প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: বর্ষার পরে শুভ্র ঋতু শরতের আগমন। এ সময় কাশফুল আকাশে সাদা মেঘ হয়ে নরম তুলোর মতো ভেসে বেড়ায়। এদিকে দিগন্ত জোড়া কাশফুলের মনোরম দৃশ্য দেখে সবাই খুশিতে ভরপুর। গোপালগঞ্জে বিভিন্ন নদ-নদীর তীর, বিসিক শিল্পনগরীতে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, কুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনস্, রঘুনাথপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ফুটেছে চোখজুড়ানো কাশফুল। সদর উপজেলার সর্বত্রই বাতাসে দোল খাচ্ছে শরতের দৃষ্টিনন্দন ধবধবে সাদা কাশফুল। এ ফুলের ছোঁয়ায় সবার শরীর-মন জুড়িয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনের অফিস আর যানবাহনের শব্দদূষণ থেকে রেহাই পেতে গ্রামে-গঞ্জে ছুটে চলছেন অনেকেই কাশবনের সৌন্দর্য দেখতে।
কাশফুলের ছবি তোলার হিড়িক পড়েছে গোপালগঞ্জের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে। এলোমেলো বাতাসের সঙ্গে খোলা রাস্তায় হেঁটে বেড়ানো, দুধারে সাদা মেঘের মতন ফুলের মেলা, কিংবা মনের আনন্দে নিজের সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটানো অনেক মধুর।শরৎকাল আর কাশফুলের বর্ণনা দিয়ে প্রবীণ কবি ও সাংবাদিক রবীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, মহাকবি কালিদাস শরৎ বন্দনায় বলেছিলেন, ‘প্রিয়তম আমার, ওই চেয়ে দেখো, নববধূর ন্যায় সুসজ্জিত শরৎকাল সমাগত।’
তিনি ‘ঋতুসংহার’ কাব্যে আরও লিখেছেন, ‘কাশফুলের মতো যার পরিধান, প্রফুল্ল পদ্মের মতো যার মুখ, উন্মত্ত হাঁসের ডাকের মতো রমণীয় যার নূপুরের শব্দ, পাকা শালি ধানের মতো সুন্দর যার ক্ষীণ দেহলতা, অপরূপ যার আকৃতি—সেই নববধূর মতো শরৎকাল আসে।’ কলেজছাত্রী অন্তরা রায় বলেন, সারাদিনের ক্লান্তি আর অবসাদ দূর করতে শরতের বিকালে মনকে প্রফুল্ল করতে কাশবনে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। কাশফুলের নরম ছোঁয়ায় স্নিগ্ধ বিকাল কাটাতে একটু শান্তির খোঁজে হারিয়ে যাওয়া যায় রাশি রাশি কাশফুলের মেঘের ভেলাতে।
জেলা কালচারাল অফিসার ফারহান কবীর সিফাত বলেন, এসময়ে দখিনা বাতাসে কাশফুলগুলো ঢলে ঢলে মানুষের সঙ্গে কথা বলে, আহ্বান জানায় তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে।