পলাশ শরিফ: দুই সহযোগী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধ থাকার কারণেই সর্বশেষ সমাপ্ত অর্থবছরে ‘ডরিন পাওয়ার জেনারেশন্স অ্যান্ড সিস্টেমসে’র কর-পরবর্তী মুনাফা কমেছে। একইভাবে কমেছে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ও শেয়ারপ্রতি সম্পদও (এনএভি)। তবে নতুন অর্থবছরে ওই দুই প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পর প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় ও মুনাফা বেড়েছে।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি ডরিন পাওয়ার জেনারেশনের আয় দাঁড়িয়েছে ১১৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ১০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বেশি। তবে আয় বাড়লেও আয়-ব্যয়ে সামঞ্জস্যহীনতা ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন চালু না হওয়ার কারণে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা এক বছরের ব্যবধানে ৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা কমেছে। একই সময়ে ওই কোম্পানির ইপিএস এক টাকা ৬১ পয়সা কমেছে। আর এনএভি কমেছে এক টাকা ৫৪ পয়সা। অন্যদিকে ২০১৪ সাল থেকে কোম্পানিটির মুনাফা ক্রমেই কমছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে ওই অর্থবছরেই সর্বোচ্চ ১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা মুনাফা করেছিল ডরিন পাওয়ার।
এ প্রসঙ্গে ডরিন পাওয়ারের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) আফরোজ আলম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘ডরিনের দুই সহযোগী প্রতিষ্ঠান নর্দান পাওয়ার জেনারেশন ও ঢাকা সাউদার্ন পাওয়ার জেনারেশনের উৎপাদন বন্ধ ছিল। মোট ১১০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের কারণেই কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে। ওই দুই কোম্পানি এরই মধ্যে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করেছে, যার প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আয় ও কর-পরবর্তী মুনাফা বেড়েছে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যেই কোম্পানিটি ঘুরে দাঁড়াবে। অদূর ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে।’
কোম্পানি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ সালে প্রিমিয়ামসহ ২৯ টাকা ইস্যুমূল্যে দুই কোটি শেয়ার ছেড়ে ৫৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি। ওই অর্থে কারখানার অবকাঠামো উন্নয়ন ও ঋণ পরিশোধ করার ঘোষণা উল্লেখ করেছিল কর্তৃপক্ষ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, আইপিওর অর্থব্যয়ে দুটি নতুন ইউনিটের কাজও এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ডরিনের নতুন ইউনিট চালু ও সহযোগী প্রকল্পের আয়ের ওপর ভর করে সর্বশেষ প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয়-মুনাফা বেড়েছে। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় ১২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ১৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আর ইপিএস দেখানো হয়েছে দুই টাকা ২২ পয়সা। দুই সহযোগী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন শুরুর কারণেই প্রথম প্রান্তিকে ডরিন পাওয়ারের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে কর-পরবর্তী মুনাফা, ইপিএস ও এনএভি কমলেও ওই অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রথমবারের মতো ১০ শতাংশ নগদ এবং ২০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ডরিন পাওয়ার।
উল্লেখ্য, ডরিন পাওয়ারের মোট ৯ কোটি ৬০ লাখ শেয়ারের ৭৫ শতাংশই কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে রয়েছে। বাকি শেয়ারের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে তিন দশমিক ৫৮ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২১ দশমিক ৪২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। অন্যদিকে ১৪২ কোটি ৫২ লাখ টাকা রিজার্ভের বিপরীতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি মিলিয়ে কোম্পানিটির প্রায় ১০০ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে। গতকাল ডিএসইতে ডরিন পাওয়ারের শেয়ার ১১১ টাকা ৬০ পয়সা দামে সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে।
Add Comment