ইরাকে বড় বিনিয়োগে চীন পিছিয়ে পশ্চিমারা

শেয়ার বিজ ডেস্ক : ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ইরানের পারমাণবিক চুক্তি থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরে আসার ঘোষণা দেওয়ায় নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। এ কারণে দেশটিতে তারা কোনো বিনিয়োগ করছে না। এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে চীন। দেশটি ইরানে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে বিনিয়োগে পশ্চিমা দেশগুলোর এখনই পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। ইরান পারমাণবিক  নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত হওয়ার পর চীন দেশটিতে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। তারা হাসপাতাল থেকে শুরু করে রেলওয়ে নির্মাণে বিনিয়োগ করছে। সম্প্রতি চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান সিআটিআইসি দেশটির সঙ্গে এক হাজার কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করেছে। আর চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক আরও এক হাজার ৫০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

সম্প্রতি ইতালির রাজধানী রোমে দুই দেশের এক বিনিয়োগ বৈঠকে এসব তথ্য তুলে ধরেন ইরানি ব্যবসায়ীরা। বৈঠকে ইরানের চেম্বার অব কমার্সের বিনিয়োগ কমিশনের প্রধান ফেরিয়াল মোস্তফি ইরানে বিনিয়োগের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোকে আহ্বান জানান। অন্যথায় চীন সব দখল করে নেবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।

এদিকে ইরান বলছে, বেইজিংয়ের ১২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ চুক্তির আওতায় ইরানের বন্দর, সড়ক, রেলওয়ে, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য চীন এ অর্থ বিনিয়োগ করছে। ইউরোপ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সহজ করার লক্ষ্যে এ ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ চুক্তি করা হচ্ছে। আর ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ ঋণচুক্তি প্রাথমিকভাবে ইউরো ও চীনের মুদ্রা ইউয়ানের মধ্যে বর্ধিত করা হবে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানায়, চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এক হাজার ৫০০ কোটি ডলারের সমঝেতা চুক্তি সই করেছে।

আট কোটি জনগোষ্ঠীর দেশ ইরানের এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কায় বিদেশি বিনিয়োগকারী বিশেষ করে পশ্চিমারা তাদের প্রকল্পগুলোর সুরক্ষার নিশ্চয়তা চাচ্ছে। যাতে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়লেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আর এ কারণে ইরান ও ইতালির সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদারত্বও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বছর তেহরানে ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজি ইরান ও ইতালির মধ্যে বাণিজ্য আবার সচল করার ঘোষণা দিলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। এ ঘোষণায় ইরানকে ৪০০ কোটি ইউরো ঋণ দিতে চেয়েছিল ইতালি। আর এখন নতুন করে তা হওয়ার তেমন কোনো সম্ভাবনাও নেই বলে জানিয়েছেন একজন ইতালিয়ান কর্মকর্তা।

কিছু ইউরোপিয়ান ব্যাংক সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়িয়েছে। এর মধ্যে অস্ট্রিয়ার ওবার ব্যাংক গত সেপ্টেম্বরে ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেছে।  চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক গত আগস্টে ইরানের সঙ্গে ৮০০ কোটি টাকার ঋণচুক্তি করেছে। তবে এসব চুক্তির অঙ্ক চীনের আশপাশেও নেই।

এ বিষয়ে ইতালিয়ান থিঙ্কট্যাংক ইউরোপিয়ান হাউজ আমব্রোসেটির প্রধান ভালেরিও ডি মোলি বলেন, ‘ইরানের সামগ্রিক বাণিজ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি অর্থ বিনিয়োগ করেছে চীন। তাই এখনই কিছু করতে হবে। নয়তো বহুল প্রত্যাশিত সুযোগ হারিয়ে যাবে।

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০