শেয়ার বিজ ডেস্ক: উপমহাদেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন রাহুল গান্ধী। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি এ পদে নির্বাচিত হন গতকাল সোমবার। ফলে ১৯ বছর পর উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী এ দলটি নতুন সভাপতি পেল।
গতকাল সোমবার ছিল কংগ্রেসের সভাপতি পদের নির্বাচনে নাম প্রত্যাহারের শেষ দিন। একমাত্র রাহুল গান্ধীই সভাপতি পদে মনোনয়ন পেশ করেছিলেন। সেজন্য এদিন কংগ্রেসের নির্বাচনী কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে রাহুলের বিজয়ের কথা জানায়।
কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মুল্লাপাল্লি রামচন্দ্রন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
এর আগে গত ১৯ বছর ধরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাহুল গান্ধীর মা সোনিয়া গান্ধীই দলের সভাপতি ছিলেন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর একের পর এক রাজ্যে ক্ষমতা হারিয়েছে কংগ্রেস। ৫৪৩ আসনের লোকসভায় এ ১৩২ বছরের দলটির সদস্য এখন মাত্র ৪৪। এখন রাহুলের নেতৃত্বে ভরসা রেখে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে দলটি। তাই গুজরাট রাজ্যে নির্বাচনের আগে রাহুলের রাজনৈতিক শক্তি আরও বাড়াতে চেয়েছিল কংগ্রেস। সে হিসেবে দলের সভাপতি পদে রাহুলের অভিষেকের পথ প্রশস্ত করতে গত মাসেই ওয়ার্কিং কমিটির বিশেষ বৈঠক ডেকেছিলেন সোনিয়া। পরে সভাপতি পদের নির্বাচনের জন্য গত ১ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
সেখানে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৪ ডিসেম্বর। কিন্তু রাহুল ছাড়া আর কেউ মনোনয়নপত্র জমা দেননি। রাহুল গান্ধী দিল্লির আকবর রোডে দলীয় কার্যালয়ে ৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর আগে রাহুলকে দলের সভাপতি করতে কংগ্রেসের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের পক্ষ থেকে মোট ৮৯টি প্রস্তাব আসে। দলীয় সূত্র বলেছে, ৪৭ বছর বয়সী রাহুল গতকাল প্রথমে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর তিনি দলের কার্যালয়ে যান।
প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল আজ। পূর্ব ঘোষণা ছিল, প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে সোমবার বিকাল ৪টায়। কিন্তু আর কেউ প্রার্থী না হওয়ায় এদিন সভাপতি হিসেবে রাহুলের নাম ঘোষণা করল এআইসিসি। কংগ্রেস সূত্রে জানানো হয়, আগামী ১৬ তারিখ সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার নেবেন তিনি।
উল্লেখ্য, সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের সদস্য হয়েছিলেন ১৯৯৭ সালে। পরের বছর ১৯৯৮-এর এপ্রিলে সীতারাম কেশরীকে সরিয়ে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি সোনিয়াকে সভাপতি মনোনীত করে। এর পর থেকে তিনিই দলের সভাপতি পদে ছিলেন। মাঝে ২০০০ সালে সভাপতি পদের জন্য কংগ্রেসে একবারই নির্বাচন হয়। সেবার সোনিয়ার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন জীতেন্দ্রপ্রসাদ। কিন্তু জীতেন্দ্রপ্রসাদকে হারিয়ে ফের সভাপতি পদে নির্বাচিত হন সোনিয়া।
পরে অবশ্য দলে গান্ধী পরিবারের ধারাবাহিকতা রাখতে রাহুল গান্ধীও দলের শীর্ষ পদে আসেন। ২০১৩ সালে দলের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন রাহুল। এবার শীর্ষপদ পেলেন ৪৭ বছরের এ রাজনীতিক। ১৩২ বছরের পুরোনো কংগ্রেস দলে নেহরু-গান্ধী পরিবারের ষষ্ঠবারের মতো কেউ সভাপতি হলেন।
