শেয়ার বিজ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ধরে রাখতে অপরিশোধিত তেলের উত্তোলন হ্রাস চুক্তির মেয়াদ আরও ৯ মাসের জন্য বাড়াতে সম্মত হয়েছে অরগানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ (ওপেক) ও অপেক-বহির্ভূত অন্য প্রধান উত্তোলক দেশগুলো। গত বৃহস্পতিবার অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ওপেকের সম্মেলনে দেশগুলোর নেতারা এ সিদ্ধান্ত নেন। আর এ সিদ্ধান্তে গতকাল শুক্রবার পণ্যটির দাম কিছুটা বেড়ে যায়। খবর রয়টার্স।
২০১৪ সালের শেষ সময় থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দরপতন শুরু হয়। ক্রমাগত দরপতন ঠেকাতে ওপেকভুক্ত দেশগুলো পণ্যটির সম্মিলিত উত্তোলন কমিয়ে আনতে চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, স্বাক্ষরকারী দেশগুলো চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ছয় মাসের জন্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সম্মিলিত দৈনিক উৎপাদন ১৮ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেয়। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের মজুদ পাঁচ বছরের গড়ের সমপর্যায়ে আসবে বলেও আশা করা হয়। রাশিয়াসহ ওপেকবহির্ভূত ১০টি দেশ এ চুক্তি মেনে পণ্যটির উত্তোলন কমাতে রাজি হয়।
তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চুক্তির শর্ত বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে এর মেয়াদ আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় বৃহস্পতিবারের ওপেক সভায় আবারও নয় মাসের জন্য, অর্থাৎ ২০১৮ সালের শেষ সময় পর্যন্ত উত্তোলন হ্রাস চুক্তি মেয়াদ বাড়ানো হলো।
আর এ খবরে গতকাল আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দামে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে গতকাল ব্যারেলপ্রতি জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ১৮ সেন্ট বা দশমিক তিন শতাংশ। সবশেষ লেনদেনে এ বাজারে পণ্যটির দাম ব্যারেলে বিক্রি হয় ৫৭ ডলার ৫৮ সেন্টে।
অন্যদিকে লন্ডন ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে (আইসিই) ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে ব্যারেলপ্রতি দাম বেড়েছে ২৪ সেন্ট। এদিন বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেল বিক্রি হয়েছে ৬২ ডলার ৮৭ সেন্টে।
উত্তোলন হ্রাসসংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সরাসরি প্রতিশ্রুতির জের ধরে গত মাসের শুরু থেকেই তেলের বাজার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি বাজার নিয়ন্ত্রণে ওপেকসহ অন্য প্রধান উৎপাদকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। সরবরাহের চাপে দামের পতন ঠেকাতে এ দেশগুলো উৎপাদন হ্রাসের মাধ্যমে বাজার চাঙা রাখার চেষ্টা করে আসছে। ওপেক সদস্যদেশ ও রাশিয়া একত্রে ৪০ শতাংশ তেল উত্তোলন করে।
দুবাইভিত্তিক এমিরেটস এনবিডি ব্যাংকের বিশেষজ্ঞ এডওয়ার্ড বেল বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বেড়ে ২০১৫ সালের পর সর্বোচ্চে পৌঁছে গেছে। এর মাধ্যমে দেশটি ওপেকসহ অন্য উৎপাদকদের চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এ সময়ে এসে উত্তোলন হ্রাস চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি ইতিবাচকই হবে।
