নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় মন্তব্য করে বলেন-কানাডা ও বাংলাদেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে ২.৪ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার এবং গত বছর ৪৯ শতাংশ বাণিজ্য বৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশ করে আগামীতে সম্ভাবনাময় খাতগুলোর মাধ্যমে অধিকতর বাণিজ্য সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপের কথা বলেন গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের মহাপরিচালক ডেভিড হার্টম্যান।
গতকাল দি চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বোর্ড অব ডাইরেক্টরস ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে এক মতবিনিময় সভায় কানাডা সরকারের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের মহাপরিচালক ডেভিড হার্টম্যান এসব কথা বলেন। এতে বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার বেনওয়া প্রেফনটেইন উপস্থিত ছিলেন।
ডেভিড হার্টম্যান বাংলাদেশের অভাবনীয় অর্থনীতির সাফল্যের প্রশংসা করে দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ, শিক্ষা, গ্রিন প্রযুক্তি, অ্যারোস্পেস, রেল ও গ্যাস খাতে কানাডিয়ান উদ্যোক্তাদের সামর্থ্য কাজে লাগানোর কথা তুলে ধরেন।
হাইকমিশনার বেনওয়া প্রেফনটেইন বাংলাদেশ ও কানাডা মধ্যকার সম্পর্ক স্বাধীনতা পরবর্তী ৪৬ বছরে অত্যন্ত দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে বলেন, কানাডিয়ান সরকার বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করে। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নের সাফল্য, বিশাল বাজার, বিপুল জনসংখ্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে উভয় দেশ আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলে জানান। কানাডিয়ান হাইকমিশনার ভালো বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা পর্যাপ্ত নয় মন্তব্য করে ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণে দৃষ্টি দেবেন বলে জানান।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে কানাডার বিনিয়োগ অপর্যাপ্ত উল্লেখ করে এফডিআইয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের প্রদত্ত সুবিধাসমূহ তুলে ধরেন। তিনি কানাডা বিনিয়োগকারীদের জন্য কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, আইটি ও টেলিকমিউনিকেশন, তেল, গ্যাস ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত, ইঞ্জিনিয়ারিং জাহাজ নির্মাণ ও সেবা খাত বিশেষ সম্ভাবনাময় বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। এছাড়া চেম্বার সভাপতি ব্লু-ইকোনমির উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান পরিকল্পনা বৈদেশিক বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে আরও বৃদ্ধি করবে বলে মন্তব্য করেন। পাশাপাশি দু’দেশের সরকারের মাঝে ইনভেস্টমেন্ট প্রটেকশন এগ্রিমেন্ট নিয়ে বর্তমানে যে আলোচনা চলছে তা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে কানাডার সরাসরি বিনিয়োগ অধিকহারে বৃদ্ধি পাবে বলেও মাহবুবুল আলম আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. নুরুন নেওয়াজ সেলিম ফলপ্রসূ মতবিনিময় লব্ধ ও তথ্যসমূহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করেন। চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ বাংলাদেশ হতে বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি করার জন্য কানাডিয়ান সরকারকে অনুরোধ জানান এবং এদেশ হতে উচ্চ শিক্ষার্থে কানাডা গমনে ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিকরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। উপস্থিত বক্তাগণ ব্যবস্থাপনা স্কুল, মেধা ও কারিগরিভিত্তিক কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান স্থাপন, কাগজ শিল্প, শিক্ষা, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন রিচার্স সেন্টার, এনার্জি, ব্লু-ইকোনমি, শিপিং, স্বাস্থ্য, তৈরি পোশাকশিল্প, বন্দর অবকাঠামো, বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল, তেল ও গ্যাস খাতের উন্নয়নে কানাডার একক বা যৌথ বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন।