রুবাইয়াত রিক্তা: পুঁজিবাজার যে খুবই সংবেদনশীল জায়গা, তার প্রমাণ গত তিন কার্যদিবসের লেনদেন দেখলেই বোঝা যায়। একটি নেতিবাচক সংবাদ যেমন একদিনে বাজারকে বড় পতনের মুখে ঠেলে দিতে পারে, তেমনি একটি ইতিবাচক সংবাদও পারে বাজারের গতি ঘুরিয়ে দিতে। ব্যাংক খাত নিয়ে সরকারের দুটি সিদ্ধান্তে গত দুদিনে পুঁজিবাজার সম্পূর্ণ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আগের দিন ডিএসইতে সূচক ১৪৯ পয়েন্ট বাড়লেও লেনদেন বাড়েনি। কিন্তু গতকাল ৮০ পয়েন্ট সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনও বেড়েছে ১৫৮ কোটি টাকার বেশি। দুই পুঁজিবাজার মিলে লেনদেন ২০০ কোটি টাকার বেশি বেড়েছে। বাজার মূলধনও ফের চার লাখ কোটিতে পৌঁছেছে। বাজারের গতি দেখে আশাবাদী হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারী। অন্যদিকে ফেব্রুয়ারি মাসে শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগ ৯৪ দশমিক ৭২ কোটি টাকায় নেমে গেলেও মার্চে তা বেড়ে ১২৪ দশমিক ৬৮ কোটি টাকা হয়েছে। শেয়ারের দাম আকর্ষণীয় পর্যায়ে যাওয়ায় তারা গত মাসে বিনিয়োগ বাড়িয়ে দেন। মার্চে প্রায় ৪৫৬ কোটি টাকার শেয়ার কেনার বিপরীতে বিক্রি করেন ২৯৯ কোটি টাকার শেয়ার।
গতকাল ডিএসইতে ৬৯ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। অন্যদিকে কমেছে ২০ শতাংশের দর। ব্যাংক খাতে সর্বোচ্চ ২২ শতাংশ বা প্রায় ১২৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়। এ খাতের ৮০ শতাংশ শেয়ারের দর ইতিবাচক ছিল। গতকাল এ খাতে লেনদেন বেড়েছে সাড়ে ২২ কোটি টাকা। প্রকৌশল খাতে লেনদেন হয় ১২ শতাংশ। এ খাতে লেনদেন বেড়েছে সাড়ে ২১ কোটি টাকা এবং ৮৯ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। বিবিএস কেব্লসের দর আট শতাংশ এবং মুন্নু স্টাফলারের দর সাত শতাংশ বেড়েছে। ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১১ শতাংশ লেনদেন হয়। এ খাতে ৫০ শতাংশ শেয়ারদর ইতিবাচক ছিল। লেনদেন বেড়েছে ১৭ কোটি টাকার বেশি। বস্ত্র খাতে লেনদেন হয় ১০ শতাংশ। এ খাতে লেনদেন বেড়েছে ১১ কোটি টাকার বেশি। শাশা ডেনিমসের দর প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে গতকালও দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে। আর্থিক খাতে লেনদেন বেড়েছে দুই কোটি টাকার মতো। এ খাতের আইসিবির দর গতকাল ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া গতকাল তিন মিউচুয়াল ফান্ড দরবৃদ্ধির শীর্ষ দশের তালিকায় অবস্থান করে। এদিন এককভাবে বাজারে নেতৃত্ব দেয় বিবিধ খাতের বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানিটির ২৬ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেনের পাশাপাশি সর্বাধিক ৯৮ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে এক টাকা ১০ পয়সা। এছাড়া লংকাবাংলা ফাইন্যান্স প্রায় ২০ কোটি, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট প্রায় ১৯ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংক সাড়ে ১৫ কোটি, বিডিকম ১৪ কোটি, ব্র্যাক ব্যাংক ১১ কোটি, স্কয়ার ফার্মার সাড়ে ১০ কোটি এবং ফরচুন শুজের ১০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।