ক্রীড়া প্রতিবেদক: ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে গত দেড়-দুবছর সাফল্যের ধারাবাহিতকায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই ছন্দে ভাটা পড়েছে নিউজিল্যান্ড সফরে। কেননা, এরই মধ্যে টাইগাররা যে রঙিন পোশাকের দুই সিরিজেই স্বাগতিকদের কাছে হয়েছে হোয়াইটওয়াশ। সেসব এখন অতীত। এবার শুরু হয়েছে টেস্টের লড়াই। বাংলাদেশ সময় আজ ভোর ৪টায় ওয়েলিংটনের গ্রিন টপ উইকেটে শুরু হবে কিউইদের বিপক্ষে সফরকারীদের সাদা পোশাকের লড়াই। এর আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে প্রথম টেস্ট নিয়ে মুশফিকুর রহীমের কণ্ঠে ভেসে উঠলো গেল বছরের শেষদিকে দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডকে হারানোর স্মৃতি। টাইগাররা নাকি ওই টেস্ট থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই কেন উইলিয়ামসনের দলের বিপক্ষে ভালো কিছুই আশা করছেন।
এর আগে নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে দুটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। দুটিতেই ইনিংস ব্যবধানে হার। প্রথমটিতে বাংলাদেশ হেরেছিল ইনিংস ও ৭৪ রানে। আর দ্বিতীয়টিতে ইনিংস ও ১৩৭ রানে। তবে এসব নিয়ে কোনো ভাবনা নেই মুশফিকের। নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে ভালো কিছু সম্ভব বলছেন তিনি। বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে টেস্টেও ভালো করেছে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের মতো দলকে টেস্টে হারানো যে কোনো দলের জন্যেই অনুপ্রেরণা। কোনো একটি দল যখন প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেওয়ার সামর্থ্য রাখে, তখন দলটির মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়। আমরা সেটা কাজে লাগিয়ে সেরাটা দিতে প্রস্তুত।’
গত বছর বাংলাদেশ মাত্র দুটি টেস্ট খেলছিল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দেশের মাটিতে সেই দুই ম্যাচে টাইগাররা দেখেছিল দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ভাগ্য ভালো হলে সফরকারীদের সাদা পোশাকের ক্রিকেটে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দিতে পারতো। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টে জয়ের কাছে গিয়েও ২২ রানে হেরে যেতে হয়েছিল মুশফিকদের। তবে ঢাকা টেস্টে ঠিকই জয় তুলে নিয়েছিল টাইগাররা। তবে সেটি ঘরের মাটিতে স্পিনসহায়ক পিচে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের মাটিতে অন্য ফরম্যাটের মতো টেস্টেও কোনো ভালো স্মৃতি নেই সফরকারীদের।
দেশের মাটিতে বরাবরই শক্তিশালী দল নিউজিল্যান্ড। সবশেষ ১০ টেস্টের ৭টিতেই জিতেছে দলটি। এর সঙ্গে কন্ডিশনিংও কেন উইলিয়ামসনদের অনুকূলে।
সবমিলিয়ে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে হচ্ছে টাইগারদের। যা মেনে নিচ্ছেন মুশফিকও, ‘আমরা অনেকদিন পর বিদেশে খেলতে এসেছি। কন্ডিশন, উইকেটÍ দুটোই আমাদের জন্যে ভিন্ন। সিমিং উইকেট বানায় এরা, দেশে তো স্পিনিং উইকেটে খেলেছি। তবে আমাদের স্কোয়াডে চারজন পেসার আছে। তাদেরকে আক্রমণাত্মক খেলতে হবে। আমার বিশ্বাস, আমাদের সিম বোলারদের ২০ উইকেট নেওয়ার সামর্থ্য আছে।’
নিউজিল্যান্ডের পিচ সব সময় বোলারদের জন্য সহায়ক। এখানকার উইকেটগুলোতে পেস, বাউন্স আর সুইং। যদিও বাংলাদেশ দলে চারজন পেসার রয়েছেন। কিন্তু তারা কতটা ভোগাতে পারবে কিউই ব্যাটসম্যান। কেননা স্বাগতিকরা যে এই ধরনের পিচে খেলে অভ্যস্ত। অন্যদিকে বিপরীদ বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা। ঘরের মাঠে স্লো আর টার্নিং উইকেটে খেলে অভ্যস্ত দলটি। যে কারণে বেশ কঠিন এক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে সফরকারীদের।
কিউইদের বিপক্ষে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ভালো কিছু করতে হলে দলের ব্যাটসম্যানদের সেরাটা দেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন অধিনায়ক মুশফিক। ‘বোলারদের জন্য টেস্ট ম্যাচটাকে ঠিক করে দেওয
অন্যদিকে ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম থেকেই সফরকারীদের চেপে ধরতে প্রস্তুত নিউজিল্যান্ড। তারপরও স্বাগতিক অধিনায়ক উইলিয়ামসন টাইগারদের যথেষ্ঠ শ্রদ্ধা করছেন। সদ্যই ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ প্রসঙ্গ টেনে এনে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে কিউই অধিনায়ক বলেন, বাংলাদেশ সাদা বলে আমাদের প্রতি ম্যাচেই চাপে ফেলেছিল। তবে সেখান থেকে আমরা সব ম্যাচে জিততে পেরেছি। ওরা অভিজ্ঞ একটি দল, বিশ্বের সব প্রান্তেই খেলেছে। আমরা জানি, ওরা আমাদের দৃঢ় চ্যালেঞ্জ জানাবে। কাল সকালে আমরা লাগামটা দৃঢ়ভাবে ধরতে চাই।’
ইংল্যান্ড বধের অনুপ্রেরণা আর উইলিয়ামসনের হুমকির সঙ্গে সাদা পোশাকে বিদেশের মাটিতে নিজেদের কতটুকু মেলে ধরতে পারবে বাংলাদেশ? এই প্রশ্নের উত্তর মেলানোর অপেক্ষায় টাইগার ক্রিকেটের ভক্তরা।
Add Comment