নিজস্ব প্রতিবেদক: উভয় পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে সূচকে ব্যাপকহারে পতন নেমে আসে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে সাত দশমিক ৪২ শতাংশ। পাশাপাশি দৈনিক গড় লেনদেনও একই হারে কমেছে। সবগুলো সূচক ও বাজার মূলধনে পতন নেমে আসে। সে সঙ্গে কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারের দর। গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়। আগের সপ্তাহেও পাঁচ কর্মদিবস লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি সূচক পতনের পাশাপাশি কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারের দর ও লেনদেন।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দশমিক ৯৩ শতাংশ বা ৫৫ দশমিক ৮২ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৯৬৫ দশমিক ৬৩ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক সাত দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৪ শতাংশ কমে এক হাজার ৩৮৯ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসই ৩০ সূচক দুই দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বা দশমিক ১১ শতাংশ কমে দুই হাজার ২২৫ দশমিক ৪৮ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৩৯টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬২টির, কমেছে ২৬৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল সাত কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি একটির। দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৩৬৫ কোটি ৩৯ লাখ ১৪ হাজার ৩৯৭ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৩৯৪ কোটি ৬৮ লাখ ১১ হাজার ২৬২ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ২৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা বা সাত দশমিক ৪২ শতাংশ।
অন্যদিকে সিএসইতে ২৭২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৯টির, কমেছে ২০২টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১১টির দর।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮২৬ কোটি ৯৫ লাখ ৭১ হাজার ৯৮৭ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল এক হাজার ৯৭৩ কোটি ৪০ লাখ ৫৬ হাজার ৩০৯ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার কমেছে ১৪৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বা সাত দশমিক ৪২ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল চার লাখ ১৭ হাজার ৬৫৮ কোটি ৫৮ লাখ ১৭ হাজার টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল চার লাখ ১৪ হাজার ৭৮৬ কোটি ৯১ লাখ ৯৯ হাজার ৫২৯ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে দশমিক ৬৯ শতাংশ বা দুই হাজার ৮৭১ কোটি টাকা।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স কমেছে এক দশমিক শূন্য সাত শতাংশ। এছাড়া সিএএসপিআই সূচক কমেছে এক দশমিক শূন্য চার শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক দশমিক ৭১ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক কমেছে দশমিক ৮১ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক কমেছে দশমিক ১৯ শতাংশ।
সিএসইতে গেল সপ্তাহে টার্নওভারের পরিমাণ দাঁড়ায় ১১৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহে ছিল ২৪৪ কোটি ৭২ লাখ ৮৪ হাজার ৮৬৮ টাকা। লেনদেন কমেছে ১২৫ কোটি টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে মুন্নু জুট স্টাফলার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর ২৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় এর পরের অবস্থানগুলোয় ছিল মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ফার্মা এইডস, উসমানিয়া গ্লাস, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অন্যদিকে ১৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ দর কমেছে ওইম্যাক্স ইলেকট্রোডের। এর পরের অবস্থানে ছিল জিবিবি পাওয়ার, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস, জিকিউ বলপেন, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস, ইয়াকিন পলিমার, দেশবন্ধু পলিমার, প্যাসিফিক ডেনিমস, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলোÑলংকাবাংলা ফিন্যান্স, বেক্সিমকো ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা, গ্রামীণফোন, মুন্নু সিরামিক, সিটি ব্যাংক, ফার্মা এইড, ন্যাশনাল ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ।
১৯ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়ে সিএসইতে সাপ্তাহিক টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে সোনারগাঁও টেক্সটাইল। এরপর রয়েছে উসমানিয়া গ্লাস, বঙ্গজ, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, বেক্সিমকো সিনথেটিকস, এনসিসিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, বার্জার পেইন্টস।
অন্যদিকে টপ টেন লুজার তালিকায় উঠে আসে জিবিবি পাওয়ার, ওইম্যাক্স ইলেকট্রোড, বিবিএস কেব্লস, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, জিকিউ বলপেন, ইয়াকিন পলিমার, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ্ ফান্ড।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল গ্রামীণফোন। এর পরের অবস্থানগুলোয় ছিল লংকাবাংলা ফিন্যান্স, ন্যাশনাল ব্যাংক, বিডি ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, বেক্সিমকো, বিবিএস কেব্লস, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, সাইফ পাওয়ারটেক, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
