মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালক পদ হারালেন শহিদুল আহসান

নিজস্ব প্রতিবেদক: এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের অনিয়মের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে শহিদুল আহসানকে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালক পদে অনুমোদন দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালক পদ হারিয়েছেন ব্যাংকটির সাবেক ওই চেয়ারম্যান। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এক চিঠিতে ব্যাংকটিকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।

তবে পরিচালক পদ হারালেও গত শুক্রবার এবং রোববার বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) পক্ষে তাকে অথর্মন্ত্রী ও গভর্নরের সঙ্গে সভায় অংশ নিয়েছেন শহিদুল আহসান।

পরিচালক পদ হারানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেয়ারম্যান একেএম সাহিদ রেজা। তিনি সোমবার শেয়ার বিজকে বলেন, ‘তিনি (শহিদুল আহসান) পরিচালক পদে ছিলেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আরও দুজন পরিচালকের সঙ্গে তার নবায়নের আবেদন করা হয়েছিল। তবে তাকে পরিচালক পদে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দেয়নি। এ কারণে তিনি এখন আর মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালক নন।’

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছে পাঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ব্যাংকের ১৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় নির্বাচিত পরিচালক এএসএম ফিরোজ আলম ও মোশাররফ হোসেনকে পরিচালক নিযুক্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হলো। এছাড়া এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে সংঘটিত আর্থিক ও নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে শহিদুল আহসানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থাকায় এ পর্যায়ে তার নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া গেল না।’

মার্কেন্টাইল ব্যাংক সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ ব্যাংকের ১৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এসএম ফিরোজ আলম, মোশাররফ হোসেন ও শহিদুল আহসানÑএ তিনজন পরিচালক হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি তাদের তিনজনের পরিচালক পদ নবায়নের অনুমোদন নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করে মার্কেন্টাইল ব্যাংক। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ মার্চ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার পর সেদিনই মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে শহিদুল আহসানের নাম সরিয়ে ফেলা।

এদিকে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৫ (৪) ধারা অনুযায়ী, বিশেষায়িত ব্যাংক ছাড়া অন্য যে কোনো ব্যাংকের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিযুক্ত বা পদায়নের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। পরিচালক না হলেও বিএবির সাম্প্রতিক তৎপরতায় শহিদুল আহসানের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সংগঠনটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘উনি পরিচালক পদে নেই, এটা আমরা জানি না। বিএবি কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা না। এখন মার্কেন্টাইল ব্যাংক থেকে যাকে প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত করা হবে, তিনিই বিএবির প্রতিনিধি হবেন।’

উল্লেখ্য, বেসরকারি এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের বিভিন্ন অনিয়মের প্রেক্ষিতে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর ব্যাংকটির এমডি দেওয়ান মুজিবর রহমানকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর ১০ ডিসেম্বর ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ফরাছত আলীও দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। ওইদিন ব্যাংকটির বিভিন্ন পদেও পরিবর্তন আসে। এর আগে ২০১৭ সালের ২০ মার্চ ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও এমডির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডিকে দেওয়া উভয় নোটিসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তখন ১০টি কারণ তুলে ধরেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের নোটিস অনুযায়ী, ওই ১০টি কারণের মধ্যে সাতটির সঙ্গেই শহিদুল আহসান জড়িত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০