চন্দ্রবিন্দু: বিশ্বশান্তি কামনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল রবীন্দ্র উৎসব। শুধু বিশ্বকবিই নন, সব কবি-সাহিত্যিক ঘিরে দু’দিনব্যাপী এ উৎসবে ছিল সংগীত, নৃত্য, কবিতা পাঠের আসর ও চিত্রকর্ম প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজন। উৎসবের প্রতিপাদ্য ছিল ‘বিশ্বভরা প্রাণ’।
১৩ ও ১৪ অক্টোবর দুদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে আনন্দঘন পরিবেশে উৎসবটি চলে। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ, রাজশাহী শাখা। দিনগুলোয় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে মুখর হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন।
চিত্রকর্ম প্রদর্শনী
উৎসবের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। মিলনায়তনের বারান্দায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উম্মুক্ত ছিল। অর্ধশতাধিক চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয় এখানে। চিত্রকর্মগুলো এঁকেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তারা বিশ্বকবির অনবদ্য সৃষ্টিগুলো চিত্রকর্মের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। এর কয়েকটি চিত্রকর্ম ছিল রবীন্দ্রনাথের কবিতা অবলম্বনে। আয়োজকরা জানান, রবীন্দ্রনাথকে উৎসর্গ করেই চিত্রকর্মগুলো প্রদর্শন করা হয়েছে।
বিশ্বশান্তি কামনা
প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে উৎসবের শুরু হয়। এছাড়া চারটি সেশনে বিভক্ত এ উৎসবের সব সেশনে প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে বিশ্বের সর্বস্তরে নিপীড়িত-নির্যাতিতদের শান্তি কামনা করা হয়। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের স্মরণ করার কথা জানান উৎসবে অংশ নেওয়া সংস্কৃতিকর্মীরা।
সংস্কৃতিকর্মী ও রাজশাহীর নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক সাজু সরদার বলেন, বিশ্বশান্তি কামনার জন্যই এবারের প্রতিপাদ্য ‘বিশ্বভরা প্রাণ’। তাই প্রদীপ প্রজ্বালন ও রবীন্দ্র আরাধনা সংগীত দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়েছে।
রবীন্দ্রপ্রেমীদের মিলনমেলা
এ উৎসবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রবীন্দ্রপ্রেমীরা এসে জড়ো হন। অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সভাপতি ড. সানজিদা খাতুন।
উৎসবে ভিন্নতর একটি আয়োজন ‘চা উৎসব’। মিলনায়তনের মধ্যে মূল অনুষ্ঠানগুলো চলতে থাকার পাশাপাশি চা উৎসব চলছিল বাইরে। ‘টাকা নেওয়া ছাড়াই চায়ের সেবা’ বিষয়টি সবাইকে বিস্মিত করে। উৎসবের দুদিন অংশগ্রহণকারীরা বিনা মূল্যে চা পান করেছেন। চা উৎসবের আয়োজন করে ইস্পাহানি। সেবাদানকারীরা সবার কাছে গিয়ে দিয়েছেন চা। চা উৎসব সম্পর্কে আয়োজকরা জানান, রবীন্দ্র উৎসবটি আরও আনন্দদায়ক ও অংশগ্রহণকারী সবাইকে ফ্রেশ করতে আমাদের এ ক্ষুদ্র আয়োজন।
উৎসব সম্পর্কে রাজশাহী রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ সভাপতি তাপস মজুমদার বলেন, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, লোকগীতিসহ বিভিন্ন আয়োজন ছিল। মানুষের মধ্যে সুস্থ চিন্তাকে বিকশিত করাই এ উৎসবের উদ্দেশ্য।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়