ড. মতিউর রহমান: গ্রামীণ বাংলাদেশে সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো বহুমুখী ও জটিল। পরিবার, গোত্র, সম্প্রদায়, ধর্মীয় সংগঠন, মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইত্যাদি প্রধান সামাজিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রামীণ জীবনের সব দিককে প্রভাবিত করে।
পরিবার হচ্ছে সবচেয়ে ছোট একক, যা সামাজিকীকরণের প্রথম পাঠশালা। গোত্র ও সম্প্র্রদায় সামাজিক সম্পর্ককে আরও প্রসারিত করে। ধর্মীয় সংগঠন মানুষকে একত্রিত করে এবং নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে তোলে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মানুষকে জ্ঞানী করে তোলে এবং সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধানে কাজ করে।
গ্রামীণ বাংলাদেশের সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো কালের বিবর্তনে বহু রূপ ধারণ করেছে। ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের জটিল মিশেলে এই পরিবর্তন ঘটেছে। আগে গ্রামীণ বাংলাদেশে পারিবারিক বন্ধন, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং কৃষিজীবী জীবনযাত্রা সামাজিক জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করত। কিন্তু আধুনিক যুগে এই কাঠামোতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে।
এই প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রামীণ সমাজের মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করে, মানুষকে একত্র করে এবং তাদের জীবনের স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। কিন্তু দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানগুলোতেও পরিবর্তন আসছে। পরিবার, সমাজ এবং শাসনব্যবস্থার ওপর এই পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে।
ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজের মূল ভিত্তি ছিল বড় পরিবার। একই ঘরের ছাদের নিচে একাধিক প্রজšে§র মানুষ একসঙ্গে বসবাস করত এবং সবাই মিলে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত। তারা সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সবাইকে সমান গুরুত্ব দিত। এই বড় পরিবারগুলো মূলত কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তারা যে জমি চাষ করত, সেই জমির মালিকানা সবার মধ্যে সমানভাবে বিভক্ত ছিল। কাজের বোঝাও সবার মধ্যে ভাগ করে নেওয়া হতো। আত্মীয়স্বজনের সম্পর্কই সম্প্র্র্র্রদায়ের আর্থিক ও সামাজিক ভিত্তিকে মজবুত করে। এই সম্পর্কগুলো এক ধরনের অনানুষ্ঠানিক সহায়তার জালের মতো কাজ করে, বিশেষ করে যখন কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা আর্থিক মন্দা আসে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, পরিবার ব্যবস্থা বহু রকম পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। শহরে মানুষের আগমন, অর্থনীতির পরিবর্তন এবং অন্য দেশে চলে যাওয়া-এসব কারণে বড় পরিবারের ধারণা কমে গেছে। আজকাল ছোট পরিবার বা একক পরিবারই বেশি দেখা যায়। মানুষ যখন ভালো চাকরি বা জীবনের অন্য সুযোগের খোঁজে শহরে বা বিদেশে চলে যায়, তখন বড় পরিবার ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
পুরুষদের অভিবাসনের ফলে পরিবারের লিঙ্গ ভূমিকায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। পুরুষরা কাজের জন্য দেশের বাইরে চলে যাওয়ায়, নারীরা পরিবারের দায়িত্ব নিতে বাধ্য হয়েছে। এমনকি অনেক কাজ যা আগে শুধু পুরুষেরাই করত, সেগুলোও এখন নারীরা করছে। আবার, অভিবাসীরা দেশে পাঠানো টাকা (রেমিট্যান্স) গ্রামীণ পরিবারগুলোকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলেছে। ফলে, এই পরিবারগুলো এখন শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারছে।
গ্রামীণ বাংলাদেশে ধর্ম, বিশেষ করে ইসলাম, সর্বদা একটি শক্তিশালী সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। গ্রামের মসজিদ কেবল নামাজের জায়গা নয়, বরং সম্প্র্র্রদায়ের একটি কেন্দ্রবিন্দু। এখানে মানুষ একত্রিত হয়, বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে এবং সামাজিক নিয়ম-কানুন নির্ধারণ করে। ইমাম, পীরসহ ধর্মীয় নেতারা গ্রামীণ জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারা বিয়ে, উত্তরাধিকার এবং সামাজিক আচরণের মতো বিষয়ে মানুষকে নির্দেশনা দেন।
বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে ধর্মের প্রভাব ক্রমে পরিবর্তিত হচ্ছে। একদিকে যেমন ধর্ম গ্রামীণ জীবনের মূল ভিত্তি, অন্যদিকে শিক্ষা, মিডিয়া এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রভাবের ফলে ধর্মের ব্যাখ্যা এবং অনুশীলনে নতুন দিগন্ত খুলে গেছে। আগের তুলনায় মানুষ ধর্মকে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে শিখছে এবং ধর্মীয় শিক্ষার ব্যক্তিগত ব্যাখ্যার প্রবণতা বেড়েছে। আবার, ইসলামী এনজিও ও দাতব্য সংস্থাগুলো গ্রামীণ সমাজে ধর্মীয় কাজের ধারণাকে বদলে দিয়েছে। এখন ধর্মকে কেবল আধ্যাত্মিক বিষয় হিসেবেই দেখা হয় না, বরং একে সমাজসেবা ও উন্নয়নের সঙ্গেও যুক্ত করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের গ্রামীণ শাসন ব্যবস্থায় আজ যে পরিবর্তন এসেছে, তা কল্পনাও করা যায় না। একসময় গ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন মাতবর। তিনি গ্রামের সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন, ঝগড়া-ফ্যাসাদ মিটিয়ে দিতেন, গ্রামের সম্পদ দেখাশোনা করতেন এবং সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষা করতেন। আগে গ্রামে শাসনব্যবস্থা ছিল অনেকটা প্রবীণদের মতামত ও সমাজের উচ্চবর্গের মানুষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। এই ব্যবস্থায় গ্রামের প্রবীণদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ছিল এবং সামাজিক মর্যাদা অনুযায়ী সব কিছু চলত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা, যেমন- ইউনিয়ন পরিষদ, গ্রামের শাসন ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই ব্যবস্থার আগমনের ফলে গ্রামের শাসন ক্ষমতা ক্রমে জনগণের হাতে চলে আসছে।
ইউনিয়ন পরিষদ এখন আরও বেশি করে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই পদক্ষেপের ফলে গ্রামীণ শাসনব্যবস্থা আরও গণতান্ত্রিক হয়ে উঠেছে। এখন সাধারণ গ্রামবাসীরা তাদের দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করে এমন বিষয়ে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারছে। ইউনিয়ন পরিষদে মহিলাদের জন্য কোটা নির্ধারণ করা স্থানীয় সরকারে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে গ্রামীণ বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী ক্ষমতা কাঠামো এখনও শক্তিশালীভাবে বর্তমান। এই অঞ্চলে ক্ষমতাবান পরিবারগুলো প্রায়ই সমাজের নানা ক্ষেত্রে প্রভাবশালী থাকে। ফলে এই কোটা ব্যবস্থা সত্ত্বেও, নারীদের পূর্ণ স্বাধীনতা ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা এখনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে বিয়ের ধারণা কালের বিবর্তনে বদলে গেছে। একসময় গ্রামীণ বাংলায় বিবাহকে একটি পারিবারিক বা সম্প্র্র্রদায়িক ঘটনা হিসেবে দেখা হতো। পরিবারের বড়রা বা গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতেন। বিয়ে ব্যক্তিগত পছন্দ বা রোমান্টিক ভালোবাসার চেয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলোকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হতো। যৌতুক প্রথা ছিল সাধারণ এবং একটি পরিবারের সম্মান ও অবস্থা তাদের মেয়েদের বিয়ে দিতে পারার ওপর নির্ভর করত। সমসাময়িক গ্রামীণ বাংলাদেশে বিয়ে প্রথায় ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসছে। যদিও সাজানো বিয়ে এখনও প্রচলিত, তরুণরা নিজের পছন্দ মতো জীবনসঙ্গী বেছে নিতে চাইছে। শিক্ষালাভ এবং আধুনিক চিন্তাধারা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ায় তরুণরা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে সাহস পাচ্ছে। শহরের মানুষ এবং মিডিয়াও এই পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
যৌতুক প্রথা এখনও বাংলাদেশের সমাজে একটি বড় সমস্যা হলেও, নারীদের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব কমানোর জন্য বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলন এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে বদলে যাওয়া অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, যেমন- নারীদের কাজে যোগদান বা অন্য দেশে চলে যাওয়া, বিয়ের পুরনো ধারণাকে বদলে দিচ্ছে। গ্রামীণ বাংলাদেশে শিক্ষার চিত্র একসময় অনেক ভিন্ন ছিল। আগে শিক্ষা সুযোগ সবার জন্য সমান ছিল না। মূলত কয়েকটি ধনী পরিবারের ছেলেরাই স্কুলে যেত। গ্রামের বেশিরভাগ শিশু, বিশেষ করে মেয়েরা, কৃষি কাজ বা ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকত। তাদের জন্য পড়াশোনাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। সমাজের রীতি-নীতিও মেয়েদের শিক্ষা গ্রহণে বাধা দেত। কিন্তু আজকাল পরিস্থিতি অনেক বদলে গেছে।
গ্রামীণ এলাকায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার ব্যাপক বিস্তারের ফলে সাক্ষরতার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে মেয়েদের শিক্ষায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি এনজিওগুলোর প্রচেষ্টাও এই অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। যদিও গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষার অবস্থা উন্নতির পথে, তবে উচ্চশিক্ষায় সীমিত সুযোগ এবং শহর ও গ্রামের মধ্যে শিক্ষার মানের ব্যবধানের মতো চ্যালেঞ্জগুলো এখনও বিদ্যমান।
এছাড়া বাংলাদেশে অনানুষ্ঠানিক ঋণ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী মানুষেরা ঐতিহ্যগতভাবে তাদের আর্থিক চাহিদা মেটাতে মহাজনদের ওপর নির্ভর করত। মহাজনরা প্রায়ই অতিরিক্ত সুদ নির্ধারণ করত, ফলে ঋণগ্রহীতারা ঋণের জালে আটকে পড়ে থাকত।
গ্রামীণ ব্যাংক ও ব্র্যাকের মতো ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের আগমনে বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতি পুরোপুরি বদলে গেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রামের মানুষ, বিশেষ করে নারীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা করে দিয়েছে। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি জোরদার হওয়ার পাশাপাশি নারীরাও স্বাবলম্বী হতে পেরেছে। ক্ষুদ্রঋণ, বিশেষ করে গ্রামীণ নারীদের জন্য একটি বিপ্লবী পরিবর্তন এনেছে। আগে যারা আনুষ্ঠানিক আর্থিক ব্যবস্থার বাইরে ছিলেন, ক্ষুদ্রঋণ এবং সঞ্চয় কর্মসূচির মাধ্যমে তারা নিজস্ব ব্যবসা শুরু করার এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। ফলে শুধু তাদের নিজের জীবনই বদলেছে তা নয়, বরং গোটা পরিবার এবং সম্প্র্র্র্রদায়ের অর্থনৈতিক অবস্থারও উন্নতি হয়েছে। ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রামীণ অর্থনীতিকে গতিশীল করার পাশাপাশি নারীদের সামাজিক অবস্থানকেও শক্তিশালী করেছে।
গ্রামীণ বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ এবং সম্প্রদায়গুলো সবসময় মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আগে এই যোগাযোগগুলো আত্মীয়স্বজন, জাতি বা ধর্মের মতো পারিবারিক সম্পর্কের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এই সম্পর্কগুলো মানুষকে সুরক্ষা দিত, দুঃখে-সুখে সঙ্গী হতো এবং সমাজকে একত্রিত রাখত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এনজিও আর সিবিওর আগমনে এই সামাজিক যোগাযোগ আরো আনুষ্ঠানিক ও উন্নয়নমুখী হয়ে উঠেছে। গ্রামীণ বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তনে এনজিওগুলোর অবদান অপরিসীম। তারা শুধু উন্নয়ন কাজেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং সমাজকে নতুন করে গড়ার কাজেও সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। এনজিওগুলো গ্রামীণ মানুষের মধ্যে নারী-পুরুষের সমান অধিকার, সবার জন্য সুযোগ সৃষ্টি এবং সম্প্র্র্রদায়ের সবার অংশগ্রহণের ধারণা প্রচার করেছে। তারা ঐতিহ্যবাহী অনেক কুসংস্কার ও অসাম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং আর্থিক স্বাবলম্বন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এনজিওগুলো যেসব কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, তা গ্রামীণ বাংলাদেশের চেহারা বদলে দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগের ঘাটতি পূরণ করে এনজিওগুলো গ্রামীণ উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে। এছাড়াও এনজিওগুলোর উদ্যোগে গড়ে ওঠা স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং সমবায় সংগঠনগুলো গ্রামীণ জনগণের মধ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার চেতনা জাগিয়ে তুলেছে। গ্রামীণ বাংলাদেশের সামাজিক কাঠামো ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে, যা সেখানকার মানুষের অভিযোজন ক্ষমতার পরিচয় বহন করে। পুরনো ঐতিহ্যবাহী প্রথা যেমন- পরিবার, ধর্ম ও সামাজিক রীতিনীতি এখনও গুরুত্বপূর্ণ হলেও, আধুনিক জীবনের ছোঁয়া লাগায় এগুলোও নতুন রূপ ধারণ করছে। শিক্ষা, অভিবাসন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন এই পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
ক্ষুদ্রঋণ এবং এনজিওর মতো নতুন প্রতিষ্ঠানের আগমনে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে গ্রামীণ বাংলাদেশের এই প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের ভবিষ্যৎ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।