নিজস্ব প্রতিবেদক: ফেনী পাওয়ার প্লান্টের সব স্থায়ী সম্পদ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেডের কোম্পানিটির পর্ষদ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) মেয়াদ শেষ হওয়ায় ফেনী ২২ মেগাওয়াট কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। পিপিএর মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (বিপিডিবি) আবেদন করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে তা অমীমাংসিত রয়েছে। পিপিএর মেয়াদ বাড়ানো অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় কোম্পানিটি কেন্দ্রটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ইঞ্জিন, আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম, সাবস্টেশন সরঞ্জাম, ভবন ও স্টিলের অবকাঠামো বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডরিনের পর্ষদ। এ লক্ষ্যে ট্রাস্ট মেরিন সার্ভিসের সঙ্গে একটি ‘ভেন্ডরস চুক্তি’ হয়েছে কোম্পানিটির। চুক্তি অনুযায়ী, বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জামগুলো ১০ কোটি ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করবে ডরিন পাওয়ার। আর এর জমি পরে উপযুক্ত ক্রেতার কাছে প্রতিযোগিতামূলক বাজারমূল্যে বিক্রি করা হবে।
জ্বালানি খাতের ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৮১ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। ডরিন পাওয়ারের রিজার্ভে রয়েছে ৭০২ কোটি ১২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১৮ কোটি ১১ লাখ ১৮ হাজার ৯০১ শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৬৬ দশমিক ৬১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ১৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ১৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
এদিকে চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই, ২০২৩-মার্চ, ২০২৪) শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ২৩ পয়সা, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল এক টাকা ৭৯ পয়সা। অর্থাৎ প্রথম তিন প্রান্তিকের হিসাবে শেয়ারপ্রতি আয় ৪৪ পয়সা বেড়েছে। অন্যদিকে তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ, ২০২৪) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬০ পয়সা (লোকসান), যা আগের বছর একই সময় ছিল ১ টাকা ৩ পয়সা। অর্থাৎ তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ১ টাকা ৬৩ পয়সা। এছাড়া ২০২৪ সালের ৩১ মার্চে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫২ টাকা ৩৪ পয়সা, যা ২০২৩ সালের ৩০ জুনে ছিল ৫০ টাকা ৪৭ পয়সা। প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ২৪ টাকা ৯৭ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে ছিল ৬ টাকা ৪৪ পয়সা।
২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৫৬ পয়সা এবং ৩০ জুনে শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকা ৪৭ পয়সা। আর আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ১৭ টাকা ৯৮ পয়সা। এর আগে ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি ১৮ শতাংশ নগদ ও ১২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১০ টাকা ৩১ পয়সা এবং ৩০ জুনে শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৫৩ টাকা ১৫ পয়সা।
আর আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৩২ টাকা ২২ পয়সা (লোকসান)। এর আগের বছর অর্থাৎ ৩০ জুন, ২০২১ সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে উদ্যোক্তা ও পরিচালক ব্যতীত শুধু সাধারণ বিনিয়োগকারীর জন্য ১৩ শতাংশ নগদ এবং সব বিনিয়োগকারীর জন্য ১২ শতাংশ বোনাস, অর্থাৎ সর্বমোট ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে আট টাকা ৯ পয়সা। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে এনএভি দাঁড়িয়েছে ৪৮ টাকা ৪১ পয়সা (পুনর্মূল্যায়নসহ)। এছাড়া এই হিসাববছরে কোম্পানিটির এনওসিএফপিএস হয়েছে ছয় টাকা ৪৬ পয়সা।