আরও সাড়ে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি, শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বাজারে সরবরাহ ঘাটতির কারণে সম্প্রতি ডিমের দাম বেশ অনেকটা বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার সাতটি প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। এ ছাড়া বাজারে ডিমের দাম কমাতে ডিম আমদানির ওপরে থাকা শুল্ক–কর সাময়িকভাবে প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।

আজ মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে লেখা এক চিঠিতে ডিম আমদানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান শুল্ক-কর প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে ট্যারিফ কমিশন।

সম্প্রতি বাজারে ডিমের দাম কয়েক দফায় বেড়েছে, যা চলতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছায়। গতকাল ঢাকার বাজারে এক ডজন ফার্মের মুরগির বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৭৫-১৯০ টাকা দরে। যদিও আজ বাজারে ডিমের দাম কিছুটা কমার খবর পাওয়া গেছে। আজ ঢাকার বড় বাজারগুলোয় প্রতি ডজন বাদামি ডিম ১৫৫-১৬০ টাকা ও পাড়া-মহল্লায় তা ১৭০-১৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অথচ কয়েক সপ্তাহ আগে এ ধরনের মুরগির ডিম ১৪০-১৫০ টাকা বা তারও কম দামে বিক্রি হচ্ছিল।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ডিমের সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। অর্থাৎ বাজারে ডিমের যে চাহিদা রয়েছে, তার চেয়ে কম ডিম বাজারে আসছে। মূলত এ কারণেই দাম বেড়েছে। ট্যারিফ কমিশনও মনে করছে, বাজারে চাহিদার তুলনায় কম ডিম সরবরাহ হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, দেশে প্রতিদিন প্রায় ৫ কোটি ডিমের চাহিদা রয়েছে।

শুল্কছাড়ের সুপারিশ
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেবে, গত এক মাসে স্থানীয় বাজারে ডিমের দাম ১৫ শতাংশ ও ১ বছরে তা ২০ দশমিক ৪১ শতাংশ বেড়েছে।

ট্যারিফ কমিশন জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রতিক বন্যার কারণে পোলট্রি শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং পরিপূরক অন্যান্য খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে ডিমের সরবরাহ ব্যবস্থায় একধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

এনবিআরের কাছে পাঠানো চিঠিতে ট্যারিফ কমিশন বলেছে, সম্প্রতি স্থানীয় বাজারে ডিমের সরবরাহে ঘাটতির কারণে এর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। ডিমের এমন অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে পণ্যটি আমদানিতে সাময়িক সময়ের জন্য শুল্ক–কর প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।

ট্যারিফ কমিশন জানায়, সম্প্রতি বাজারে ডিম ছাড়াও পেঁয়াজ, আলুসহ বেশ কিছু অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম বাড়ে। এ অবস্থায় গত ২১ আগস্ট পেঁয়াজ, আলু ও ডিম আমদানিতে শুল্ক-কর কমানোর বিষয়ে এনবিআরকে একটি প্রতিবেদন পাঠায় ট্যারিফ কমিশন। প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী গত ৪ সেপ্টেম্বর আলু ও পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক কমায় এনবিআর। এর ফলে স্থানীয় বাজারে এ দুটো পণ্যের দাম কিছুটা কমে স্থিতিশীল পর্যায়ে এসেছে।

তবে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ডিম আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের বিষয়ে এনবিআর থেকে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে চিঠিতে উল্লেখ করে ট্যারিফ কমিশন।

সংস্থাটি জানায়, শর্তসাপেক্ষে আমদানিযোগ্য পণ্য হওয়ায় সরকারে অনুমতি ছাড়া ডিম আমদানি করা যায় না। এখানে দেশের পোলট্রি শিল্পের সুরক্ষার বিবেচনা কাজ করে। তবে সুনির্দিষ্ট মেয়াদে ডিম আমদানিতে শুল্কছাড় দেওয়া হলে তাতে পোলট্রি শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম। অন্যদিকে, স্বল্প মেয়াদে শুল্ক-কর ছাড়ের ফলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতিরও আশঙ্কা নেই।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০