স্বল্প মূলধনি কোম্পানি দিয়ে বাজার ভালো করা যাবে না

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০১৭ সালে যারা অনেক টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছেন তারা এখন লোকসানে আছেন। বিশেষ করে ব্যাংক, আর্থিক খাতের কোম্পানিতে যারা বিনিয়োগ করেছিলেন তারা এখনও লোকসান থেকে বের হতে পারেননি। ফলে নতুন করে বিনিয়োগও করতে পারছেন না তারা। পুঁজিবাজারকে ভালো অবস্থানে নিতে হলে গুটিকয়েক স্বল্প মূলধনি কোম্পানি দিয়ে তা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সব খাতকে ভালো করতে হবে। বিশেষ করে পুঁজিবাজারের সঙ্গে জড়িত মার্চেন্ট ব্যাংক, আইসিবি, মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন বালি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ সিরাজ উদ্দৌলা এবং পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক এম শাহজাহান মিনা।

সৈয়দ সিরাজ উদ্দৌলা বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে স্বল্প মূলধনি কোম্পানি অর্থাৎ যাদের পেইড আপ ক্যাপিটাল অনেক কম সেসব কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ছে। আমাদের পুঁজিবাজারের যে আকার, তাতে কয়েকটি স্বল্প মূলধনি কোম্পানি দিয়ে সম্পূর্ণ পুঁজিবাজারকে বিশ্লেষণ করা যাবে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কয়েক মাস ধরে টপটেন গেইনারের তালিকায় কয়েকটি স্বল্প মূলধনি কোম্পানির প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে। এখন যে কোনো কারণে বাজারে পতন হচ্ছে। সে কারণে গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারী স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ার কিনছেন। এতে তারা লাভবান হচ্ছে কিন্তু এটা পুঁজিবাজারের জন্য ভালো নয়। পুঁজিবাজারকে ভালো করতে হলে বা এর ভলিউম বাড়াতে হলে সব খাতের কোম্পানির লেনদেন বাড়াতে হবে। ২০১৭ সালে অধিকাংশ বড় বিনিয়োগকারী অর্থাৎ যারা অনেক মূলধন বিনিয়োগ করেছে তারা এখন  লোকসানে আছে। বিশেষ করে ব্যাংক, আর্থিক খাতের কোম্পানিতে। তারা লোকসান থেকে বের হতে পারছে না। ফলে নতুন করে বিনিয়োগও করতে পারছে না। এখন পুঁজিবাজারকে ভালো করতে হলে গুটিকয়েক স্বল্প মূলধনি কোম্পানি দিয়ে তা সম্ভব নয়। তাই সব খাতকে ভালো করতে হবে। এক্ষেত্রে পুঁজিবাজারের সঙ্গে জড়িত মার্চেন্ট ব্যাংক, আইসিবি, মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। একজন সাধারণ বিনিয়োগকারীর যতটুকু মূলধন আছে ততটুকু বিনিয়োগ করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ করার অনেক জায়গা আছে। কিছু কিছু মিউচুয়াল ফান্ড তাদের মূলধন সরিয়ে নিয়ে এফডিআর করে রেখেছে। এটা পুঁজিবাজারের জন্য মঙ্গলজনক নয়। পুঁজিবাজারের যারা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা যারা দেখভাল করে তাদের উচিত পুঁজিবাজারে সম্পর্কিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মার্চেন্ট ব্যাংক, মিউচুয়াল ফান্ড প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা কী তা তদন্ত করা। তারা কি আসলেই বিনিয়োগ করছে পুঁজিবাজারে?

তিনি আরও বলেন, ডিএসইতে বর্তমানে যে কৌশলগত অংশীদার নিয়ে কথা হচ্ছে, এটার জন্য বাজার কিছুটা প্রভাবিত হচ্ছে। এটার যদি সমাধা হয়ে যায়। মার্চের ভেতরে এর সমাধান হওয়ার কথা। আমি আশা করি, পুঁজিবাজার ভালোর দিকে যাবে। নতুন করে বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে আসতে উৎসাহিত হবেন।

এম শাহজাহান মিনা বলেন, টপটেন গেইনারের তালিকায় কয়েকটি স্বল্প মূলধনি কোম্পানি দেখা যাচ্ছে। আসলে এখানে একটি কারসাজি রয়েছে। এখনও পুঁজিবাজারে কিছু লোক বা গ্রুপ রয়েছে, যারা বিভিন্ন কারসাজি করে পুঁজিবাজারকে নষ্ট করেছে। তাদের চিহ্নিত করা গেলেও এখনও বিচার করা হয়নি। এটা একটা কারণ হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, যখন পুঁজিবাজার ভালোর দিকে যায় তখনই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেয় যার কারণে বাজারের অনেক ক্ষতি হয়। সে ক্ষতি এখনও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আসলে পুঁজিবাজারের পক্ষে নয়। তাদের মনোভাব পুঁজিবাজারের সম্পূর্ণ বিপক্ষে।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০