রাষ্ট্রায়ত্ত তিন ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত বছরের ২৩ আগস্ট ঘোষিত এক বিজ্ঞপ্তির আলোকে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা, সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে ১২ জানুয়ারি অন্য পাঁচ ব্যাংকের পরীক্ষা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল রোববার এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এর ফলে ১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আট ব্যাংকের মধ্যে ওই তিন ব্যাংকের পরীক্ষা স্থগিত থাকবে।

উল্লেখ্য, বগুড়ার আসাদুজ্জামান, কুমিল্লার আবু বকরসহ ২৮জন পরীক্ষার্থী নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রাশিদুল হক খোকন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট তানজিম আল ইসলাম ও মির্জা সুলতান আল রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাতার হোসেন সাজু।

পরে রাশেদুল হক খোকন গণমাধ্যমকে জানান, গত বছরের তিনটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আওতায় সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের যে নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিলÑসে বিষয়ে আদালত এ নির্দেশনা দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যসচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জনতা, সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। তবে অন্য ব্যাংকের পরীক্ষা হবে। তিনি বলেন, ‘যে তিনটি ব্যাংকের পরীক্ষার বিষয়ে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছেন, সেই তিনটি ব্যাংকের পরীক্ষা পরে নেওয়া হবে। অন্য পাঁচটি ব্যাংকের পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে।’

২০১৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা ও ক্যাশ কর্মকর্তার ৭০১টি শূন্য পদে নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ওই বছরের ২৬ জুলাই রূপালী ব্যাংকে ৪২৩টি শূন্য পদে সিনিয়র অফিসার ও ৩ আগস্ট জনতা ব্যাংকের ৭৩৬টি শূন্য পদে অ্যাসিসট্যান্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।

কিন্তু সেসব পদে নিয়োগ পরীক্ষা না নিয়ে গত বছরের ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক আটটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে কর্মকর্তার (সাধারণ) এক হাজার ৬৬৩টি শূন্য পদের জন্য সমন্বিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। এরপর ২৯ আগস্ট তিন হাজার ৪৬৩টি কর্মকর্তা (সাধারণ) পদের জন্য আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সর্বশেষ গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর দুই হাজার ২৪৬টি কর্মকর্তা (ক্যাশ) পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

কিন্তু ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তির পর আবেদন করা প্রার্থীদের পরীক্ষা না নিয়ে ২০১৭ সালে আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় হাইকোর্টে এ রিট করা হয়। সেখানে ২০১৭ সালের নিয়োগ পরীক্ষার সার্কুলার বাতিল চাওয়া হয়।

ওই বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ২০১৭ সালের বিজ্ঞপ্তির আওতায় পরীক্ষা নেওয়ার আগে ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তির আওতায় নিয়োগ পরীক্ষা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।

বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থসচিব, ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, একসঙ্গে আটটি সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ‘সিনিয়র অফিসারের (সাধারণ)’ এক হাজার ৬৬৩টি শূন্য পদে নিয়োগের প্রিলিমিনারী (বাছাই) পরীক্ষা ১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এরই মধ্যে ওই পরীক্ষার আসন বিন্যাসও দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের এক ঘণ্টাব্যাপী ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়ার কথা রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডে ৫২৭টি, জনতা ব্যাংক লিমিটেডে ১৬১টি, রূপালী ব্যাংক লিমিটেডে ২৮৩টি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডে ৩৯টি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে ৩৫১টি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে ২৩১টি, বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনে একটি ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশে (আইসিবি) ৭০টি পদ রয়েছে।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০