ভারতীয় ক্রিকেট ‘ভূমিকম্প’ অনুরাগ ঠাকুর আউট

ক্রীড়া ডেস্ক: শেষ পর্যন্ত বড় শাস্তির মুখোমুখি হতে হলো অনুরাগ ঠাকুরকে। তবে জেল হয়নি তার।

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) প্রধানের পদ থেকে তাকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিমকোর্ট। পাশাপাশি আরেক শীর্ষ কর্তা বোর্ড সচিব অজয় শিরকেকেও সরে যেতে বলেছেন আদালত। গতকাল এক শুনানি শেষে এই চূড়ান্ত রায় জানা গেলো।

সুপ্রিমকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ১৯ জানুয়ারি একটি প্রশাসক কমিটি নিয়োগ করা হবে। তারাই বিসিসিআই’র ব্যবসায়িক বিষয়গুলো দেখবে। সব মিলিয়ে এত বড় অদল-বদল এর আগে ভারতীয় ক্রিকেটে দেখা যায়নি। রীতিমতো ‘ভূমিকম্প’ ঘটে গেছে! তিন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের প্রধান, ভারতের প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুর অবসরে যাওয়ার আগে আরেক ঠাকুরকে বিদায় করে দিলেন। প্রধানের পদ থেকে সরানোর পাশাপাশি অনুরাগকে শোকজ নোটিসও দিয়েছেন আদালত। অভিযোগÑআদালতের ওপর হস্তক্ষেপ চেষ্টা ও মিথ্যা হলফনামা দিয়েছেন তিনি। এই শোকজের জবাব দেওয়ার জন্য ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় পাবেন তিনি।

আদালত শীর্ষ দুই কর্তাকেই সরায়নি, একই সঙ্গে আরও কিছু প্রস্তাব রেখেছে। যে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা লোধা কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করেনি, তাদের বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

ভারতীয় ক্রিকেট দুর্নীতির সে াতে পা রাখে আইপিএলের পথ ধরেই। তারপরই ক্রিকেট প্রশাসনে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতির নানা খবর শোনা যায়। তেমনই এক পরিস্থিতিতে সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনকে ঢেলে সাজাতে গঠন করা হয় একটি কমিটি। ২০১৩ সালে আইপিএল স্পট ফিক্সিং কলঙ্কের পর ভারতীয় ক্রিকেট সংস্কারে হস্তক্ষেপ করেন সুপ্রিমকোর্ট। সে কমিটির প্রধান করা হয় সাবেক বিচারপতি আরএম লোধাকে। তখন লোধা কমিটি বেশকিছু নির্দেশনা ও সুপারিশ দেয়। পরবর্তীতে বিসিসিআই সেই সুপারিশ পালন করতে অপারগতা প্রকাশ করে। পুরো বিষয়টি নিয়ে অনুরাগ ঠাকুর আইসিসির হস্তক্ষেপও চেয়েছিলেন।

তারপরই গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর হয় সর্বশেষ শুনানি। সে সময় প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুর সতর্ক করে দেন অনুরাগকে। ক্ষমা চাইতে বলেন। তারই পথ ধরে এবার ক্রিকেট থেকে নির্বাসনেই পাঠানো হলো বোর্ডপ্রধানকে।

এ রায়ের পর বিচারপতি লোধা বলেন, ‘দেখুন, বিসিসিআই কর্তাদের বোঝা উচিত ছিল শীর্ষ আদালত যখন এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে, তখন এর নির্দেশ সবাই মানতে বাধ্য। শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপের পরও বিসিসিআই এবং রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাগুলো স্বচ্ছতার পরিচয় দিতে পারেনি।’

ভারতের সাবেক বিচারপতি রঞ্জন মুদগলও এ নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, ‘বিসিসিআই ইস্যুতে সুপ্রিমকোর্টের এমন রায় যে কোনো ক্রীড়া পরিচালনা সংস্থার জন্য দারুণ শিক্ষণীয়। কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত কর্তার জন্যই ক্রিকেট পরিচালনা সংস্কারে শীর্ষ আদালতকে এমন কড়া অবস্থানে যেতে হয়েছে।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০