সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: পাওনা পরিশোধে ব্যাংক কর্তৃক চেক প্রত্যাখ্যানের মামলায় জড়িয়ে পড়ছেন চট্টগ্রামের একাধিক ব্যবসায়ী বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি চেক প্রত্যাখ্যান হওয়ায় মামলা করা হয়েছে চট্টগ্রামের মাস্টার্ড ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে। এক কোটি আট টাকা লাখ টাকার চেক প্রত্যাখ্যাতের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে গত ৯ নভেম্বর চট্টগ্রামের একটি আদালতে মামলা করেছে প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেড। গত ৩১ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয়টি চেকে মোট এক কোটি আট লাখ ৮৪ হাজার ৪২৬ টাকার প্রিমিয়ার লিজিংকে দেওয়া চেক তহবিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় সেগুলো পাস করেনি আল-ফালাহ্ ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা।
মামলার নথি ও প্রিমিয়ার লিজিং সূত্রে জানা যায়, অ-আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেডের কাছে মাস্টার্ড ট্রেডার্স পাওনা পরিশোধে গত ৩১ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় দিনে ছয়টি ইস্টার্ন ব্যাংকের চেক প্রদান করে। চেকগুলো ৫ সেপ্টেম্বর ব্যাংক আল-ফালাহ্ উপস্থাপন করা হলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তা একই দিনে প্রত্যাখ্যাত হয়। শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাবও বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে জানানো হয় ১৪ সেপ্টেম্বর, যা মাস্টার্ড ট্রেডার্স ১৭ সেপ্টেম্বর গ্রহণ করে। এ বিষয়ে পরে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলী প্রিমিয়ার লিজিং কর্তৃপক্ষকে এ পাওনা পরিশোধে বেশ কয়েকবার কথা দিলেও এখনও কোনো পাওনা পরিশোধ করেনি। ফলে প্রত্যাখ্যাত ছয়টি চেকের পাওনা আদায়ে গত ৯ নভেম্বর প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেডের অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শাজামান
বাদী হয়ে মামলা করেন চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম শফি উদ্দিনের আদালতে। এছাড়া চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির মোট অনাদায় পাওনা দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৩০ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮৩ টাকা, যা খেলাপি ঋণে পরিণত হয়। প্রতিষ্ঠানটির কাছে এ পাওনা পরিশোধে একাধিকবার তাগাদা দেওয়া হলেও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপক শফিউল করিম মজুমদার শেয়ার বিজকে বলেন, ‘ইমাম বাটনের এমডি মোহাম্মদ আলীর মালিকাধীন ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান মাস্টার্ড ট্রেডিংয়ের দেওয়া ছয় চেকই প্রত্যাখ্যান করে আল-ফালাহ্ ব্যাংক। ফলে সম্প্রতি আমরা মামলা করেছি। এছাড়া চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পাওনা দাঁড়িয়েছে মোট ৯ কোটি ৩০ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮৩ টাকা। এ গ্রাহকের হিসাব বর্তমানে খেলাপি হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে এ পাওনা পরিশোধে একাধিকবার তাগাদা দেওয়া হলেও তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু প্রতিবারে পাওনা পরিশোধ করার কথা দিয়ে যাচ্ছেন।’
এ প্রসঙ্গে ইমাম বাটনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মাস্টার্ড ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোহম্মদ আলীর সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ফলে মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান ইমাম বাটনের ব্যবস্থাপনা পরিচালকও।