খাল ভরাটের কারণে নোয়াখালীর বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নোয়াখালীতে সাম্প্রতিক বন্যার পর পানি নামার জায়গা পাচ্ছে না। কারণ, বেশিরভাগ খাল-বিলই ভরাট করে ফেলা হয়েছে। আমরা দেখেছি, বন্যা থেমে গেলেও পানি নামেনি। কারণ, এখানে বন্যা হতে পারে এমন ধারণাই কেউ করেননি। ফলে বেশিরভাগ খাল-বিলই ভরাট করে ফেলা হয়েছে। যার কারণে সমুদ্র থেকে যে জোয়ার আসছে সেটি আর ফেরত যাওয়ার জন্য জায়গা পাচ্ছে না।
গতকাল রোববার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘কপ নেটওয়ার্ক কনভেনশন-২০২৪’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্র্রতিক সময়ে অত্যাধিক গরম ও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর মানুষ বলেছে এমন গরম এবং বন্যা আমরা আগে দেখিনি। মূলত, এটিই জলবায়ু পরিবর্তন। আর এই পরিবর্তনের পেছনের কারণ হচ্ছে মানুষ। কারণ, এমন কিছু কিছু কাজকে আমরা উন্নয়ন মনে করি; যা প্রতিনিয়তই পৃথিবীকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমরা মাটির নিচ থেকে তেল, কয়লা তুলছি। ফলে পৃথিবীতে কার্বন গ্যাস নিঃসরণ বেড়ে গেছে। গাছ অক্সিজেন দেয় এবং কার্বন শোষণ করে নেয়। কিন্তু আমরা গাছ কেটে ফেলছি। তখনও কিন্তু কার্বন গ্যাস বেড়ে যাচ্ছে। ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়েই চলছে। এটি (তাপমাত্রা) আমরাই বাড়িয়ে দিয়েছি।
উপদেষ্টা বলেন, এমন একটি উন্নয়নের দর্শন বা মতবাদকে আমরা আপন করে নিয়েছি; যা থেকে বের হতে না পারলে জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে আমরা বাঁচতে পারব না।

বন্যা-পরবর্তী সময়ে ফসলের বীজের সংকট সামনে এসেছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও বলেন, বন্যা-পরবর্তী সময় বীজ পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু ঘরে-ঘরে বীজ সংরক্ষণ করা গেলে সরকারকে বীজের সংকটের মধ্যে পড়তে হতো না। কিন্তু আমরা বীজ সংরক্ষণ না করেই সব দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছি কোম্পানির হাতে।
অনেক উন্নত দেশই ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে পর্যাপ্ত সহায়তা দিচ্ছে নাÑউল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও বলেন, উন্নত বিশ্বই বেশি তেল এবং গ্যাস পোড়ায়। যার কারণে কার্বনের নিঃসরণ বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু তারা জলবায়ু পরিবর্তনে ভুক্তভোগী দেশগুলোকে যে পরিমাণ টাকা দেয়ার কথা তার ধারেকাছেও যায় না। তারা কেবল সম্মেলনে যায় এবং বড় বড় কথা বলে কিন্তু টাকাগুলো সেই পরিমাণে দেয়া হয় না। তবে সুইডেনসহ কিছু দেশ এর ব্যতিক্রমও রয়েছে।

এছাড়া দেশে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যার সমাধানের জন্য এ সরকার সার্বিকভাবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। অনুষ্ঠানে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম সভাপতিত্ব করেন। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন সুইডেন এমবাসির হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন মিস মারিয়া স্ট্রিডসম্যান, ইউএন উইমেন রিপ্রেজেনটেটিভ বাংলাদেশ গীতাঞ্জলি সিং। এছাড়া অনুষ্ঠানে জলবায়ু অভিযোজনে নিজ নিজ এলাকায় অবদান রাখার জন্য দেশর বিভিন্ন অঞ্চলের পাঁচজন নারীকে সম্মাননাও জানানো হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০