড়ক-সেতু ব্যবহারের উপযোগী থাকে না। ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয় যানবাহনকে। সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ মানুষের জীবনে নতুন ভোগান্তির শিকার হতে হয়। কিন্তু এ ভোগান্তি কারও দায়িত্বহীনতায় দীর্ঘায়িত হবে, এটি দুঃখজনক। বন্যার পরই গণমাধ্যমে অবকাঠামো এবং সড়ক মেরামত ও সংস্কার করতে হবে, এ-সংক্রান্ত নানা প্রতিবেদন ও সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়। কিন্তু তাতে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন তেমন গা করে না, বিভিন্ন সময় এমন দৃষ্টান্ত দেখা গেছে।
বন্যা-জলোচ্ছ্বাসের মতো পানিসৃষ্ট দুর্যোগ-দুর্বিপাক যাতে সম্পদ বিনষ্টের পাশাপাশি মানুষের চলার গতি শ্লথ করতে না পারে, সে লক্ষ্যে স্থায়ী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

সড়কের পিচ-খোয়া উঠে বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এসব খানাখন্দ এড়িয়ে যানবাহন চলতে হচ্ছে এঁকেবেঁকে। ফলে যানবাহনের গতি ধীর হয়ে গেছে, ঘটছে নানা দুর্ঘটনাও। ভাঙা সড়ক যাতায়াত করার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ বছর বন্যায় শুধু বৃহত্তর নোয়াখালী ও কুমিল্লা নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলাও। এর বাইরেও বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার অবকাঠামো, রাস্তাঘাট, সেতু ও কালভার্টেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার জন্য মানসম্পন্ন যাতায়াত ব্যবস্থার বিকল্প নেই। দেশের ক্ষতিগ্রস্ত সব অবকাঠামো ও সড়ক-মহাসড়কগুলো মেরামত করে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে, এটাই প্রত্যাশা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০