নিজস্ব প্রতিবেদক: স্টক এক্সচেঞ্জের সংস্কার কার্যক্রমকে চলমান রাখা ও পুঁজিবাজারের অবকাঠামোগত বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির স্বার্থে কর অবকাশ সুবিধা অব্যাহত এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে এনবিআরের সঙ্গে পৃথক প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব করেন। সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সভাপতিত্ব করেন।
দুই স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে ডিএসই ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান বলেন, ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর থেকে আমাদের যে কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হয়েছিল এর মাধ্যমে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বেশকিছু কাজ করেছি। সে জন্য কর অব্যাহতিটা অন্তত আরও এক বছর অব্যাহত রাখার দাবি জানাচ্ছি। পরবর্তী তিন বছর যদি ক্রমান্বয়ে আরও সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকার স্টক এক্সচেঞ্জকে ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে শতভাগ, ৮০ শতাংশ, ৬০, ৪০ ও ২০ শতাংশ কর অব্যাহতি সুবিধা দিয়েছে, যা আগামী অর্থবছর এ সুবিধা শেষ হবে। শেষ হওয়ার আগেই দুই স্টক এক্সচেঞ্জ অব্যাহতি সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করে।
বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের ওপর করহার শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক শূন্য এক পাঁচ শতাংশ করার প্রস্তাব করে তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশে এ হার আরও কম। করহার কমানো হলে সুবিধা সরাসরি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পাবেন। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এনবিআর প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিলেও তারা বিনিয়োগকারীদের সে সুবিধা দেয় না। এ সুবিধা সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পাবেন এমন আশ্বাস দিলে আমরা চেষ্টা করব।
করপোরেট কর পুনর্বিন্যাস করার প্রস্তাব করে মাজেদুর রহমান বলেন, দেশে বাজার মূলধন বাড়িয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আনয়নের জন্য তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ২৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করা যেতে পারে। এছাড়া তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির করপোরেট করের ব্যবধান ১০ শতাংশের পরবর্তীতে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি অন্যান্য তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে ন্যূনতম ২০ শতাংশ শেয়ার আইপিও এর মাধ্যমে হস্তান্তর করলে পরবর্তী তিন বছর আয়করের ওপর ৫০ শতাংশ হারে আয়কর রেয়াত সুবিধা প্রদান, মওকুফকৃত মার্জিন ঋণ ও সুদকে কর আওতার বাহিরে রাখা, সফটওয়ার মেনটেন্যান্স ফির ওপর উৎসকর পাঁচ শতাংশ করা, এক তালিকাভুক্ত কোম্পানি অন্য তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে অর্জিত লভ্যাংশের ওপর কর বিলোপ করা, করমুক্ত লভ্যাংশ সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করা, করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন তিনি। ডিএসই ও সিএসইয়ের আয় বাড়াতে জাতীয় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সুবিধা দেওয়া, এক্সচেঞ্জে ছাড় চেয়ে ট্রেড বাড়িয়ে কর নেওয়ার প্রস্তাব করেন তিনি। কারণ হিসেবে মাজেদুর রহমান বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারতে এ হার শূন্য দশমিক শূন্য ১৩ শতাংশ, পাকিস্তানে শূন্য দশমিক শূন্য দুই শতাংশ, হংকংয়ে শূন্য দশমিক শূন্য শূন্য ২৭ শতাংশ। ? এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা করমুক্ত আয়সীমা বাড়াব না। শেয়া কিন্তু করমুক্ত আয় সীমার পরবর্তী ধাপে করহার কমিয়ে দিয়ে সবাইকে করের আওতায় আনার চেষ্টা করব।