শেয়ার বিজ ডেস্কধ: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংককেই দায়ী করেছে ফিলিপাইনের ব্যাংক রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি)। তাদের অভিযোগ, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় নিজেদের গাফিলতির দায় এড়াতে তথ্য গোপন করে বাংলাদেশ ব্যাংক এখন আরসিবিসিকে ‘বলির পাঁঠা’ বানাতে চাইছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রিজালের বিরুদ্ধে মামলা করার উদ্যোগ এবং অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল মঙ্গলবার ম্যানিলাভিত্তিক ওই ব্যাংকের এ বক্তব্য তুলে ধরেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন রিজাল ব্যাংককে পৃথিবীছাড়া করতে চাই। এ মন্তব্যের জবাবে এ বিবৃতি দেয় আরসিবিসি। রিজাল ব্যাংকের হেড অব লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স জর্জ ডেলা কুয়েস্তা বিবৃতিতে বলেন, আইনত যেসব তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব, তার সবই ফিলিপাইনের সিনেট এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দিয়েছে আরসিবিসি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক সম্ভব সব কিছুই লুকিয়েছে।
ব্যাংক খাতে হ্যাকিংয়ের সবচেয়ে বড় এ ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার যে তদন্ত করেছিল, তার প্রতিবেদন দেখতে চেয়েছিল ফিলিপাইন সরকার। কিন্তু অর্থমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, ফিলিপাইন চাইলেও ওই প্রতিবেদন তাদের দেওয়া হবে না।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিউইয়র্ক ফেড অ্যাকাউন্ট থেকে আট কোটি দশ লাখ ডলার চুরি করে হ্যাকাররা। সুইফট সিস্টেমের মাধ্যমে ভুয়া আদেশে এ অর্থ চুরি করা হয়। এ চুরির অর্থ ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোশেনে (আরসিবিসি) পাঠানো হয়। সেখান থেকে তা দেশটির ক্যাসিনোগুলোতে চলে যায়।
রিজার্ভ চুরির প্রায় দুই বছর হতে চললেও বিশ্বের বৃহত্তম হ্যাকিংয়ের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারেনি বাংলাদেশ। আর উদ্ধার করা হয়েছে মাত্র দেড় কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক ও আর্থিক লেনদেনের বার্তা আদান-প্রদানকারী আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সুইফটের সঙ্গে আলোচনা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জানা গেছে, প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থ উদ্ধারের জন্য আগামী মার্চ-এপ্রিল নাগাদ ওই দেওয়ানি মামলাটি করা হবে নিউইয়র্কে। ফেডারেল রিজার্ভ ও সুইফট কর্তৃপক্ষ এ মামলায় বাদী হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ও সুইফট আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি।