নিজস্ব প্রতিবেদক: গত অর্থবছরে পণ্য রফতানির প্রবৃদ্ধি ছিল খুবই কম। এবার সে প্রবৃদ্ধি বেশ ভালো। কিন্তু রফতানি প্রবৃদ্ধি যে হারে বাড়ছে, আমদানি প্রবৃদ্ধি বাড়ছে তার প্রায় চার গুণ বেশি হারে। ফলে বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি, যার প্রভাব পড়ছে লেনদেন ভারসাম্যে। গত অর্থবছরের প্রথম দিকে লেনদেন ভারসাম্য ইতিবাচক থাকলেও এবার তা ব্যাপক হারে নেতিবাচক হয়েছে। এমন বিষয় উঠে এসেছে মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসের অর্থনৈতিক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে। গত বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসের অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
এমসিসিআইয়ের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাত দশমিক ৬৫ শতাংশ। অন্যদিকে আমদানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ হারে। আমদানিতে আগ্রাসী প্রবৃদ্ধির কারণে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে ব্যাপক হারে। অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসেই বণিজ্য ঘাটতি বৃদ্ধির হার ৯৬ শতাংশ। এ সময়ে পণ্য রফতানিতে বাণিজ্য ঘাটতি ৭৬০ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৩৮৭ কোটি ডলার।
অন্যদিকে সেবা খাতের আমদানি-রফতানিতেও বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। উল্লিখিত পাঁচ মাসে এ ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৮৫ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এটি ছিল ১৪৩ কোটি ডলার। উভয় ক্ষেত্রে বাণিজ্য ঘাটতির কারণে চলতি হিসাবে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা দিয়েছে। অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে সে হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৪৩ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৬৮ কোটি ডলার। সেদিক থেকে চলতি হিসাবে ঘাটতি বেড়েছে সাড়ে ছয়গুণ। অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে (এফডিআই) প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র এক দশমিক ৬৬ শতাংশ।
এদিকে গত বছরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে দুই দশমিক ৫৪ শতাংশ হারে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে। গত জুনে এক ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময়মূল্য ছিল ৮০ টাকা ৫৯ পয়সা। ডিসেম্বরে তা ৮২ টাকা ৭০ পয়সায় দাঁড়ায়। তবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে শক্তিশালী অবস্থা অব্যাহত রয়েছে। ডিসেম্বর শেষে রিজার্ভ ছিল ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা দিয়ে সাত মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।