এয়ার ইন্ডিয়ার ৭৬ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করবে ভারত

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ভারতের সরকারি বিমানসংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার ৭৬ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে দেশটির সরকার। দীর্ঘ জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে এ সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ করল ভারত সরকার। এর মাধ্যমে বিমান সংস্থাটিকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার পথ খুলে গেল। বর্তমানে বিমান সংস্থাটি প্রায় ৫০ হাজার কোটি রুপির ঋণের ভারে জর্জরিত। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইকোনমিক টাইমস, আনন্দবাজার।
ভারতের বিমান মন্ত্রণালয় এয়ার ইন্ডিয়ার মোট ৭৬ শতাংশ শেয়ার বিক্রির দরপত্র আহ্বান করেছে। এর সঙ্গে ভর্তুকির মাধ্যমে চলা কম ভাড়ার এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস ও এআইস্যাটের ৫০ শতাংশ স্টেকও দিয়ে দেওয়া হবে। এআইস্যাট সিঙ্গাপুরের এয়ারপোর্ট টার্মিনাল সার্ভিসেস (স্যাটস) এর সঙ্গে একটি যৌথ গ্রাউন্ডহ্যান্ডলিং উদ্যোগ।
এয়ার ইন্ডিয়ার শেয়ার বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে এর পরিচালনার ভারও এক ধরনের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংস্থার বর্তমান পরিচালন কমিটি, কর্মী, কর্মীদের তৈরি কনসোর্টিয়ামও এ শেয়ার কেনায় অংশ নিতে পারবে।
এয়ার ইন্ডিয়ার এ শেয়ার যারা কিনবেন তাদের প্রায় ৩৩ হাজার ৩৯২ কোটি রুপির ঋণের বোঝা নিতে হবে। যা দরপত্রে অংশ নিতে আগ্রহী যোগ্য সংস্থাগুলোকে নিরুৎসাহিত করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ এয়ারলাইনসটির শেয়ার প্রথমবারের মতো এভাবে বিক্রির জন্য তোলা হলো।
দরপত্রে অংশ নিতে হলে বিডারদের নিট মূল্য ন্যূনতম পাঁচ হাজার কোটি রুপি থাকতে হবে। আগামী ১৪ মের মধ্যে দরপত্রের আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ এ শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া শেষ করতে আগ্রহী ভারত সরকার।
এর আগে একাধিকবার এয়ার এন্ডিয়া বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিল ভারত সরকার। তবে তা আলোর মুখ দেখেনি। অবশেষে বড় ধরনের এ উদ্যোগের কথা জানাল ভারত সরকার। যদিও এর বিরুদ্ধে বেশ সরব ভারতের বিরোধী দলগুলো।
কলকাতাভিত্তিক আনন্দবাজার জানিয়েছে, দিল্লি সফররত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের এ সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এ বিষয়টি নিয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আলোচনা চলছিল। এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গে ইন্ডিয়ার নাম জড়িয়ে রয়েছে। এটা দেশের সম্মানের সঙ্গেও জড়িত। এর মধ্যে হাঠাৎ করেই এয়ার ইন্ডিয়ার ৭৬ শতাংশ বিক্রির সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেন মমতা।
এ সিদ্ধান্তে এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মীদের বিভিন্ন অংশ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখানো হচ্ছে। একাংশের অভিযোগ করে বলছে, ২০০৭ সালের আগস্টের আগে এ বিমান সংস্থার দুটি ভাগ ছিল। বিদেশের জন্য এয়ার ইন্ডিয়া আর দেশের জন্য ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনস। তখন ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনসের কয়েক হাজার কোটি টাকা মুনাফা হতো। ২০০৭ সালের আগস্ট মাসে দুই সংস্থাকে একত্রিত করে এয়ার ইন্ডিয়া নাম দেওয়ার পরই লোকসান শুরু হয়। মাত্র চার বছরের মধ্যে ঋণ ও লোকসানে জর্জরিত হয়ে পড়ে সংস্থাটি।
আরেকটি অংশের অভিযোগ, দুই বেসরকারি বিমান সংস্থা জেট ও কিংফিশারকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্যই এয়ার ইন্ডিয়ার দুই সংস্থাকে একত্রিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০