শেয়ার বিজ ডেস্ক: ব্যবহারকারীদেরকে আসক্ত রাখতে দীর্ঘদিন ধরেই নির্দিষ্ট অ্যালগরিদম ব্যবহার করে এসেছে টিকটক। চলতি সপ্তাহে ফাঁস হওয়া আদালতের কয়েকটি নথিতে বলা হয়, তাদের এমন অসদুপায়ের ব্যাপারে বেশ ভালোভাবেই অবগত চায়নাভিত্তিক মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স। খবর: সিএনএন।
আসক্তি বাড়াতে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য তাদের এমন কৌশল ও এর অপব্যবহারের অভিযোগ এনে টিকটকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি অঙ্গরাজ্য। অভিযোগে বলা হয়েছে, জনপ্রিয় এই অ্যাপটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে শিশু ও তরুণরা এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। এটিকে ‘ডিজিটাল নিকোটিন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তারা। পাশাপাশি টিকটক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানা চাওয়া হয়েছে মামলাগুলোয়। টিকটকের অটো প্লে, আনলিমিটেড স্ক্রল এবং রিকমেন্ডেশের মতো ফিচারগুলো শিশুকিশোরদের ঝুঁকির মুখে ফেলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
টিকটকের বিরুদ্ধে করা কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যের মামলার নথিতে থেকে জানা যায়, একজন সাধারণ ব্যবহারকারীর প্ল্যাটফর্মটির প্রতি আসক্ত হয়ে উঠতে অন্তত ৮ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ২৬০টি ভিডিও দেখতে হয়। অর্থাৎ ৩৫ মিনিটের ভিডিও দেখলেই সাধারণত ব্যবহারকারীরা আসক্ত হয়ে পড়েন।
টিকটকের বিরুদ্ধে করা মামলার নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এতে এমন ফিচার সংযুক্ত করা হয়েছে যেখানে টিনএজারদেরকে টানা ৬০ মিনিট ভিডিও দেখার পর বিরতি নিতে উৎসাহিত করা হয়। জরিপে দেখা গেছে টিনেজাররা প্রতিদিন গড়ে ১০৭ মিনিট থেকে ১০৮ দশমিক ৫ মিনিট পর্যন্ত টিকটকে সময় কাটান।
টিকটক সম্পর্কে এমন তথ্য প্রকাশের পর অনেকে বলছেন, ব্যবহারকারী ও বিশেষ করে শিশুদের ক্ষতি হওয়ার ব্যাপারটি জানার পরও টিকটকের চুপ থাকাটা ভয়াবহ।
নিজেদের সম্পর্কে সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশের পর এক বিবৃতিতে টিকটক জানায়, আদালতের কাছে থাকা এমন স্পর্শকাতর তথ্য প্রকাশ পাওয়াটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায় এতে করে তাদের কমিউনিটি সেফটি সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়ে পড়ছে সবার মধ্যে।
চলতি বছরের এপ্রিলে টিকটিক নিষিদ্ধ করে যুক্তরাষ্টার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক আদেশে বলেন, আমেরিকায় টিকটকের মালিকানা বিক্রি করতে হবে চীনের বাইটড্যান্সকে। তা না হলে স্থানীয়ভাবে টিকটককে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হবে।