নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। তার বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের দেওয়া অর্থদণ্ড স্থগিত করা হয়েছে। তবে পাঁচ বছরের দণ্ড নিয়ে কারাগারে থাকা খালেদা জিয়া এ মামলায় জামিন পাবেন কি না, তা জানতে রোববার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
গতকাল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের গ্রহণযোগ্যতার শুনানি করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ-সংক্রান্ত আদেশ দেন। আদালত বলেছেন, আপিল শুনানির জন্য ১৫ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠাতে হবে।
এদিন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়। তবে দুদকের সময়ের আবেদনে রোববার বেলা ২টায় শুনানির নতুন সময় ঠিক করে দিয়েছেন আদালত।
উল্লেখ্য, ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আখতারুজ্জামান ৮ ফেব্র–য়ারি এ মামলার রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। রায়ে খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছরের জেল এবং আসামিদের প্রত্যেককে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
নি¤œ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, সরকারি এতিম তহবিলের টাকা এতিমদের কল্যাণে ব্যয় না করে পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাৎ করে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আসামিরা রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক অপরাধ করেছেন।
এক হাজার ১৬৮ পৃষ্ঠার ওই রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর গত ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আপিল করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা। হাইকোর্ট ওইদিন আবেদনটির গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করে। আদালত খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের মঙ্গলবারই রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে আপিল ও জামিন আবেদনের কপি সরবরাহ করতে বললেও আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল অনুলিপি হস্তান্তর করেন গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে।
মূল রায়সহ এক হাজার ২২৩ পৃষ্ঠার আপিল আবেদনে ৪৪টি যুক্তি দেখিয়ে খালেদা জিয়ার খালাস চাওয়া হয়। আর ৮৮০ পৃষ্ঠার জামিন আবেদনের মধ্যে ৪৮ পৃষ্ঠাজুড়ে ৩১টি যুক্তিতে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়া হয়।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের মধ্যে জয়নুল আবেদীন, এ জে মোহাম্মদ আলী, কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী ও সগীর হোসেন লিওন সকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন বিএনপি নেতাকেও আদালতে দেখা যায়। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহম্মেদ। সকাল সাড়ে ১০টায় কোর্ট বসলে রাষ্ট্রপক্ষের ফরহাদ আহম্মেদ বলেন, তারা খুব অল্প সময় আগে আসামি পক্ষের কাছ থেকে কপি পেয়েছেন। শুনানির আগে তাদের সময় প্রয়োজন। রাষ্ট্রপক্ষ বেলা ২টা পর্যন্ত সময় চাইলেও বিচারক শুনানির জন্য দুপুর ১২টার সময় ঠিক করে দেন।