নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশ মুখে যানজট কমানো ও ঢাকার ভেতর যানবাহনের চাপ কমাতে বৃত্তাকার সড়ক নির্মাণ করতে চায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর। ঢাকার বাইরে দিয়ে নিমির্তব্য এ বৃত্তাকার সড়কে (রিং রোড) যুক্ত হবে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। ফলে রাজধানীর যানজট এড়িয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে ঢাকা-মাওয়া বা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যাওয়া যাবে। এতে ঢাকার ভেতর যানবাহনের চাপ অনেক কমে যাবে।
বৃত্তাকার সড়কটি নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প চূড়ান্ত করেছে সওজ। চলতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যে এটি শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকার প্রবেশ মুখে যানজট কমাতে সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (আরএসটিপি) তিনটি বৃত্তাকার সড়ক নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে মধ্যবর্তী বৃত্তাকার সড়ক বা মিডল রিং রোডের দক্ষিণ অংশ হবে এটি। এতে ঢাকার বাইরে দিয়ে তিনটি মহাসড়ক যুক্ত হবে।
সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবনা সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে পাঠানো হয়। পরে প্রস্তাবটি যাচাই করে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বলা হয়েছে, হেমায়েতপুর, ঢাকা, কালাকান্দি, নারায়ণগঞ্জ, তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু হতে মদনপুর অঞ্চলের ট্রাফিক ঘনত্ব হ্রাস বৃত্তাকার সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া পদ্মা সেতু ব্যবহার করে আসা যানবাহন সহজেই ঢাকায় প্রবেশ না করে সিলেট ও পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা এবং চট্টগ্রাম ও দক্ষিণাঞ্চলীয় যানবাহন সহজে ও সাশ্রয়ী সময়ে যাতায়াত করতে পারবে।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রকল্পটির সঙ্গে আরএসটিপির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তাই আউটার সার্কুলার রোড এবং মিডল রিং রোডসহ ঢাকা এবং এর আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন র্যাডিয়াল রোড নির্মাণের বিষয়ে আরএসটিপিতে নির্দেশনা রয়েছে। এক্ষেত্রে রোড অ্যালাইনমেন্ট স্পষ্টও করা হয়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অনাপত্তি প্রয়োজন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটির বিষয়ে অনাপত্তি সংগ্রহে ডিটিসিএতে চিঠি দেয় সওজ। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি বিষয়ে দুই শর্তে অনাপত্তি দিয়েছে সংস্থাটি। এগুলো হলোÑসমীক্ষা প্রতিবেদন চূড়ান্তকরণের পূর্বে ডিটিসিএতে উপস্থাপন করতে হবে। এছাড়া আরএসটিপিতে প্রদর্শিত কানেকটিং রেডিয়াল সড়কসহ অন্যান্য প্রস্তাবিত সংযোগ সড়কসমূহ সঠিকভাবে ডিজাইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
জানতে চাইলে সওজের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান শেয়ার বিজকে বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের পর সিলেট ও চট্টগ্রামগামী যানবাহনকে ঢাকার ভেতর দিয়ে যাতায়াত করতে হবে। এছাড়া ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মধ্যে কোনো সংযোগ পথ নেই। তাই-এ বৃত্তাকার সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে একদিকে ঢাকার ভেতরে যানবাহনের চাপ কমবে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম-সিলেটে দ্রুত ও কম সময়ে যাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, সভায় প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন কারিগরি কমিটিতে (পিআইটিসি) এবং মনিটরিং ও স্টিয়ারিং কমিটিতে সভার সংস্থান রাখা প্রয়োজন মর্মে অবহিত করা হয়। এছাড়া স্টিয়ারিং কমিটিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একজন প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বলা হয়। আর পিআইটিসিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ডিটিসিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, ঢাকা সিটি করপোরেশন ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কারিগরি ব্যক্তিদের রাখার বিষয়ে অভিমত প্রকাশ করা হয়।