নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে কী দিয়ে শুরু করবেন। এজন্য দরকার অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন ব্যবসা। এ ধরনের উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াতে শেয়ার বিজের সাপ্তাহিক আয়োজন
ঘুরতে যাওয়া, স্কুল, কলেজ কিংবা যেকোনো অনুষ্ঠানের জন্য দূরে কোথাও যেতে প্রয়োজন গাড়ি। ব্যক্তিগত গাড়ি তো আর সবার নেই। তাই দ্বারস্থ হতে হয় কোনো রেন্ট-এ-কার ব্যবসায়ী কিংবা কোম্পানির কাছে। ঘুরতে যাওয়া কিংবা বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে তাদের গাড়িই ভরসা।
বাজার সম্ভাবনা
প্রাইভেট কার ও মাইক্রো এ দুই ধরনের গাড়ির প্রতি গ্রাহকদের চাহিদা তুলনামূলকভাবে বেশি। এছাড়া ট্যাক্সি, সিএনজি অটোরিকশা প্রভৃতিও রয়েছে এ তালিকায়। তবে গাড়ি যেটাই হোক না কেন, এর রং ও নতুনত্ব গ্রাহককে আকৃষ্ট করে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
রেন্ট-এ-কারের ব্যবসার জন্য প্রয়োজন হয় ট্রেড লাইসেন্স। এর সঙ্গে বিআরটিএ থেকে রেন্ট-এ-কার ব্যবসার অনুমতিও নিতে হবে। সেইসঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য হতে পারেন। গাড়ির জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন কাগজপত্র। বিশেষ করে রোড পারমিট, লাইসেন্স, বিমা প্রভৃতি। এছাড়া ট্যাক্স টোকেন করিয়ে নিতে হবে।
গাড়ি ভাড়া
গাড়ি ভাড়া, প্যাকেজ ও মাসিক ভাড়া এই তিনভাবে গাড়ি ভাড়া দেওয়া যায়। বডি ভাড়া পদ্ধতিতে গাড়ি, গ্যাসসহ আনুষঙ্গিক সব খরচ সেবাগ্রহীতা বহন করেন। এক্ষেত্রে এক দিনের জন্য গ্রাহককে দুই হাজার ৫০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। প্যাকেজ পদ্ধতিতে দূরত্ব বিবেচনা করে গ্রাহকের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। মাসিক ভাড়া পদ্ধতিতে কিলোমিটার হিসাব করে ভাড়া আদায় করা হয়। বিভিন্ন কোম্পানি মাসিক ভাড়া পদ্ধতিতে রেন্ট-এ-কার থেকে গাড়ি ভাড়া নেয়।
গাড়ি কিনবেন কোথা থেকে
রাজধানীর কাকরাইল, তেজগাঁও, গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকায় গাড়ির শোরুম আছে। এসব শোরুম থেকে কিনতে পারেন। বিভিন্ন জেলার শোরুম থেকে কিনতে পারেন। এছাড়া আমদানিকারকের সঙ্গে যোগাযোগ করে পছন্দমতো গাড়িটি বেছে নিতে পারেন। যাদের বাজেট কম তারা পুরোনো গাড়ি কিনতে পারেন। সেক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। মডেলটি কত আগের, কত মাইল পথ চলেছে, মাইলপ্রতি কী পরিমাণ জ্বালানি খরচ হয়, গ্যাস না তেলের ব্যবহার, গাড়ির কোথাও কোনো সমস্যা আছে কি না? কেন বিক্রি করা হচ্ছে, আগে কোনো দুর্ঘটনা করেছিল কি না? কখনও মামলায় পড়েছিল কি না, কিংবা এমন কোনো ব্যাক্তি গাড়িটি ব্যবহার করত যে অপরাধী কি না? এসব বিষয় জেনে পুরোনো গাড়ি কেনা উচিত। গাড়িটি পরীক্ষা করার জন্য পরীক্ষামূলক ড্রাইভ করে দেখুন।
শুরু
প্রথমত, দুটি গাড়ি নিয়ে শুরু করতে পারেন। দক্ষ ও বৈধ লাইসেন্সধারী চালক নিয়োগ দিতে হবে। এলাকায় পরিচিতি, ধৈর্য ও সুষ্ঠু পরিকল্পনা সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নিজের গাড়ি না থাকলেও ভালো যোগাযোগক্ষমতা দিয়ে শুরু করতে পারেন এ ব্যবসা।
লাভ
রেন্ট-এ-কার ব্যবসায় লাভের পরিমাণ নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের ওপর। গাড়ি নিজস্ব না হলে হাজারে ১০০ টাকা কমিশন পায় রেন্ট-এ-কার। আর নিজস্ব গাড়ির ক্ষেত্রে ভাড়ার পুরোটা চলে আসে পকেটে। মাসিক ভাড়ার ক্ষেত্রে কিলোমিটার হিসাবে ভাড়া পাওয়া যায়। প্রতি কিলোমিটার আট থেকে দশ টাকা হিসাবে ভাড়া নেওয়া হয়। তবে গাড়ির পরিমাণ যত বেশি থাকবে তত বেশি ভাড়া দেওয়া যাবে। পাশাপাশি দোকানে অন্যান্য ছোটখাটো ব্যবসা করতে পারেনÑমোবাইল ফোনে টাকা রিচার্জ, ফটোকপি, কম্পিউটার কম্পোজ, গাড়ির বিভিন্ন ধরনের তেল বিক্রি প্রভৃতি।
মনে রাখা উচিত
রেন্ট-এ-কার ব্যবসার সফলতা নির্ভর করে পরিচিতির ওপর
গাড়ি ভাড়ার দেওয়ার আগে গ্রাহক সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজ-খবর নিতে হবে
পরিচিত, দক্ষ ও বৈধ লাইসেন্সধারী চালক নিয়োগ দিতে হবে
গাড়ির আনুষঙ্গিক কাগজপত্র যথাসময়ে নবায়ন করিয়ে নিতে হবে
শিপন আহমেদ