যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ‘সবচেয়ে ব্যর্থ’ ট্রাম্প

*প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের মন্তব্য
শেয়ার বিজ ডেস্ক: ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ‘সবচেয়ে ব্যর্থ’ নেতা বলেছেন নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। তিনি রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্পকে ধনকুবেরদের একজন বন্ধু বলেও বর্ণনা করেন। খবর: এমএসএনবিসি।
আগামী ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। শেষ সময়ের নির্বাচনী প্রচারণায় দুই প্রার্থী ভোটারদের সামনে গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়ে নিজেদের পরিকল্পনা তুলে ধরছেন।

অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে একটি বক্তৃতায় এবং পরে টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এমএসএনবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কমলা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ট্রাম্প বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির ওপর পুনরায় বড় ধরনের শুল্ক আরোপ করার পরিকল্পনা করেছেন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবিত্ত শ্রেণির পকেটে টান পড়বে।
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে জনমত জরিপে এখন পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কমলা ও ট্রাম্প উভয়ই এখন অর্থনীতির মতো নানা বিষয়ে নিজেদের পরিকল্পনা জানাচ্ছেন, চেষ্টা করছেন এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারা ভোটারদের মনজয় করতে।

পিটসবার্গে দেয়া এক বক্তৃতায় দেশকে নতুন দিশায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কমলা। তিনি এখানেও সাধারণ আমেরিকানদের জন্য পণ্যমূল্য কমিয়ে রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য পেনসিলভানিয়ার শিল্পনগর পিটসবার্গ।সেখানে কমলা আরও বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য আমাদের অর্থনীতি তখনই ভালো, যখন সেটি উঁচুতলার মানুষদের জন্য ভালো। দেশের অর্থনীতি যারা গড়ে তোলেন, যারা সেটিকে ধারণ করেন, যারা জীবনযুদ্ধ করে যাচ্ছেন, তাদের নিয়ে তার (ট্রাম্প) কোনো চিন্তা নেই।

ট্রাম্প যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন কলকারখানার প্রায় দুই লাখ চাকরির সুযোগ অন্য দেশে চলে গেছে বলেও জানান কমলা। তিনি বলেন, এটা ট্রাম্পকে উৎপাদন খাতের ইতিহাসে অন্যতম ব্যর্থ একজন নেতায় পরিণত করেছে। এদিন বামঘেঁষা টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এমএসএনবিসিকে সাক্ষাৎকার দেন কমলা। জো বাইডেন সরে যাওয়ার পর ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে সামনে চলে আসেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা। কমলা প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার পর এটাই তার প্রথম বড় একক সাক্ষাৎকার। এর আগে আগস্টে তিনি রানিংমেট টিম ওয়ালজকে সঙ্গে নিয়ে একটি যৌথ সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন।

শুল্কারোপ বিষয়ে ট্রাম্পের সমালোচনা করতে গিয়ে এমএসএনবিসিকে কমলা বলেন, আপনি যাচ্ছেতাইভাবে বিদেশি পণ্যের ওপর শুল্পারোপের পরিকল্পনা করতে পারেন না। বিষয়টি তার কাছে একদমই গুরুত্ব পায়নি। নির্বাচনী প্রচারণায় কমলা বলেছিলেন মধ্যবিত্তদের জন্য ‘অর্থনৈতিক সুযোগ’ তৈরি করতে চান তিনি। কমলার সুনির্দিষ্ট নীতিগুলোর একটি হলো—নবজাতক শিশুদের পরিবারের জন্য ছয় হাজার ডলার সুবিধা বা চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিট দেওয়া। তিনি ১০ কোটি মার্কিনির জন্য কর কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বলেছেন, অতি ধনীদের কর বাড়ানো হবে। কমিয়ে আনা হবে আবাসনের দাম।
করের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতি থেকে অনেকটাই দূরে সরে এসেছেন কমলা। মধ্যপন্থী ভোটারদের কাছে টানতে তিনি বলেছেন, সম্পদের ওপর ২৮ শতাংশ হারে কর নেওয়া হবে। বাইডেনের আমলে করের এ হার ৩৯ দশমিক ৬ শতাংশ। অর্থাৎ কমলা মধ্যপন্থী ও মধ্যবিত্তদের ওপর থেকে করের বোঝা এখনকার তুলনায় কমিয়ে আনার পক্ষে।

সেবা খাতের কর্মীদের পাওয়া টিপসের ওপর থেকেও কর তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কমলা। ট্রাম্পের পক্ষ থেকে এমন প্রতিশ্রুতি পাওয়ার কয়েক সপ্তাহের মাথায় কমলা একই নীতির কথা জানিয়েছেন।
কমলা আরও বলেছিলেন, তিনি জিনিসপত্রের বাড়তি দাম নিয়ন্ত্রণে করপোরেশনগুলোর ‘দাম বাড়ানোর’ নীতি মেনে চলবেন। তবে এটা কীভাবে কার্যকর হবে, সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি কমলা। কমলার এমন নীতিকে ট্রাম্পের বিপরীতে তার অন্যতম নীতিগত দুর্বল অবস্থান বিবেচনা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময়ের (২০১৭ থেকে ২০২১ সাল) কথা উল্লেখ করে হ্যারিস বলেন, মহামন্দার পর সবচেয়ে মারাত্মক বেকারত্বে দেশকে রেখে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০