শেয়ার বিজ ডেস্ক: বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) দোহা রাউন্ডে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববাণিজ্য ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। এলডিসিভুক্ত দেশগুলোকে ডব্লিউটিও’র সিদ্ধান্ত মোতাবেক যেসব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা, উন্নত দেশ তা দিচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ইনফরমাল ডব্লিউটিও মিনিস্টিরিয়াল মিটিংয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য সংস্থাকে কার্যকর করতে দোহা মন্ত্রী পর্যায়ের সভায় গৃহীত সব সিদ্ধান্তের পূর্ণ বাস্তবায়ন প্রয়োজন। হংকং, বালি ও নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত মন্ত্রী পর্যায়ের সভাগুলোও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি বলেন, ডব্লিউটিও’কে কার্যকর করতে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর বাণিজ্য সক্ষমতা সীমিত, ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে রফতানি বাণিজ্য। রফতানি বাণিজ্যে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর অবদান শতকরা এক ভাগের নিচে। দারিদ্র্য বিমোচন ও শিল্পায়নের জন্য এলডিসিভুক্ত দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবদান রাখার সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করেছে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২০২৭ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশের যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল মধ্য আয়ের বাংলাদেশ গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এখন তা বাস্তব। উন্নয়নশীল দেশের জন্য যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে বাংলাদেশ সেগুলো মোকাবিলা করতে সক্ষম।
ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রুভুর সভাপতিত্বে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ইনফরমাল ডব্লিউটিও মিনিস্টিরিয়াল মিটিংয়ের বাণিজ্যমন্ত্রীদের এ সভায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, কানাডা, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনামসহ বিশ্বের ৫৩টি দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী বা তাদের প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে বিষয়ের ওপর মতামত প্রদান করেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেওয়া ‘এভরিথিংস বাট আর্মস’-এর আওতায় বাংলাদেশকে দেওয়া ডিউটি ফ্রি ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা বাংলাদেশকে অনেক সহায়তা প্রদান করেছে। এর ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়ে গেছে। এজন্য বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি কৃতজ্ঞ।
ডব্লিউটিও’র বিগত মিনিস্টিরিয়াল কনফারেন্সে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ডিউটি ফ্রি-কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা, প্রিফারেন্সিয়াল রুলস অব অরিজিন, সার্ভিস ওয়েভার, ট্রিফস চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করার মতো প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য খুবই প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রেই এগুলোর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার পর যেসব বাণিজ্যে চ্যালেঞ্জ আসবে সেগুলো মোকাবিলা করতে বাংলাদেশ সক্ষম। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে গুরুত্বসহ কাজ শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ বাণিজ্য বহুমুখীকরণে এগিয়ে যাচ্ছে।