নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধির কারণে রিজার্ভ বেড়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় এ অর্থবছরে রেমিট্যান্সে ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আবার যদি জুলাইয়ের সঙ্গে আগস্টের প্রবৃদ্ধি ধরি, তাহলে এটা প্রায় ৯০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। পাশাপাশি ডলার বিক্রি বন্ধের ফলে রিজার্ভ ক্ষয়রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ২৪ হাজার ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আইএমএফের বিপিএম-৬ হিসাব মান অনুযায়ী এটা ২০ হাজার মিলিয়নের কাছাকাছি।
হুসনে আরা শিখা বলেন, আন্তঃব্যাংক ফরেন এক্সচেঞ্জ সক্রিয় করা হয়েছে। ব্যাংকগুলো চাইলে নিজেরা কেনাবেচা করতে পারছে এবং বিনিময়হার বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। ডলারের দাম বর্তমানে ১১৮ টাকা থেকে ১২০ টাকা। ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের যে দাম, তার সঙ্গে কার্ব মার্কেটের দামের পার্থক্য এখন এক শতাংশের চেয়ে কম। আন্তঃব্যাংক লেনদেন সক্রিয় থাকার কারণে ফরেন এক্সচেঞ্জ রেটের যে মার্কেট বা ডলারের দাম স্ট্যাবিলাইজ থাকবে বলে আমরা মনে করি।
গত দুই অর্থবছরে সরকারি ঋণপত্র বা এলসি খোলার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চিতি কমে যায়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব নিয়ে আহসান এইচ মনসুর জানান, তিনি রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। তাতে রিজার্ভ বাড়বে, কমার কোনো ‘সম্ভাবনা নেই’।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম ১৪ দিনে দেশে ১১৬ কোটি ৭২ লাখ মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে। বিদায়ী আগস্ট মাসে সব মিলিয়ে এসেছিল ২২২ কোটি ডলার। ফলে চলতি মাসে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির আশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
প্রবাসী আয়সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১৪ দিনে (গত শনিবার পর্যন্ত) বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ৮১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলো এনেছে ২৯ কোটি ৭২ লাখ ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে চার কোটি ৯৯ লাখ ডলার। এ ছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩০ লাখ ডলার এসেছে।
বিভিন্ন ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, দাম বাড়িয়ে প্রবাসী আয় কেনার যে প্রতিযোগিতা ছিল, তা কমে এসেছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়াকড়ি কমায় ব্যাংকগুলোর সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি হয়েছে। এতে প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করেছে।