বাংলাদেশে উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের রূপরেখা

ড. মতিউর রহমান: স্মার্ট উন্নয়ন বলতে এমন এক ধরনের উন্নয়নকে বোঝায় যেখানে প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং ডেটার কার্যকর ব্যবহার করা হয় সমাজ, অর্থনীতি এবং পরিবেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য। এই উন্নয়নের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের জীবনমান উন্নত করা, সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার করা এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করা।

স্মার্ট উন্নয়নের ধারণার মধ্যে থাকে উদ্ভাবনী সমাধান। যেমন স্মার্ট নগর পরিকল্পনা, স্মার্ট কৃষি, স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা এবং স্মার্ট জ্বালানি ব্যবস্থাপনা। এসব ক্ষেত্রগুলোয় প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন ডেটা বিশ্লেষণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংস (ওড়ঞ) এবং অটোমেশন ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়। এর মাধ্যমে সম্পদের অপচয় রোধ করা, কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমানো সম্ভব হয়।
উদাহরণস্বরূপ, স্মার্ট শহরের ক্ষেত্রে যানজট, বায়ুদূষণ এবং নগর ব্যবস্থাপনার অন্যান্য চ্যালেঞ্জগুলোকে প্রযুক্তির মাধ্যমে সমাধান করা হয়। স্মার্ট কৃষির মাধ্যমে কৃষকরা প্রযুক্তির সাহায্যে ফসল উৎপাদনের সঠিক সময়, সেচের প্রয়োজনীয়তা এবং মাটির গুণগত মান সম্পর্কে সঠিক তথ্য পান। একইভাবে স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা ডিজিটাল মাধ্যমের মাধ্যমে রোগী ও ডাক্তারদের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করে, বিশেষত দূরবর্তী অঞ্চলের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়।

স্মার্ট উন্নয়ন কেবল প্রযুক্তির ব্যবহারে সীমাবদ্ধ নয়, এটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা, দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তির ওপরও গুরুত্বারোপ করে, যাতে সবার জন্য উন্নয়ন সমানভাবে নিশ্চিত করা যায়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে স্মার্ট উন্নয়নের গুরুত্ব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং বহুমাত্রিক। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখার জন্য স্মার্ট উন্নয়ন প্রযুক্তির সঙ্গে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মেলবন্ধন তৈরি করে। দেশের দ্রুত নগরায়ণ, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং সীমিত সম্পদের সঠিক ব্যবহার করার জন্য স্মার্ট উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। স্মার্ট উন্নয়ন বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, যার মাধ্যমে দেশের জনসাধারণের জীবনমান বৃদ্ধি পাবে এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষাও নিশ্চিত হবে।

প্রথমত, জনসংখ্যার চাপ মোকাবিলায় স্মার্ট নগর উন্নয়ন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শহরগুলোয় ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং যানজট, জলাবদ্ধতা ও পরিবেশ দূষণের মতো সমস্যাগুলোকে প্রযুক্তিগত সমাধানের মাধ্যমে দূর করা সম্ভব। স্মার্ট নগর ব্যবস্থাপনায় যেমন সড়ক, পরিবহন, পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং শক্তির ব্যবহার আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করা যায়। এর ফলে নাগরিকদের জীবনের মান উন্নত হবে এবং নগর ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা আসবে।

দ্বিতীয়ত, কৃষি খাতে স্মার্ট প্রযুক্তির ব্যবহার বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হতে পারে। বাংলাদেশ মূলত একটি কৃষিনির্ভর দেশ এবং স্মার্ট কৃষির মাধ্যমে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। ড্রোন, সেন্সর এবং তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে মাটির গুণগত মান, আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং সেচ ব্যবস্থাপনা আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করা যাবে। এটি কৃষকদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে এবং খাদ্য উৎপাদনের সঠিক সময় নির্ধারণে সহায়ক হবে। তৃতীয়ত, বাংলাদেশে শক্তি খাতেও স্মার্ট উন্নয়ন অপরিহার্য। স্মার্ট গ্রিড এবং স্মার্ট মিটারিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে শক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব। এতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় সাশ্রয়ী ব্যবহার বাড়বে এবং নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলোও সহজেই একীভূত করা যাবে। এটি জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে টেকসই শক্তি ব্যবস্থাপনার দিকে নিয়ে যাবে।

চতুর্থত, স্বাস্থ্য খাতে স্মার্ট উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা বাংলাদেশে আরও তীব্র। টেলিমেডিসিন এবং ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব। এটি শুধু শহরের মানুষদের জন্য নয়, গ্রামীণ জনপদের মানুষেরও সহজে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগ তৈরি করবে। স্মার্ট হেলথকেয়ার সিস্টেম রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা সহজ করে তুলবে এবং স্বাস্থ্যসেবার প্রাপ্যতা বাড়াবে।
পঞ্চমত, শিক্ষা খাতে স্মার্ট উন্নয়ন বাংলাদেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। ডিজিটাল ক্লাসরুম, অনলাইন শিক্ষার প্ল্যাটফর্ম এবং ই-লার্নিং সিস্টেমগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষার মান উন্নত করার সুযোগ তৈরি হবে। স্মার্ট শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার আরও বিস্তার ঘটবে এবং ডিজিটাল দক্ষতাসম্পন্ন একটি প্রজš§ গড়ে উঠবে, যারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতিকে নেতৃত্ব দিতে পারবে।
অতএব, স্মার্ট উন্নয়ন বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি কেবল প্রযুক্তিগত সমাধান নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য একটি যুগান্তকারী পথ। স্মার্ট উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পারবে, জনসংখ্যার চাপ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে এবং একটি উন্নত ও টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারবে।
বাংলাদেশে স্মার্ট উন্নয়ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বাধা রয়েছে, যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে। যদিও স্মার্ট উন্নয়ন আধুনিক প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের টেকসই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার ক্ষমতা রাখে, তবুও বাস্তবায়নের পথে কিছু মৌলিক চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান। এ চ্যালেঞ্জগুলোকে সমাধান করতে না পারলে, স্মার্ট উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করা কঠিন হতে পারে।

প্রথমত, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা একটি বড় বাধা। স্মার্ট উন্নয়নের জন্য শক্তিশালী ডিজিটাল অবকাঠামো যেমন উচ্চ গতির ইন্টারনেট, আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং নিরাপদ বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় এ অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। ইন্টারনেটের সংযোগ এবং গতির সমস্যা, বিদ্যুতের অনিয়মিত সরবরাহ স্মার্ট উন্নয়নের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে।

দ্বিতীয়ত, দক্ষ মানবসম্পদের অভাব একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। স্মার্ট উন্নয়নের ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে সক্ষম দক্ষ জনবলের প্রয়োজন। বাংলাদেশে এখনও বড় একটি অংশ প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং আইটি জ্ঞান থেকে বঞ্চিত। স্মার্ট শহর, স্মার্ট কৃষি, বা স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবার মতো ক্ষেত্রগুলোয় কাজ করার জন্য উচ্চতর প্রশিক্ষিত মানবসম্পদের অভাব দেখা দেয়। শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণ ও দক্ষতার উন্নয়ন না হলে স্মার্ট উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন করা কঠিন হবে।

তৃতীয়ত, নীতিগত ও আইনি কাঠামোর অভাবও একটি বড় বাধা। স্মার্ট উন্নয়নের জন্য নির্দিষ্ট নীতিমালা এবং আইনি কাঠামোর প্রয়োজন; যা প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও স্মার্ট উন্নয়নের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নীতিগত এবং আইনি কাঠামো গড়ে ওঠেনি। ডিজিটাল নিরাপত্তা, ডেটা সুরক্ষা এবং প্রযুক্তির ব্যবহার সংক্রান্ত নিয়মাবলি প্রতিষ্ঠিত না হলে, এই খাতে সঠিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে।

চতুর্থত, অর্থায়নের অভাব একটি বড় চ্যালেঞ্জ। স্মার্ট উন্নয়নের জন্য বড় মাপের বিনিয়োগ প্রয়োজন, যা দেশের সাধারণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রমের তুলনায় অনেক ব্যয়বহুল। নতুন প্রযুক্তির প্রবর্তন, আধুনিক অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং দক্ষ কর্মী তৈরির জন্য প্রচুর পরিমাণে অর্থায়নের প্রয়োজন। তবে দেশের আর্থিক সীমাবদ্ধতা এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা স্মার্ট উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়নের অভাব তৈরি করে।

পঞ্চমত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিবন্ধকতা স্মার্ট উন্নয়নের পথে একটি বড় বাধা। স্মার্ট প্রযুক্তি গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক সময় সাধারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতার অভাব এবং সাংস্কৃতিক প্রতিবন্ধকতা দেখা যায়। নতুন প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে মানুষের মধ্যে মানসিকতা এবং অভ্যাসগত পরিবর্তন প্রয়োজন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে ভুল ধারণা বা প্রতিরোধ গড়ে ওঠে, যা স্মার্ট উন্নয়নের প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়।

বাংলাদেশে স্মার্ট উন্নয়নের পথে বিদ্যমান বাধাগুলো অতিক্রম করার জন্য সমন্বিত ও সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এই বাধাগুলোর মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি কৌশল এবং যথাযথ ব্যবস্থাপনা না হলে, স্মার্ট উন্নয়নের সুফল পাওয়া কঠিন হবে। তবে সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রযুক্তি, দক্ষতা এবং সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার করে এই বাধাগুলোকে অতিক্রম করা সম্ভব। প্রথমত, অবকাঠামোগত উন্নয়ন দ্রুততর করতে সরকার এবং বেসরকারি খাতের যৌথ বিনিয়োগ জরুরি। স্মার্ট উন্নয়নের জন্য ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্ভরযোগ্যতা বাড়াতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন অপরিহার্য। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (চচচ) মাধ্যমে গ্রামীণ এবং শহুরে উভয় এলাকায় উন্নত ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সহজলভ্য করতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় ডিজিটাল কানেক্টিভিটি প্রকল্প শুরু করা যেতে পারে।

দ্বিতীয়ত, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এবং প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার সংস্কার করা জরুরি। প্রযুক্তি ব্যবহারে জনগণের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন স্তরে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করা দরকার। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় তথ্যপ্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত শিক্ষা আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে হবে। কর্মজীবী জনগোষ্ঠীর জন্যও প্রযুক্তিভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করা যেতে পারে, যা তাদের স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলবে।

তৃতীয়ত, সুষ্ঠু নীতিমালা এবং আইনি কাঠামো গঠন করতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। স্মার্ট উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা, ডেটা সুরক্ষা এবং প্রযুক্তির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ওপর ভিত্তি করে একটি শক্তিশালী নীতিমালা গড়ে তোলা প্রয়োজন। বিভিন্ন খাতে প্রযুক্তি ব্যবহারের সঠিক নিয়ম-কানুন এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নীতিনির্ধারক এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো যেতে পারে। এর পাশাপাশি, প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সঠিক ডেটা গোপনীয়তা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা জরুরি।

চতুর্থত, অর্থায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে স্মার্ট উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগের জন্য বৈদেশিক ঋণ ও বিনিয়োগ আকর্ষণের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে স্মার্ট উন্নয়নের প্রকল্পে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন নিশ্চিত করা যেতে পারে। একই সঙ্গে দেশের বাজেটে স্মার্ট প্রযুক্তির গবেষণা, উন্নয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখার প্রয়োজন। এছাড়া স্টার্টআপ এবং উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ ঋণ এবং অন্যান্য আর্থিক সুবিধা প্রদান করে স্মার্ট প্রযুক্তির বিস্তৃত ব্যবহার নিশ্চিত করা যেতে পারে।

পঞ্চমত, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিবন্ধকতা দূর করতে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানসিকতার পরিবর্তন ঘটানো জরুরি। স্মার্ট প্রযুক্তির প্রয়োগের সুফল সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে অবগত করার জন্য গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। টিভি, রেডিও, সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রযুক্তির ব্যবহার ও সুবিধার প্রচার করা যেতে পারে। এটি জনগণের মধ্যে প্রযুক্তি গ্রহণে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করবে এবং স্মার্ট উন্নয়নকে আরও সহজ করে তুলবে।
সর্বোপরি, স্মার্ট উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এর জন্য সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ এবং জনগণের মধ্যে সমন্বয়মূলক প্রচেষ্টা দরকার। যদি এ বাধাগুলোকে সুপরিকল্পিতভাবে মোকাবিলা করা যায়, তবে বাংলাদেশ দ্রুত স্মার্ট উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারবে এবং টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০