‘প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতন হতে হবে’

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার। কম্পিউটারে বাংলা ভাষা যুক্ত করার পথপ্রদর্শক মনে করা হয় তাকে। তৈরি করেছেন বিজয় ফন্ট ও কী-বোর্ড। সম্প্রতি বেড়ে চলছে প্রযুক্তিভিত্তিক হয়রানি। এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন হাসান সাইদুল

শেয়ার বিজ: প্রযুক্তি জগতে আসার গল্পটি শুনতে চাই

মোস্তাফা জব্বার: আসলে আইটি আমার পেশা নয়। আমি আইটিতে পড়তে গিয়ে পালিয়ে এসেছি। সাংবাদিকতা দিয়ে পেশাগত জীবন শুরু করেছিলাম। সাংবাদিকতা আমার নেশা ও পেশা হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৮৩ সালে নিজের সম্পাদিত একটা পত্রিকা বের করি। ওখান থেকেই আমার মাথায় চিন্তা এলো প্রযুক্তিখাতে কিছু করতে পারি কি না। খাতটি নিয়ে কাজ শুরু করি। এরপর ‘আনন্দ’ নামে ১৯৮৬ সালে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করি। সেটা করতে গিয়ে দেখি, এতে কম্পিউটার ব্যবহার করা যায়। ভাবলাম শুধু আমার পত্রিকা নয়, বাংলাদেশের সব পত্রিকাকে প্রযুক্তির আওতায় আনা যায়। ইচ্ছা করলে পাবলিকেশন বদলাতে পারি। এরপর শুরু করলাম ফন্ট বানানোর কাজ এবং কি-বোর্ড বানালাম। এভাবেই আমার শুরু।

শেয়ার বিজ: সাইবার ক্রাইম আসলেকীভাবে হয়?

মোস্তাফা জব্বার: প্রযুক্তির খারাপ দিকটা ব্যবহার করলেই সাইবার ক্রাইম হয়।

শেয়ার বিজ: সাইবার ক্রাইমের শিকার ব্যক্তি কার কাছে সহযোগিতা চাইবেন?মোস্তাফা জব্বার: বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এলিট ফোর্স র‌্যাব এ বিষয়ে কিছু কথাবার্তা বলে। এর বাইরে কিন্তু খুব একটা দেখি না কোন জায়গায় বা কার কাছে গেলে সহায়তা পাওয়া যাবে।

 শেয়ার বিজ: বিষয়ে আপনার পরমর্শ কী?

মোস্তাফা জব্বার: আমাদের দেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে সচেতনতা আছে। কিন্তু এটি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যে পদ্ধতিগুলো দরকার সেগুলো তারা প্রয়োগ করতে জানেন না। দেশে যারা প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, তাদের জন্য এক ধরনের কল সেন্টার গড়ে তুলতে হবে। আর যদি এমন কিছু গড়ে তোলা না যায় তবে আমরা কখনোই ভালো অবস্থায় যেতে পারব না।

শেয়ার বিজ: সাইবার অপরাধীর কেমন শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করেন?মোস্তাফা জব্বার: শাস্তি নির্ভর করে অপরাধটা কী ধরনের, তার ওপর। বিভিন্ন ধরনের অপরাধের জন্য বিভিন্ন ধরনের শাস্তির বিধান রয়েছে। ধর্ম নিয়ে অপপ্রচার করলে এক রকম শাস্তি, রাষ্ট্রদ্রোহী কোনো কাজ করলে আরেক রকম শাস্তির কথা বলা আছে।

শেয়ার বিজ: সাইবার ক্রাইম নির্মূল করা সম্ভব?

মোস্তাফা জব্বার: অপরাধ হয়তো নির্মূল করা যায় না, নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। একে আইনের আওতায় আনা যায়। আমাদের দেশে একসময় অ্যাসিড ছোড়ার প্রবণতা ছিল, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ব্যবস্থা নেওয়ায় অ্যাসিড-সন্ত্রাস কমে এসেছে। ফেসবুক কিংবা মোবাইলের খুদে বার্তার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা যে ‘অ্যাবিউস’-এর শিকার হচ্ছেন, সেই ভুক্তভোগী কোনো মেয়ে বলতে পারবেন না যে, তিনি বিব্রতকর কোনো অবস্থার শিকার হয়েছেন। কারণ আমাদের এখানে নালিশ করার জায়গা নেই।

শেয়ার বিজ: সাইবার ক্রাইমের শিকার থেকে বাঁচতে কী করতে পারে সাধারণ মানুষ?

মোস্তাফা জব্বার: সচেতন হওয়া দরকার। নিজে সচেতন না হলে আমি যে জায়গাটা ব্যবহার করি সেটা তো রক্ষা করতে পারব না। বিশেষ করে নারীরা ফেসবুকে একটা অ্যাকাউন্ট খুলে বসে থাকলেই হবে না, নিরাপত্তার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবহারে আরও সচেতন হতে হবে।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০