নিজস্ব প্রতিবেদক: নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সকে বিমা দাবির অংশ হিসেবে সাত লাখ মার্কিন ডলার দিয়েছে সাধারণ বীমা করপোরেশন (এসবিসি)। এ সপ্তাহের মধ্যেই এই অর্থ ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেবে সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স।
ইউএস-বাংলার বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের বিমা করা ছিল সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সে, যার মোট লায়াবিলিটি ১০ কোটি ডলার। এর মধ্যে প্লেনের জন্য কাভারেজ সাত মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স এই লায়াবিলিটির ১০ শতাংশ নিজেদের কাছে রেখে বাকি অংশ সাধারণ বিমা করপোরেশনে পুনঃবিমা করে। সাধারণ বিমা করপোরেশন তার থেকে ১০ শতাংশ (সাত লাখ ডলার) রেখে বাকি টাকা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে পুনঃবিমা করে।
নিজেদের কাছে রাখা পুনঃবিমার সাত লাখ ডলারই পরিশোধ করেছে সাধারণ বিমা করপোরেশন। এ লক্ষ্যে রোববার সাধারণ বিমা করপোরেশনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শফিক শামিমের হাতে পুনঃবিমা দাবির চেক তুলে দেন সাধারণ বিমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম।
এ সময় শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম বলেন, গত ১২ মার্চ ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। এই উড়োজাহাজের (হাল) যে বিমা করা ছিল তার পরিমাণ ৭০ লাখ ডলার। এর সম্পূর্ণ অংশ ক্ষতি হয়েছে। ১২ মার্চ দুর্ঘটনার পর মাত্র এক মাসের কম সময়ের মধ্যে আমরা বিমা দাবির টাকা দিয়ে দিলাম।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এই বিমান বিধ্বস্ততের ঘটনায় বিদেশি পুনঃবিমা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পাওয়া ৪১ লাখ ৭২ হাজার ডলার ইউএস-বাংলাকে সরাসরি দেওয়া হয়েছে। আজ সাধারণ বিমা করপোরেশনের অংশের সম্পূর্ণ অংশ অর্থাৎ সাত লাখ ডলার সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সকে দেওয়া হলো। এ নিয়ে ক্ষতিপূরণ বাবদ ইউএস-বাংলাকে দেওয়া অর্থের পরিমাণ দাঁড়াল ৪৮ লাখ ৭২ হাজার ডলার।
বিদেশি পুনঃবিমা কোম্পানির কাছ থেকে পাওয়া অর্থ সরাসরি ইউএস-বাংলাকে দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সময় যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য আমরা বিদেশি পুনঃবিমা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ সরাসরি ইউএস-বাংলাকে দিয়েছি। এ দুর্ঘটনায় ইউএস-বাংলা বাকি যে অর্থ পাবে তা শিগগিরই আমরা যে কোনোভাবে ম্যানেজ করে পরিশোধ করে দেব।
এ সময় সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শফিক শামিম বলেন, সাধারণ বিমা করপোরেশন থেকে পাওয়া অর্থ এবং আমাদের অংশের সাত লাখ ডলার দুই-তিনদিনের মধ্যে ইউএস-বাংলাকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
নিহত এবং অহতরা সর্বোচ্চ কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ পেতে পারেÑজানতে চাইলে শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম বলেন, নিহত ও আহতদের বয়স, সামাজিক মর্যাদা, আর্থিক অবস্থাসহ আরও কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ হবে। এটি সার্ভে রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে। তবে নিহত ও আহতরা সর্বোচ্চ কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ পেতে পারে, সে বিষয়ে আমরা এখন কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সাধারণ বিমা করপোরেশনের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ শাহরিয়ার আহসানসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১২ মার্চ ৭১ জন আরোহী নিয়ে নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলার বিএস ২১১ ফ্লাইট। এতে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৫১ জন নিহত হন। আহত উদ্ধার করা হয় ২০ জনকে।