সোহেল রহমান: সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে বেসরকারি খাতে ডিজেলচালিত ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি আইপিপি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি পেল ‘প্যারামাউন্ট বিট্রাক এনার্জি কনসোর্টিয়াম’। গত বুধবার ‘সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে এটি অনুমোদন দেওয়া হয়। ‘বিল্ড-ওন-অপারেট’ (বিওও) ভিত্তিতে নির্মিতব্য এ ভাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পাঁচ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কেনা হবে। এতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুতের ট্যারিফ হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ টাকা ৯৬ পয়সা (২৫.৩৮ সেন্ট)।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে ডিজেলচালিত ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি আইপিপি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে স্পন্সর কোম্পানি চলতি বছর গত ৭ জানুয়ারি প্রস্তাব দাখিল করে। কোম্পানি নিজ অর্থে ও নিজ ব্যবস্থাপনায় প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান, বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য ট্রান্সমিশন লাইন ও সাব-স্টেশন নির্মাণসহ পুরো প্রকল্প ব্যয় বহন করবে। প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই করে এটি কারিগরি ও আর্থিকভাবে যোগ্য মর্মে মতামত দিয়েছে গঠিত কারিগরি কমিটি। এছাড়া প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাঘাবাড়ী ২৩০ কেভি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সঞ্চালন লাইন ও ‘বে’ নির্মাণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব বলে জানিয়েছে ‘পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ’ (পিজিসিবি)।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ছয়টি শর্তে ‘প্যারামাউন্ট বিট্রাক এনার্জি কনসোর্টিয়াম’-এর সঙ্গে চুক্তি করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি হচ্ছেÑবিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হলে প্রতি একর জমির জন্য বছরে এক লাখ ৯২ হাজার টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হবে এবং এটা প্রতি বছর পাঁচ শতাংশ হারে বাড়বে।
দ্বিতীয়টি হচ্ছেÑনির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্পন্সর কোম্পানি বাণিজ্যিক উৎপাদনে ব্যর্থ হলে প্রতিদিনের জন্য প্রতি মেগাওয়াটে ২০০ ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ক্ষতিপূরণ আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই।
সরকারি হিসাবে, বর্তমানে দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা হচ্ছে ক্যাপটিভসহ ১৬ হাজার ৪৬ মেগাওয়াট। বিদ্যুতের চাহিদা প্রতি বছর ১০ থেকে ১৪ শতাংশ হারে বাড়ছে। এদিকে ২০১৯ সালের মধ্যে দেশের সব নাগরিককে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রতি মাসে প্রায় তিন লাখ নতুন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি। অন্যদিকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বাস্তবায়নে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে। এসব বিবেচনায় নতুন ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে সূত্র জানায়।