সাইদ সবুজ, চট্টগ্রাম: সাম্প্রতিক সময়ে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে বেশ কয়েকবার ইঞ্জিন বিকল, যান্ত্রিক ত্রুটি ও দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব কারণে ট্রেনের শিডিউল ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বিলম্ব হচ্ছে ট্রেনযাত্রা। এতে যাত্রীদের ভ্রমণে বিঘ্ন ঘটছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি রেলওয়ের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হচ্ছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে ইঞ্জিন বিকল, যান্ত্রিক ত্রুটি ও দুর্ঘটনা ঘটেছে ছয়টি। এতে কর্মঘণ্টা অপচয় ও বিপুল পরিমাণে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর (শনিবার) বিদ্যাগঞ্জ স্টেশনে লুপ লাইনে প্রবেশকালে স্টেশনে ৯৯১ নং ট্রেনটির দাঁড়ানোর কথা। কিন্তু ট্রেনটি সিগন্যাল অমান্য করে অগ্রসর হয় সামনের দিকে। এর ফলে ট্র্যাপ পয়েন্টের ওপর ওই ট্রেনের ইঞ্জিনসহ তিনটি ফার্নেস অয়েলের ট্যাংকার লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ওই সেকশনের আন্তঃনগর, কমিউটার, লোকাল ট্রেনের বিলম্বসহ বিভিন্ন ট্রেনের যাত্রা বাতিল করতে হয়।
একই সপ্তাহে দুটি যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা ঘটে। শনিবার ৭৪১ নং ট্রেনটি ফেনী, ফেনী- লাকসাম এবং লাকসাম স্টেশনে ব্রেক বাইন্ডিংজনিত কারণে দেড় ঘণ্টা বিলম্ব ঘটায়। এর ফলে কানেক্টিং রেক হিসেবে এক ঘণ্টা বিলম্বে ৭০৪ নং ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে আসে। এরপর গত ১২ ডিসেম্বর ৭০১নং ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে চার কিলোমিটার দূরত্বে গিয়ে পাহাড়তলী স্টেশনে পৌঁছায়। এর পর ওই ট্রেনের কোচ নং ডব্লিউজেসিসি-৬৫০৪ হট এক্সেল হওয়ায় পাহাড়তলী স্টেশনে ট্রেন ব্যাক করে এবং ওই কোচ বিয়োজন ও নতুন কোচ সংযোজন করার কারণে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যেতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিলম্ব হয়।
এছাড়া গত এক সপ্তাহে তিনটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে নির্ধারিত সময়ে ছাড়া সম্ভব হয়নি। গত ৯ তারিখে পৃথক স্থানে দুটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। প্রথমটি ৭১৯নং ট্রেন ইঞ্জিন নং ২৯২৬ শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশনে বিকল হয়ে যায়। এতে ট্রেনটি ছাড়তে নির্ধারিত সময় থেকে দুই ঘণ্টা বিলম্ব হয়। একই দিন নরসিংদী স্টেশনে ৭২১নং ট্রেন ইঞ্জিন নং ২৯২২ বিকল হয়ে যায়। এতে ওই ট্রেনটি স্টেশন ছাড়তে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা বিলম্ব করে। এর পর ১০ ডিসেম্বর ২৫২নং ট্রেনটি পিয়ারপুর স্টেশনে বিকল হওয়ার কারণে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা বিলম্ব করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের একাধিক সূত্র জানায়, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের গাফিলতির কারণে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগ একটু তৎপর হলে এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়ানো যেত বলে সূত্রগুলো মনে করে। তবে রেলওয়ের বাণিজ্য বিভাগ মনে করে, বিভিন্ন সেকশনে দুর্ঘটনা, ইঞ্জিন বিকল ও অন্যান্য যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত করণে ট্রেনের সময়ানুবর্তিতার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এর ফলে প্রতি ট্রেনে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে লাখ লাখ টাকা।