শুভ্র শচীন, খুলনা : সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বৃষ্টিতে বীজতলা নষ্ট হওয়ায় মৌসুমের প্রথম দফায় হোঁচট খায় শীতের সবজিচাষি। এ মাসের শুরুতে লালশাক, পালংশাক, মুলা ও ফুলকপির আবাদ শুরু করেছেন তারা। আগামী মাসের শেষদিকে স্থানীয় বাজারে শীতের সবজি উঠতে শুরু করবে। আর সে লক্ষ নিয়ে ব্যস্ত জেলার দেড় লাখ চাষি। মৌসুমে ৯ উপজেলায় ৪০০ কোটি টাকার সবজি উৎপাদন হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী।
আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এতে করে একদিকে যেমন বেগুন, লাউ ও কাঁচামরিচ গাছ নষ্ট হয়েছে, পাশাপাশি বীজতলাও নষ্ট হয়েছে। বৃষ্টির কারণে ক্ষেতের সবজি নষ্ট হওয়ায় বেগুন, লাউ, করলা, লালশাক ও পালংশাকের দাম বেড়ে যায়। বাজারের চাহিদা মেটাতে কৃষক আগেভাগেই বীজতলা তৈরি শুরু করেন। কিন্তু সেপ্টেম্বরের বৃষ্টিতে বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়।
ডুমুরিয়া উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের চাষি ওলিয়ার রহমান শেখ জানান, তিনি বিটি বেগুনের চাষ করেছেন। গতবার ভালো উৎপাদন হওয়ায় এবার চাষের পরিধি বেড়েছে। ফুলতলা উপজেলার পূর্ব মশিয়ালি গ্রামের চাষি ঈসা খাঁ জানান, লাউ উৎপাদন শুরু করেছেন। গতবছর ৩২০০ গাছে প্রায় তিন লাখ টাকার শাক বিক্রি হয়। মহানগরী সংলগ্ন তেলিগাতির চাষি মোকছেদ ফকিরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি লাউ, করলা, টমেটো ও শসার চাষ করেছেন। ঘেরের আইলে টমেটো ভালো উৎপাদন হবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি কীটনাশকমুক্ত সবজি উৎপাদন করেন।
ডুমুরিয়া উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অরুণা মণ্ডল জানান, কুলবাড়িয়া, মঠবাড়িয়া, চাকুন্দিয়া, গোবিন্দকাঠি, বরাতিয়া, আরশনগর, মাগুরঘোনা, বেতাগ্রাম, হাজিবুনিয়া, বান্দা, কালিকাপুর, সেনপাড়া, খর্ণিয়া ও ভদ্রাদিয়া গ্রামে ফুলকপি, শিম, টমেটো, বেগুন, মুলা, পাতাকপি ও পালংশাকের আবাদ হয়েছে। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, ৬৫ হাজার চাষি শীতের সবজি আবাদে ব্যস্ত।
পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, সাড়ে ৪৯ হাজার চাষি লালশাক, মুলা, ফুলকপি, পাতাকপি, পালং ও টমেটোর আবাদ করেছেন। উপজেলায় ৭০০ হেক্টর জমিতে শীতের সবজির আবাদ হয়েছে।
ফুলতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিনা খাতুন জানান, আলকা, গাড়াখোলা, দামোদর, মশিয়ালি, ধোপাখোলা, যুগ্নিপাশা, বেজেরডাঙ্গা, জামিরা ও ছাতিয়ান গ্রামের ২০০ হেক্টর জমিতে লাউ, ওলকপি, টমেটো ও পাতাকপির চাষ হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্রমতে, ছয় হাজার হেক্টর জমিতে শীতের সবজি চাষ হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার জেলায় ৪০০ কোটি টাকার সবজি উৎপাদন হবে।