নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে কী দিয়ে শুরু করবেন। এজন্য দরকার অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন ব্যবসা। এ ধরনের উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াতে শেয়ার বিজের সাপ্তাহিক আয়োজন
গরমে ক্লান্তি দূর করতে শরবতের প্রচলন বেশ পুরোনো। বাজারে বিভিন্ন রকমের ড্রিংকস পাওয়া গেলেও এক গ্লাস শরবত আমাদের কাছে অনেক বেশি পছন্দ। অতিথি আপ্যায়নে প্রথম পছন্দ শরবত। তাই ব্যাপক চাহিদার কথা বিবেচনা করে যে কেউ মৌসুমি ব্যবসা হিসেবে শুরু করতে পারেন শরবতের ব্যবসা। এ ব্যবসায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই।
একজন মিজানুর রহমানের কথা
‘আমি সব সময় মৌসুমি ব্যবসা করি। বর্তমানে আবহাওয়ার খুব উত্তাপ। মানুষজন গরমে অতিষ্ঠ। তাই এ গরমে শরবতের ব্যবসা খুব চলে। মূলত সব শ্রেণির মানুষই চেষ্টা করে ঠাণ্ডা শরবত খেয়ে শরীর জুড়াতে। তা ছাড়া এই ব্যবসায় খরচও খুব কম। অল্প পুঁজিতে লাভবান হওয়া যায়। তাই আমি এ দু মাস শুধু শরবতের ব্যবসা করেই ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করি।’ রাজধানীর কারওয়ানবাজারে মৌসুমি ব্যবসা করেন মিজানুর রহমান।
পুঁজি
এ ব্যবসার জন্য খুব বেশি পুঁজির প্রয়োজন নেই। পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা বিনিয়োগ করেই ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব। অবশ্য স্থায়ীভাবে এ ব্যবসা করতে চাইলে এর পাশাপাশি ফাস্টফুড বিক্রি করা যেতে পারে। অথবা কোনো ফাস্টফুডের দোকানের সঙ্গে সাময়িকভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এ ব্যবসা করা যায়। তবে শুধু শরবতের ব্যবসা করতে চাইলে দোকান নেওয়ার পরিবর্তে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানেও ব্যবসা চালু করতে পারেন।
দরকার
নানা ফল দিয়ে তৈরি করা যায় শরবত। তৈরির বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। পদ্ধতিগুলো জানা থাকলে কোনো কারিগরের সাহায্য ছাড়া নিজেই শরবত তৈরি করতে পারবেন। শরবত তৈরির বিভিন্ন উপকরণের মধ্যে রয়েছে বিশুদ্ধ পানি, চিনি, লেবুর রস প্রভৃতি। মূলত শরবতের রকম ও স্বাদের প্রতি লক্ষ রেখে বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করতে হয়। বাজারে এখন লাচ্ছি শরবতের ব্যবসা জমজমাট। এ শরবত তৈরিতে পানির সঙ্গে দই, চিনি, বরফ প্রভৃতি ব্যবহার করা হয়। মৌসুমি ফলের শরবত তৈরি করেও বিক্রি করা যায়। ‘লেবু-চিনির সঙ্গে ইসুবগুল, তোকমা প্রভৃতি উপকরণে তৈরি শরবতও বিক্রি করা যেতে পারে। তবে বিক্রি ও লাভের দিক থেকে লাচ্ছি শরবতই সবচেয়ে জুতসই,’ জানালেন শাহবাগের লাচ্ছি শরবত ব্যবসায়ী টুকু মিয়া। তিনি আরও জানান, ‘লাচ্ছি শরবতের ব্যবসা করতে চাইলে একটি ব্লেন্ডার মেশিনের প্রয়োজন পড়ে। তাছাড়া প্রচুর পরিমাণে দই স্টকে রাখা দরকার।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
প্রথমত শরবত তৈরিতে অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে হবে। যেহেতু শরবতের প্রধান উপকরণ হচ্ছে পানি, পানি বিশুদ্ধ না হলে তা হবে বিপজ্জনক। দ্বিতীয়ত শরবত পরিবেশনের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন গ্লাস ব্যবহার করতে হবে। ‘ওয়ান টাইম ইউজ’ গ্লাস ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভালো হয়। এটা সম্ভব না হলে প্রতিবার শরবত পরিবেশনের পর গ্লাস খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। শরবত পরিবেশনের সময় গ্লাসে পরিচ্ছন্ন পাইপ ব্যবহার করতে হবে। শরবতের তৈরির অন্য উপকরণও বিশুদ্ধ ও মানসম্মত হতে হবে। শরবত শীতল করার জন্য বিশুদ্ধ পানি থেকে তৈরি বরফ ব্যবহার করতে পারেন।
সুতরাং পাঠক জেনে গেলেন শরবত তৈরি ও বিক্রির যাবতীয় উপায়। এখন শুরু করতে পারেন শীতল শরবতের জমজমাট ব্যবসা। হয়তোবা এ ব্যবসা থেকে পেয়ে যেতে পারেন নতুন কোনো ব্যবসার ধারণা। সে পর্যন্ত শরবতের ব্যবসার মাধ্যমে অন্যকে শীতল করার পাশাপাশি এ গরমে নিজেও আর্থিকভাবে সফল হতে পারবেন অনেকখানি।
ইউনুছ আলী আলাল