নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীসহ দেশের সব জেলা ও বেশ কিছু উপজেলায় চলছে আয়কর মেলা। গতকাল ছিল মেলার দ্বিতীয় দিন। এদিন সারা দেশে কর আহরণ হয়েছে ৫৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। পাশাপাশি বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের সেবাগ্রহীতা ও রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা।
দ্বিতীয় দিন গতকাল ঢাকাসহ ৫০টি জেলা ও সাতটি উপজেলায় আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর ১ থেকে ৭ নভেম্বর ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহরে সাত দিন, ৫৬টি জেলা শহরে চার দিন, তৃতীয়বারের মতো ৩৪টি উপজেলায় দুদিন এবং ৭১টি উপজেলায় এক দিনের ভ্রাম্যমাণ আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলায় সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে করসেবা দেওয়া হয়।
গতকাল মেলায় কর আহরণ হয়েছে ৫৪৩ কোটি ৩০ লাখ ৮৭ হাজার ৮৫৭ টাকা। আগের বছর একই দিনে এর পরিমাণ ছিল ৫৩৩ কোটি ৬৯ লাখ ৮৭ হাজার ৩১২ টাকা। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে এক দশমিক আট শতাংশ। এদিন মেলায় সেবাগ্রহণ করেছেন এক লাখ ৫৩ জন ২৬৭ জন করদাতা। আগের বছর যা ছিল এক লাখ ২৩ হাজার ৩৪৮ জন। আর গতকাল রিটার্ন দাখিল হয়েছে ৩৯ হাজার ৩৫১টি। আগের বছর একই দিনে এ সংখ্যা ছিল ২০ হাজার ৬৫৭টি। এক্ষত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯০ শতাংশ।
এবার করদাতাদের উৎসাহ ও স্বীকৃতি দিতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত মেলায় রিটার্ন দাখিলের সঙ্গে সঙ্গে একটি স্মার্টকার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআর। গতকাল পর্যন্ত মেলায় প্রায় ১০ হাজার করদাতাকে স্মার্টকার্ড দেওয়া হয়। এদিন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সংসদ সদস্য কাজী রোজী, বেসিস সভাপতি মোস্তফা জব্বার প্রমুখ মেলা পরিদর্শন করেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ভবিষ্যতে এনবিআরের রাজস্ব আহরণের হ্যাচারি হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন জুনাইদ আহমেদ পলক। বেলা সাড়ে ১১টায় আয়কর মেলা প্রাঙ্গণে এনবিআর ‘জাতীয় রাজস্ব আহরণে তথ্য প্রযুক্তি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, হ্যাচারিতে যেভাবে পোনা ফুটানো, মাছকে বড় করানো, তারপর বাজারে নিয়ে আসা হয়, সে রকমভাবে আইসিটি বিভাগ হ্যাচারি হিসেবে কাজ করছে। তিনি বলেন, আমরা সব সময় এনবিআরের কাছে যাই কর, শুল্ক, ভ্যাট কমানোর জন্য। এনবিআরকে আশ্বস্ত করতে চাই, এখন এনবিআর আইসিটি বিভাগে ছাড় দিয়ে যে বিনিয়োগ করছে, ৫ বা ১০ বছর পর তার শতগুণ বেশি রাজস্ব দেওয়া হবে।
পৃথক আরেকটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, আয়কর মেলার মাধ্যমে এনবিআর করদাতাদের মনোযোগ আকর্ষণ ও সচেতনতা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। আয়কর বিষয়ে আমাদের ভেতর সব সময় একটি নেতিবাচক মনোভাব কাজ করে। সরকার জনগণ থেকে যে কর নেয়, তা দেশের উন্নয়নে খরচ করে। কর দেওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি কর দিচ্ছেন। জনগণের রাজস্ব প্রদানের ফলে দেশে পদ্মা সেতুর মতো বড় উন্নয়ন হচ্ছে। করের টাকায় আরও বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে।