নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি নুভিস্তা ফার্মার অধিকাংশ শেয়ার পূর্বঘোষণা অনুযায়ী অধিগ্রহণ করল বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড। বেক্সিমকো ফার্মার পরিচালনা পর্ষদ নুভিস্তা ফার্মার ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের মোট এক কোটি ১৩ হাজার ৪৭৪টি শেয়ার অধিগ্রহণের বিষয়টি অনুমোদন করেছে। এর ফলে বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড নুভিস্তা ফার্মা লিমিটেডের ৮৫ দশমিক ২২ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা লাভ করবে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, নুভিস্তা ফার্মার আগের নাম ছিল অর্গানন (বাংলাদেশ) লিমিটেড। হরমোন ও স্টেরয়েড ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম এটি। অর্গানন বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডভিত্তিক অর্গানন ইন্টারন্যাশনালের সহযোগী কোম্পানি ছিল। ২০০৬ সালে কোম্পানিটি বাংলাদেশিদের মালিকানায় বিক্রি করা হয়। অর্গানন বাংলাদেশ ১৯৬৪ সাল থেকে এদেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। নুভিস্তা ফার্মার বাকি ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের হাতে। কোম্পানি বার্ষিক সাধারণ সভায় সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের পর এ অধিগ্রহণ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। এর ফলে বেক্সিমকো ফার্মার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।
এ খবরে গতকাল কোম্পানিটি লেনদেনে তৃতীয় অবস্থানে উঠে আসে। তবে এদিন শেয়ারটির দর কমেছে ৮০ পয়সা বা দশমিক ৭৫ শতাংশ। ওইদিন প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয় ১০৬ টাকায়। লেনদেন শেষে সর্বশেষ দর দাঁড়ায় ১০৬ টাকা ২০ পয়সা। এদিন কোম্পানিটির ১২ লাখ ২৬ হাজার ৬৮টি শেয়ার এক হাজার ২৯৮ বার হাতবদল হয়, যার মোট মূল্য ১৩ কোটি ১৭ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর ১০৫ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ১০৯ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৯১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকায় হাতবদল হয়।
চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক (জুলাই-ডিসেম্বর) শেষে বেক্সিমকো ফার্মার ইপিএস হয়েছে তিন টাকা ২৫ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল দুই টাকা ৭৪ পয়সা। এ সময় টার্নওভার ছিল ৮৬৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা এবং মুনাফা হয় ১৩১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৮৬ সালে। ৯১০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৪০৫ কোটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ এক হাজার ৫৭৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই সময় শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে পাঁচ টাকা ৪৯ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ৬১ টাকা ৮২ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ২২২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত ১৮ মাসে বিনিয়োগকারীদের ১৫ নগদ ও পাঁচ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। ওই সময় ইপিএস হয়েছে সাত টাকা ৬৩ পয়সা এবং এনএভি হয়েছে ৫৯ টাকা ৭০ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ২৯৪ কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট ৪০ কোটি ৫৫ লাখ ৫৬ হাজার ৪৪৫টি শেয়ার রয়েছে। শেয়ারের ১৩ দশমিক ১৮ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালকদের, ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক, ৪১ দশমিক ১৩ শতাংশ বিদেশি, ১৭ দশমিক ১২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।