শামসুন নাহার: পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে ধীরুভাই তৃতীয়। ছেলেবেলা থেকেই ধীরু লক্ষ করেছে, দারিদ্র্য তাদের পরিবারকে বৃহত্তর বানিয়া গোত্র থেকে আলাদা করতে পারেনি মোটেই। এ বংশের মধ্যে একটা ঐক্য ছিল চোখে পড়ার মতো। বংশের অবস্থাপন্ন আত্মীয়স্বজন প্রায়ই বনভোজন বা দাওয়াত-আতিথ্যের আয়োজন করত। তখন জড়ো হতো সবাই। বাদ পড়ত না আম্বানি পরিবারও। তাই হীরাচাঁদ শিক্ষক হলেও ধীরুরা ক’ভাই ছেলেবেলা থেকে ব্যবসায়িক আবহেই বেড়ে উঠেছে। বানিয়া গোত্রের শাহদের সঙ্গেও ধীরুদের বেশ সখ্য ছিল। শাহরা তো তত দিনে ফুলে-ফেঁপে বিরাট ব্যবসায়ী। একসময় ভারতে ব্রিটিশ বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু ছিল কলকাতা। তখনকার দিনে শাহরা অনেক উন্নতি করেছিল। তাদের অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি-পাতিল তৈরির কারখানাই ভারতীয় মালিকানায় গড়া প্রথম কারখানা।
চোরবাদে শাহদের দুটো বাড়ি ছিল শান্তি সদন ও আনন্দ ভবন। আকারে বিশাল এ বাড়ি দুটো খাঁটি ভারতীয় স্থাপত্য ও ঐতিহ্য বহন করে। এ বাড়ির ছেলেদের হাতেকলমে ব্যবসায়ের পাঠ দেওয়া হতো। সঙ্গে ঘোড়ায় চড়া, সাঁতার প্রভৃতি খেলাধুলারও চর্চা করানো হতো। প্রতিদিন বাগানে চড়তে থাকা বিশ-ত্রিশটি গরু-মহিষের দুধ দোহানোর নিয়মও ছিল। এ রকম কঠোর নিয়মনীতির মধ্যে গড়ে তোলা হতো সে বাড়ির ছেলেদের। কাঠিয়াবার অঞ্চলে শাহরা ছিলেন মহাত্মা গান্ধীর অন্যতম প্রথম অনুসারী। কলকাতায় গিয়ে গান্ধীজি প্রায়ই শাহদের বাড়িতে উঠতেন। শাহবাড়ির একজন মুরব্বি তো রীতিমতো ব্যবসা-বাণিজ্যে ইস্তফা দিয়ে চোরবাদে গান্ধীবাদী আদর্শের প্রচার করতে লাগলেন। তিনি প্রাক্তন লোকসভা সদস্য ও শিল্পপতি বীরেন শাহর জেঠা। হরিজনদের (হিন্দু সমাজে অচ্ছুত হিসেবে বিবেচিত) জীবনমান উন্নয়নে কাজ করেছিলেন তিনি। যুবকদের জন্য ব্যায়ামাগারও গড়েছিলেন নিজের পয়সায়। প্রায়ই তাকে দেখা যেত অল্পবয়সী তরুণদের নিয়ে গাঁয়ের কুয়ো গভীর করাচ্ছেন, নয়তো দলবল নিয়ে সাগরপাড়ের পাথর দিয়ে রাস্তা মেরামত করছেন। সে যুগেও ছুত-অচ্ছুতের বালাই নিজে তো মানতেনই না, সাঙ্গপাঙ্গদেরও উদ্বুদ্ধ করতেন অহিংস নীতিতে। নিয়মিত যাতায়াতের কারণে ধীরু এসব দেখেছে খুব কাছ থেকে।
বীরেন শাহর আরেক জেঠা তরুণদের জ্ঞানচর্চায় আগ্রহী করার জন্য ব্রতী হয়েছিলেন। ধীরু প্রায়ই আনন্দ ভবনের লাইব্রেরি থেকে বই এনে পড়ত। একটু একটু করে তখন থেকেই দেশ ও জাতি ভাবনা তার কাছে একটি বিশেষ অর্থ নিয়ে হাজির হয়। সে বেশ কাছ থেকে দেখেছে গান্ধীর মতবাদ প্রচারে শাহদের মতো ব্যবসায়ী পরিবার দু’হাত খুলে সাহায্য করেছে। স্বাধীন ভারত ও স্বনির্ভর অর্থনীতির স্বপ্ন তারা তরুণ-যুবসমাজের মধ্যেও সঞ্চারিত করতে পেরেছিল।
ভগবানের কৃপায় টানাটানির সংসারে হীরাচাঁদের সবক’টা ছেলেমেয়েই ধীরস্থির। বড় মেয়ে ত্রিলোচনাবেন সাক্ষাৎ লক্ষ্মী যেন। সারাদিন জমেনাবেনের পিছু পিছু ঘুরে সব কাজে মাকে সাহায্য করেন তিনি। মাথায় করে তিন ঘড়া পানি বয়ে আনতে পারেন একাই। অবসরে গাঁয়ের মেয়ে-বউদের সঙ্গে মিলে নকশি ঘাঘরা-দোপাট্টায় জরি-চুমকি বসান। বড় ছেলে রামানিকও খুব শান্ত স্বভাবের। পড়ালেখার ফাঁকে গরুগুলোর দেখভাল করেন। দুধ বিক্রি করতে বাজারে যান রোজ। ছোট দুটি ছেলেমেয়ে জাসুবেন আর নাতুভাই। খাওয়া-পরা নিয়ে বায়না করে না কেউই। করার উপায়ও নেই। জমেনাবেন সাফ বলে দিয়েছেন, ‘জ্বালাতন করবে না, বাপু। হাতে পয়সা এলে দেবো খন, না এলে নাই। আর খুব দরকার হলে কামাই করে আনো গে, যাও। আমি আর পারি না।’ এ কথার পর জমেনার ছেলেমেয়েরা একেবারে দমে যেত, জ্বালাতন করত না আর। চোখের সামনেই তো দেখতে পেত সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনি খেটেও দু’বেলা খাবার পাতে তুলে দিতেই তার প্রাণ যায় যায়। কেবল মেজ ছেলে ধীরুটা বড্ড খামখেয়ালি। তাকে বোঝানো মুশকিল। খাবারটা তার একটু বেশিই চাই, কাপড়টাও চাই ভালো।
তবে জমেনার এ ছেলেটা অন্যদের চেয়ে একেবারেই আলাদা। সারাদিন তার খোঁজ থাকে না। আবার কিছু করতে গেলে সবচেয়ে কঠিন কাজটিই নিজের ভাগে নিয়ে নেয়। ধীরু দেখতে যেমন হৃষ্টপুষ্ট, গায়ে শক্তিও অসীম। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে মাঝারি একটা পিপুল গাছ কেটে চেলা কাঠ বানিয়ে দিতে পারে অনায়াসেই। পড়তে বসতে চায় না, আবার আনন্দ ভবনের লাইব্রেরিতে গিয়ে পড়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ধীরুকে নিয়ে চিন্তার শেষ নেই জমেনার। আজ এ-গাঁয়ে কুস্তি খেলা, তো কাল ও-গাঁয়ে কাবাডি। গ্রামভর্তি ইয়ার বন্ধুর তো অভাব নেই। তবু দস্যিপনা এ ছেলেটিকেই বেশি ভালোবাসেন হীরাচাঁদ। খেতে বসে নিজের পাতের সন্দেশটুকু তুলে দেন ধীরুর পাতে। ধীরুর প্রাইমারি স্কুলের পাঠ শেষ হলো। হীরাচাঁদ পড়লেন চিন্তায়। শিক্ষক হীরাচাঁদ দিব্যি বুঝেছিলেন, স্কুলের লেখাপড়ায় ধীরুর মন নেই, তবে মাথা আছে। ভালো স্কুলে দিতে পারলে দশটা ক্লাস একটানে উতরে যেত। সন্ধ্যাবেলা হুঁকো টানতে টানতে ঠিক করলেন, শাহবাড়ির ছোট সাহেবের সঙ্গে একটু আলাপ করতে হবে। ভালো কোনো স্কুলে ধীরুর যদি একটা ব্যবস্থা হয়!
ছোট শাহকে বলে লাভ হলো। মোধ বানিয়া গোত্রের মধ্যে শিক্ষক হিসেবে হীরাচাঁদ বিশেষ সম্মান পেতেন। তার ব্যবসায়ী আত্মীয়রা স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছে যেমন, দানে-ধ্যানেও কিছুতে কম নয়। ধীরুর বন্দোবস্ত হলো জেলা শহর জুনাগড়ের বাহাদুর খানজি হাইস্কুলে। স্কুলটি ১৯০২ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তৎকালীন নবাব বাহাদুর খানজি। সৌভাগ্যক্রমে ধীরু বিনা খরচে পড়ার সুযোগ পেয়ে যায়। থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও হয় মোধ বেনেদের অর্থায়নে চালিত বোর্ডিং হাউজে। অতঃপর শুরু হলো তার ঘর থেকে দূরে থাকা। বোর্ডিং হাউজের জীবন বনাম অশান্ত কৈশোর কাল।
১৯৪৫ সাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরে গান্ধী তত দিনে গুজরাটের প্রাণকেন্দ্র আহমেদাবাদে আশ্রম খুলে বসেছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ রাজশক্তিকে ভারতীয় সেনা সরবরাহ করেছিলেন তিনি। চারদিকে ছিঃ ছিঃ পড়ে গিয়েছিল। একজন পরাধীন ভারতীয় হয়ে কী করে একটি স্বাধীনতাকামী জাতি দমনে ব্রিটিশরাজকে সাহায্য করেন! তবে এবার অবশ্য পরিস্থিতি ভিন্ন। এখন তিনি অহিংস নীতি প্রচার করেন। গান্ধীর সমর্থন পায়নি ইংল্যান্ড। বরং মুক্তি পেতে চায় ভারতবর্ষও। প্রায় ২০০ বছর ধরে উপমহাদেশটির অর্থনীতিতে ভারতবাসীর অধিকারকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এ থেকেই সব বঞ্চনার উৎপত্তি, ঠিক বুঝেছিলেন গান্ধী। ১৯৩০ সালে সল্ট মার্চের নেতৃত্ব দিলেন তিনি। লবণের মনোপলির বিরুদ্ধে এই আন্দোলনটি ছিল ব্রিটিশ শাসকদের জন্য প্রথম বড় ধাক্কা। স্বরাজ শাসনের দাবি ১৯৪৫ সাল নাগাদ ‘ব্রিটিশ খেদাও’ আন্দোলনে পরিণত হলো। রাজশক্তিও বুঝেছিল, এ মুলুকে তাদের দিন এবার ফুরাল।
সল্ট মার্চ ছাড়াও আহমেদাবাদের আশ্রমে অবস্থান নিয়ে অনেকগুলো আন্দোলন পরিচালনা করেছেন গান্ধী। হিন্দু ব্যবসায়ী বর্ণের শিল্পপতিরা সর্বতোভাবে সমর্থন করেছেন তাকে। এ আন্দোলনে অবশ্য তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ ছিল। ব্রিটিশ খেদানো সম্ভব হলে গুটিকয়েক ভারতীয় ব্যবসায়ী পরিবারের হাতেই পড়বে সম্ভাবনাময়ী ভারতবর্ষ। জওহরলাল নেহরুর ধর্মনিরপেক্ষ কংগ্রেস পার্টিও স্বাধীনতা চেয়েছিল। তিনি কিন্তু একজন নেতা হিসেবে ব্যবসায়ী সমাজের সমর্থন ততটা পাননি। এর একটি মনস্তাত্ত্বিক কারণ হতে পারে, গান্ধী ভারতের হিন্দু ব্যবসায়ী বর্ণেরই সন্তান। বানিয়া বংশের একই জীবনাচরণ ও আদর্শ ধারণ করেন তিনি। অন্যদিকে নেহরুর আধুনিক বাম ঘরানার সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি বণিকদের সঙ্গে খাপ খায় না। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসই শিক্ষিত ভারতীয়দের চিন্তাভাবনাকে প্রতিফলিত করেছিল। সারা বিশ্বের অন্যান্য অংশের মতো ভারতেও কেন্দ্রীয় অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ ও সম্পদের বণ্টনই অর্থনৈতিক মুক্তির মূল সুর হিসেবে অনুরণিত হতে থাকে। তাই গান্ধী কংগ্রেসের নেতা হয়েও দলের বাইরে বিশেষ নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। আর এ নীতিই তাকে ভারতের ব্যবসায়ী সমাজের সমর্থন জুগিয়েছিল।
গান্ধীর অন্যতম সমর্থক ও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন কলকাতার মাড়োয়ারি পাটকল মালিক জিডি বিড়লা। আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ছিলেন বল্লভভাই প্যাটেল ওরফে সরদার প্যাটেল। স্বাধীনতার পরে তিনি ছিলেন ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী। পেশায় ব্যারিস্টার কংগ্রেসের এই শীর্ষনেতা গুজরাটের বিভিন্ন গ্রামে ব্রিটিশবিরোধী দল গড়ে তুলেছিলেন।
গান্ধী ও সরদার প্যাটেলের ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আদর্শ জুনাগড়ের সর্বস্তরের মানুষ বিশেষ করে তরুণ-যুবক শ্রেণিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল। তাৎক্ষণিকভাবে বাধা এসেছিল জুনাগড়ের নবাবের পক্ষ থেকে। নবাব শঙ্কিত ছিলেন। রীতিমতো ব্রিটিশ পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর সহায়তায় স্বাধীনতা আন্দোলনকারীদের পাকড়াও করতে শুরু করলেন। চল্লিশের দশকজুড়েই জুনাগড়ে এই ধরপাকড় চলেছিল।
হাইস্কুলে ভর্তির অল্পদিনের মধ্যেই কৃষ্ণকান্ত বাখারিয়া নামে এক তরুণের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় ধীরুর। ধীরুর দুই ক্লাস ওপরে পড়ে বাখারিয়া। বয়সে বড় হলেও চিন্তা-ভাবনায় তাদের বেশ মিল। মোধ বোর্ডিংয়ের অন্য অনেক ছেলের মতো তারাও স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি বাখারিয়ার অনুপ্রেরণায় হাইস্কুলে ভর্তির এক বছরের মাথায় জুনাগড় বিদ্যার্থী সংঘে যোগ দেয় ধীরু। কিশোরদের এ সংঘের মূল লক্ষ্য ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নেওয়া ও গান্ধীর স্বদেশি আন্দোলনকে কার্যকর করায় সক্রিয় ভূমিকা রাখা। বই পড়ার আগ্রহ ধীরুর আগে থেকেই ছিল। জুনাগড় বিদ্যার্থী সংঘে যোগ দেওয়ার এ অভ্যাস আরও উৎসাহ পেয়েছে। সংঘের সদস্যরা একসঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের বক্তৃতা শুনতে যেত, বিখ্যাত লেখকদের বই পড়ত এবং তা নিয়ে আলোচনা করত। ধীরু যেখানে থাকত অর্থাৎ মোধ বোর্ডিং হাউজটি ধীরে ধীরে জুনাগড়ে ছাত্র আন্দোলনের হেডকোয়ার্টারে পরিণত হলো।
গান্ধীর স্বদেশি আন্দোলনের মূল কথা ছিল গ্রামীণ কুটির শিল্পকে রক্ষার জন্য আমদানিকৃত বিদেশি পণ্য বর্জন করতে হবে। গান্ধী নিজেও চরকা ঘুরিয়ে খাদি কাপড় বুনে নিতেন। বাবুজির (মহাত্মা গান্ধী) অনুসারী হিসেবে বিদ্যার্থী সংঘের ছেলেরাও বিদেশি কাপড় বাদ দিয়ে খাদি পরা শুরু করল। তাদের কর্মসূচির মধ্যে আরও ছিল নিয়মিত ভারতের প্রস্তাবিত পতাকাকে অভিবাদন (স্যালুট) জানানো ও অন্য ছাত্রদের স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় হতে উজ্জীবিত করা। বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বাখারিয়ার দক্ষতা বেশ ভালো। তাকে সংঘের প্রেসিডেন্ট করা হলো, ধীরুভাই ও প্রফুল্ল নানাভাতি নামে তার আরেক সহপাঠীকে করা হলো সংঘের সেক্রেটারি। পুরোদমে চলছিল সংঘের কর্মকাণ্ড।
কিন্তু ভারতের পতাকা ওড়ানোটা তখন সোজা কাজ নয়। এমনকি জুনাগড়ে ‘জয় হিন্দ’ বা ‘বন্দে মাতেরম’ উচ্চারণ করায়ও ঝুঁকি অনেক। পুলিশের ভয় আছে, আছে নবাবের টিকটিকি বাহিনীর নজরদারি। ধীরু বললেন, ‘অ্যাসেম্বলি নিয়ে ভাবতে হবে না, ব্যবস্থা হয়ে যাবে।’ সাদা-সবুজের মধ্যে জাফরানি রঙের আয়তক্ষেত্রের ওপর গরুর গাড়ির চাকা আঁকা পতাকাটি পরদিনই সে জোগাড় করে ফেলে। ধীরুর ব্যবস্থাপনায় সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে পতাকাকে নিয়মিত সম্মান প্রদর্শন শুরু হয়। অ্যাসেম্বলির সুবিধাজনক স্থান নির্বাচন করে সবাইকে জানিয়েও দেয় সে। এভাবেই চলছিল। কিন্তু আন্দোলন চালাতে হলে পয়সাকড়িও দরকার হয়। সংঘের ছেলেরা তাই স্পনসরের (পৃষ্ঠপোষক) আশায় এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে প্রচারপত্র বিলি শুরু করল। এতে দেশপ্রেমমূলক কবিতার চরণ, সঙ্গে গান্ধীর ছবি আঁকা। তবু কারও মন গলল না, নবাবের গোয়েন্দার ভয়ে স্পনসর হতে রাজি হয়নি কেউ। সংঘের ছেলেরা একটু দমে গেলেও হতাশ হলো না। বরং সবাই মিলে এবার এক দুর্দান্ত আইডিয়া বের করে ফেলল।