ভারতকে সুবিধা দিয়ে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি সই

শেয়ার বিজ ডেস্ক: নেপালের কাছ থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনতে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। এ বিদ্যুৎ আনতে সঞ্চালন লাইন ব্যবহারে ভারতের সঙ্গেও বাংলাদেশ একটা চুক্তি সই করেছে। বৃহস্পতিবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের উপস্থিতি এ চুক্তি সই হয়। 

তিন দেশের বিদ্যুৎ কোম্পানি—বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি (এনইএ) এবং ভারতের বিদ্যুৎ ভেপার নিগাম (এনভিভিএন) ত্রিপক্ষীয় এ চুক্তি সই করে। এর আওতায় জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসের জন্য নেপাল থেকে ভারতের মাধ্যমে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নেপালের জ্বালানি, পানিসম্পদ ও সেচমন্ত্রী দীপক খাড়কা, বাংলাদেশের পানিসম্পদ সচিব নজমুল আহসান এবং বাংলাদেশে নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি উপস্থিত ছিলেন।

রিজওয়ানা হাসান এ সময় বলেন, এ চুক্তি আঞ্চলিক জ্বালানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি শুধু তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের বিষয় নয়, বরং আমাদের দেশগুলোর দীর্ঘমেয়াদি এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়াও। এর আগে পরিবেশ উপদেষ্টা নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সঙ্গে সিংহ দরবারে সাক্ষাৎ করেন এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

যদিও এ চুক্তির ফলে পরোক্ষভাবে ভারত লাভবান হবে। চুক্তির শর্ত অনুসারে, এনইএ প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পাবে ৬ দশমিক ৪০ মার্কিন সেন্ট বা ৭ টাকা ৬৮ পয়সা (১ ডলার = ১২০ টাকা)। তবে ডলারের বিনিময় হার যত বাড়বে বিদ্যুৎ আমদানি ব্যয় তত বৃদ্ধি পাবে। নেপাল থেকে বাংলাদেশে এই বিদ্যুৎ সরবরাহে ভারতের ভূখণ্ড ও সরবরাহ লাইন ব্যবহার করা হবে। এজন্য ভারতীয় পক্ষও এই চুক্তিতে অংশ নিচ্ছে।

এ বিদ্যুৎ আনতে বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে নেপালের সীমান্ত পর্যন্ত ভারতের ভূখণ্ডে মাত্র ২৬ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণের অনুমতি চেয়েছিল বিপিডিবি। সাসেক (সাউথ এশিয়ান সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কোঅপারেশন) করিডোরের আওতায় এ সঞ্চালন লাইন নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। তবে ভারত সে সঞ্চালন লাইন নির্মাণের অনুমতি দেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে ভারতের সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করতে হবে। তাই সঞ্চালন লাইন বাবদ চার্জ দিতে হবে।

এর বাইরে ভারতকে ট্রেডিং মার্জিন হিসেবে দিতে হবে ইউনিটপ্রতি দশমিক শূন্য ৫৯৫ রুপি। সব মিলিয়ে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে প্রতি ইউনিটের দাম পড়বে প্রায় সোয়া আট টাকা। যদিও দেশে কাপ্তাইয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় হয় গড়ে দেড় থেকে দুই টাকা। অর্থাৎ নেপাল থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচগুণ দামে বিদ্যুৎ আমদানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে নেপাল থেকে বছরে মাত্র পাঁচ মাস বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

আরও জানতে দেড় টাকার জলবিদ্যুৎ নেপাল থেকে ৮.১৭ টাকায় আমদানি!

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০